গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর নিয়ে নবান্ন অভিযানের কর্মসূচিতে গুলি চালানো, এমনকি, খুনেরও ষড়যন্ত্র করেছে বিজেপি। এমনই অভিযোগ করল তৃণমূল। মঙ্গলবার সকালে নবান্নের উদ্দেশে ওই মিছিল হওয়ার কথা। তার আগে সোমবার সকালে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘একটা বড় চক্রান্ত চলছে কালকের মিছিল ঘিরে। শকুনের রাজনীতি করছে বিজেপি। ওরা বলছে বডি চাই।’’ পরে তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে দু’টি গোপন ভিডিয়োও প্রকাশ করেছেন কুণাল (ওই ভিডিয়ো দু’টির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তাতে একাধিক ব্যক্তির মুখে ঘুরেফিরে এসেছে ওই শব্দ। কেউ বলেছেন ‘বডি চাই’। কেউ বলেছেন, ‘‘বডি পড়বেই। রাবার বুলেট চলবে।’’ ভিডিয়োতে তাঁরা এ-ও দাবি করছেন যে, ২৭ তারিখের আন্দোলন আদৌ শান্তিপূর্ণ হবে না। তার কারণ, ‘বডি’ অর্থাৎ লাশ বা মৃতদেহ না পেলে আন্দোলন জোরদার হয় না। যদিও কুণালের ওই সাংবাদিক বৈঠকের পরেই বিজেপির মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আন্দোলন গতি পাওয়ায় তৃণমূল হতাশায় ভুগছে, তাই এমন অদ্ভুত আচরণ।’’
সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ তৃণমূল ভবনে ওই সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং তৃণমূল নেতা (সাংবাদিক বৈঠকে চন্দ্রিমা তাঁকে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বলে অভিহিত করেন) কুণাল ঘোষ। সেখানেই কুণাল বলেন, ‘‘মঙ্গলবারের মিছিল নিয়ে একটা চক্রান্ত চলছে। আমরা তৃণমূলের সবাই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেকে আরজি করের ঘটনার বিচার চাই। আপনারা যদি বলেন, জাস্টিস ফর আরজি কর, আমরা বলব তোমার আমার এক স্বর। কিন্তু যদি বলেন ‘রিজ়াইন মমতা’। তবে আমরা বলব, ময়দানে বুঝে নেবে বাংলার জনতা। কিন্তু মঙ্গলবারের ওই মিছিল বেআইনি এবং অবৈধ। ওই মিছিলের জন্য পুলিশের অনুমতি নেওয়া হয়নি। ওই মিছিলে বাইরের রাজ্য থেকেও লোক আনা হতে পারে। এমনকি, তাদের পুলিশের নকল পোশাক পরিয়ে গুলি চালানোর মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। কারণ এরা বডি চাইছে।’’
এর পরেই পর পর দু’টি ভিডিয়ো দেখান কুণাল। ওই ভিডিয়ো দু’টির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তিনি জানান, বিভিন্ন সূত্র মারফত ভিডিয়োটি তাঁদের হাতে এসে পৌঁছেছে। প্রথম ভিডিয়োয় পর্দায় দেখা যায় এক যুবককে। তবে নেপথ্যে গলা শোনা যায় আরও দু’জনের। এক নেপথ্য কণ্ঠস্বর প্রশ্ন করে, ‘‘২৭ তারিখের যে আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ভাবে হবে বলছেন, তা কি আদৌ শান্তিপূর্ণ হবে?’’ জবাবে পর্দায় থাকা যুবককে বলতে শোনা যায়, ‘‘গুলি চলবে। রাবার বুলেট চলবে।’’ পরের ভিডিয়োটিতেও প্রায় প্রথম ভিডিয়োটিরই বক্তব্য ঘুরে ফিরে এসেছে। সেখানে পর্দার ব্যক্তি বলছেন, ‘‘একটা-দুটো বডি যদি না পড়ে কিচ্ছু হবে না।’’
ভিডিয়ো দু’টি প্রকাশ করে কুণাল বলেছেন, ওই মিছিলে ইচ্ছাকৃত ভাবে অশান্তি তৈরি করার আগাম পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু ওই মিছিলই সম্পূর্ণ অবৈধ। কারণ যাঁরা মিছিল করছেন, তাঁরা পুলিশ এবং প্রশাসনকে মিছিলের বিষয়ে জানায়নি। কুণাল এ-ও বলেন যে, নামে ছাত্রদের আন্দোলন হলেও ওই মিছিল মূলত নেপথ্যে থেকে চালনা করছে বিজেপি, এবিভিপি, আরএসএস। এমনকি নাম বদলে সিপিএমের কিছু গোষ্ঠীও থাকবে ওই মিছিলে। কিন্তু বেআইনি ওই মিছিল চলতে পারে না। পরে চন্দ্রিমাও সাংবাদিক বৈঠকে একই দাবি করেন। তিনি রাজ্যের পুলিশ এবং প্রশাসনকে অনুরোধ করেছেন সতর্ক থাকতে। যেন কোনও ভাবেই সীমান্ত পেরিয়ে বাইরের লোক ঢুকতে না পারে। তিনি এ-ও বলেন, পুলিশ যেন কোনও রকম প্ররোচনার ফাঁদে না পড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy