Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
BJP

দ্বন্দ্ব মেটানোর বার্তা বিজেপির শিবিরে

বঙ্গ বিজেপির ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশলের বক্তৃতার পরে বুধবার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব মেটানোর পক্ষে বার্তা দিয়েছেন বলে খবর।

রাজ্য বিজেপির তিন দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরের এটাই নির্যাস।

রাজ্য বিজেপির তিন দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরের এটাই নির্যাস। প্রতীকী ছবি।

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:২৩
Share: Save:

তিন দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে কী শিখলেন? বুধবারের পড়ন্ত বিকেলে তখন বাড়ি ফেরার তাড়া শিক্ষার্থীদের। কোনও মতে নিজের গাড়ি খুঁজতে খুঁজতে এক বিধায়ক বললেন, “আগে দ্বন্দ্ব মিটুক! তার পরে শিক্ষা!”

চুম্বকে রাজ্য বিজেপির তিন দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরের এটাই নির্যাস। বঙ্গ বিজেপির ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশলের মঙ্গলবারের বক্তৃতার পরে বুধবার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব মেটানোর পক্ষে বার্তা দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। তাঁর দাওয়াই, শক্তিশালী দল গড়তে হলে আগে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দিল্লি সবটা করে দেবে না। তার পরে মঞ্চে বসে থাকা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, এঁদের মধ্যে সমস্যা হলে এঁরা নিজেরাই বসবেন। দিল্লি ছুটতে হবে কেন?

প্রশিক্ষণ শিবির উপলক্ষে রাজারহাটের একটি রিসর্টকে কার্যত দুর্গে পরিণত করেছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। মূল ফটকের ও’পারে সংবাদমাধ্যম, নেতৃত্বের গাড়ি-চালক ও জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তারক্ষীদের যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। প্রতিনিধিদের গেট পেরিয়ে বেরোনোর উপরেও ছিল কড়াকড়ি। তবে শেষ দিন বিকেলে নিরাপত্তার বেষ্টনী টপকে সহজেই ঢোকা গেল ভেতরে। যেখানে এই শিবির চলছে, সেখানে পৌঁছতেই দেখা পাওয়া গেল এক সাংগঠনিক জেলার সভাপতির। তিনি তখন তাঁর মালপত্র গাড়িতে তুলতে ব্যস্ত। সাংবাদিক দেখে প্রথমে কিছুটা ইতস্তত করলেন। তার পরে গলা নামিয়ে বললেন, “মুখপাত্র ছাড়া বাকিদের সংবাদমাধ্যমে কথা বলা নিয়ে দল কড়া অবস্থান নিয়েছে।” কথোপকথন এগোতে অভাস পাওয়া গেল, শিবিরে এই নিয়ে কয়েক জনকে কড়া ভাষায় শাসন করেছেন নেতৃত্ব। বলা হয়েছে, এতে দল সম্পর্কে ‘বিভ্রান্তিকর বার্তা’ ছড়াচ্ছে।

সন্ধ্যা নেমেছে। ভেতরে বলা শেষ হয়েছে সন্তোষেরও। নিজের গাড়িতেই মূল ফটক পর্যন্ত এগিয়ে এলেন সুকান্ত। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একাধিক বিষয় নিয়ে মুখ খুললেও শিবির নিয়ে নিরুত্তরই রইলেন। শুধু বললেন, “আমাদের নিজেদের দক্ষতার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সময় অন্তর এমন শিবির হয়ে থাকে।” অনুপস্থিতদের পক্ষে দাঁড়িয়ে তাঁদের অনুপস্থিতির কারণও ব্যাখ্যা করলেন। জানালেন, দল বাড়াতে গেলে অন্য দল থেকে লোক নিতেই হবে। অন্য দলের কর্মীরা স্বাগত। তবে অন্য দলের নেতাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।

তিন দিন কেটে গেল বন্ধ ঘরের ভেতর শিবির করে। বিরোধী দল তো বটেই, বিজেপির অন্দরে বিক্ষুব্ধেরাও প্রশ্ন তুললেন, এমন বিলাসবহুল আয়োজনের উদ্দেশ্য নিয়ে। প্রায় আড়াই কোটি টাকার মতো খরচ হল। কিন্তু দিনের শেষে কী প্রাপ্তি হল? আলো-আঁধারিতে ঘেরা রাজারহাটের বাঁক খাওয়া রাস্তা ধরে ফিরতে ফিরতে রাজ্য বিজেপির এক নেতা বললেন, “ঈশপের নীতিকথা!”

অন্য বিষয়গুলি:

BJP conflict
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy