Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
BJP

কম্বলকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদ অছিলা, হুমকি দিতে এসেছিল তৃণমূলের পুলিশ, দাবি বিজেপি নেত্রীর

বিজেপি ছেড়ে যাতে তৃণমূলে যোগদান করি, সে জন্য হুমকি দিচ্ছে পুলিশ। এমনই দাবি আসানসোলের বিজেপি কাউন্সিলর ইন্দ্রাণী আচার্যর। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, পুরনিগমের এই কাউন্সিলরের প্রয়োজন নেই।

আসানসোল পুরনিগমের বিজেপি কাউন্সিলর ইন্দ্রাণী আচার্য।

আসানসোল পুরনিগমের বিজেপি কাউন্সিলর ইন্দ্রাণী আচার্য। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১৮:০৯
Share: Save:

কম্বল বিতরণকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করার অছিলায় আসলে হুমকি দিতে এসেছিল পুলিশ। কারণ পুলিশ তৃণমূলের ক্রীতদাস। যাতে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন তিনি। রবিবার এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন আসানসোল পুরনিগমের বিজেপি কাউন্সিলর ইন্দ্রাণী আচার্য। তাঁর এ দাবি নস্যাৎ করে তৃণমূলের পাল্টা দাবি, আসানসোল পুরনিগমের এই কাউন্সিলরের কোনও প্রয়োজন নেই।

ডিসেম্বরে আসানসোলে কম্বল বিতরণের সময় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় রবিবার পুরনিগমের ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর ইন্দ্রাণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। কুলটির সাকতোড়িয়া এলাকায় ইন্দ্রাণীর বাড়িতে যায় আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ আধিকারিকেরা। সেখানে প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেরা শেষে ইন্দ্রাণী বলেন, ‘‘জেরার আগে শনিবার পুলিশের তরফ থেকে আমাকে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। আজ, রবিবার আমাকে ঘণ্টাখানেক জেরা করা হয়।’’

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং আসানসোলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র তিওয়ারির ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পশ্চিম বর্ধমান জেলার রাজনীতিতে ইন্দ্রাণীর পরিচিতি রয়েছে। ইন্দ্রাণী বলেন, ‘‘কম্বল বিতরণের সময় যে দুর্ঘটনাটি ঘটে, তা নিয়ে পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আসে। ওই কর্মসূচি আদৌ পূর্বপরিকল্পিত কি না, তা জানতে চায় পুলিশ।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমি এটাই বুঝতে পারি না, যে দুর্ঘটনায় ৩ জন মারা গিয়েছেন, তা কি কেউ পরিকল্পনা করতে পারে? নিজেদের মনুষ্যত্বকে এতটা মেরে ফেলতে পারিনি। পুলিশ তো তৃণমূলের ক্রীতদাস। আসলে আমাকে হুমকি দিতে এসেছিল, যাতে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিই। তবে তা সম্ভব নয়।’’ ইন্দ্রাণীর এই মন্তব্য নিয়ে পাল্টা দাবি করেছেন আসানসোল পুরনিগমের প্রস্তাবিত ডেপুটি মেয়র ওয়াসিমুল হক। তিনি বলেন, ‘‘আসানসোলে কম্বলকাণ্ডের তদন্ত করছে পুলিশ-প্রশাসন। তাদের যা কাজ, তারা করছে। তৃণমূলে যোগদান করার জন্য চাপ সৃষ্টি করার যে অভিযোগ তিনি করেছেন, তা পুরোপুরি মিথ্যে। কারণ, আসানসোল পুরনিগমে বর্তমানে ১০৬ কাউন্সিলরের মধ্যে ৯৯ জন কাউন্সিলরই তৃণমূলের। অর্থাৎ পুরনিগমের কোনও প্রয়োজন নেই ইন্দ্রাণী আচার্যের। পুরো মিথ্যে অভিযোগ করছেন তিনি।’’

প্রসঙ্গত, ১৪ ডিসেম্বর আসানসোলে শিবচর্চা এবং কম্বল বিতরণের কর্মসূচি হয়েছিল। তাতে শুভেন্দু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আসানসোল পুরনিগমের বিরোধী দলনেত্রী বিজেপির চৈতালি তিওয়ারি। এই কর্মসূতিতে নিজে হাতে বেশ কিছু কম্বল বিতরণ করার পর সেখান থেকে বেরিয়ে যান শুভেন্দু। এর পর কম্বল নেওয়ার জন্য শুরু হয় হুড়োহুড়ি। তাতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ৩ জনের৷ আহত হন বেশ কয়েক জন৷

ওই ঘটনা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয় চাপান-উতোর শুরু হয়। পুলিশ-প্রশাসনের দাবি, ওই কর্মসূচির জন্য কোনও লিখিত অনুমতি নেওয়া হয়নি। এ নিয়ে মামলাও রুজু করা হয়। পাশাপাশি, দুর্ঘটনায় মৃত ঝালী বাউরির পুত্র সুখেন বাউরি আসানসোল উত্তর থানায় অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ছাড়া, ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জিতেন্দ্রর স্ত্রী চৈতালি-সহ আরও দুই কাউন্সিলরের নামে অভিযোগে দায়ের হয়। পরে চৈতালিকে তাঁর বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে পুলিশ।

কম্বল বিতরণীকাণ্ডে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন চৈতালি। এই কাণ্ডে তাঁদের বিরুদ্ধে যে ধারায় মামলা করেছে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ, তার বিরুদ্ধে আদালত গিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই এই মামলায় ৩০৪/২ ধারা বাদ দেওয়ার জন্য হাই কোর্টে শুনানি হয়েছে। পরবর্তী শুনানি হবে ১৭ জানুয়ারি। সে দিন আদালতে বিভিন্ন তথ্য জমা দেওয়ার জন্য বিজেপি কাউন্সিলর ইন্দ্রাণী থেকে শুরু করে দলের রাজ্য নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Indrani Acharya Asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE