নির্বাচনী প্রচারসভায় সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। শুক্রবার জোড়াসাঁকোয় সুদীপ আচার্যের তোলা ছবি।
পুরভোটের ময়দানে দলীয় কর্মীদের রাস্তায় নেমে শাসক দলের সন্ত্রাস প্রতিরোধ করার ডাক আগেই দিয়েছে সিপিএম। এ বার বিজেপি-ও সেই পথে হাঁটল। আবার একই দিনে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধীদের। সিউড়িতে দলীয় প্রার্থীর প্রচারে একটি পথসভায় এ দিন তিনি বলেন, ‘‘চোখ রাঙাবেন না। তুলে নিয়ে আসার ক্ষমতা রাখি।’’
আগের দিনই মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বামেদের মাথা নেড়া করে হঠানোর হুমকি দিয়েছিলেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অনুব্রতর মন্তব্যে আসন্ন পুরভোটের সন্ত্রাসের অশনি সঙ্কেতই দেখছে বিরোধীরা। এই পরিস্থিতি আঁচ করেই বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ শুক্রবার কলকাতা পুরসভার ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী শ্বেতা সিংহের সমর্থনে প্রচারসভায় বললেন, ‘‘ভোট হবে টি টোয়েন্টি ম্যাচের মতো। কিন্তু আপনারা সকলে ঘর থেকে বেরিয়ে এক সঙ্গে ভোট দিতে যাবেন। না হলে আগামী পাঁচ বছরও আপনাদের জীবনে কোনও ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে না।’’
বস্তুত, পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে না, কেন্দ্র এ কথা স্পষ্ট করে দেওয়ার পর বিরোধীরা এক রকম বুঝেই গিয়েছে, শাসক দল অবাধ নির্বাচন হতে দেবে না। সে জন্য আধা সেনা বা পুলিশের ভরসায় বসে না থেকে নিজেদেরই প্রতিরোধ করতে হবে বলে দলীয় কর্মীদের বার্তা দিয়ে রেখেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। এ দিনও খড়্গপুরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও বা কী হবে? গত লোকসভা ভোটেও রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছিল। আদতে এখন বাহিনীকে তো চালায় রাজ্য প্রশাসন! নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কাছে আমরা আগেও বিভিন্ন ঘটনার অভিযোগ করেছি, ভবিষ্যতেও করব। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, মানুষই ইতিহাস তৈরি করে।’’ সিদ্ধার্থনাথও দলীয় কর্মীদের বুঝিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলকে ভোট লুঠতে দেওয়া যাবে না। শেষ মুহূর্তে বাহিনী চাওয়া রাজ্য সরকারের ‘আই ওয়াশ’ বলে অভিযোগ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘রাজ্য সরকার ক’ বার বাহিনীর জন্য কেন্দ্রের কাছে দরবার করেছে? তারা প্রথমে বলেছিল, বাহিনী লাগবে না। পরে আবার বাহিনী চাইল! কোন পরিবর্তন দেখে তারা সিদ্ধান্ত বদলাল?’’
সন্ত্রাসের পাশাপাশি কলকাতা পুরসভার দুর্নীতি এবং অনুন্নয়ন নিয়েও তৃণমূলকে এ দিন কটাক্ষ করেন সিদ্ধার্থনাথ। তাঁর অভিযোগ, কলকাতায় তৃণমূলের পুরবোর্ড গত পাঁচ বছরে গরিব মানুষের কোনও উন্নতি করেনি। উল্টে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ওই বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘এখানে ৬৫-৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধ এখনও হাতে রিকশা টানেন। মানুষ ফুটপাতে বসে খাবার বানায়। ফুটপাতে ছোট ব্যবসা করে। জন্ম বা মৃত্যুর শংসাপত্র নিতে হলে ঘুষ দিতে হয়।’’ সিদ্ধার্থনাথের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গরিবের উন্নতির জন্য মুদ্রা যোজনা চালু করেছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুই করেননি। এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে নেতা নয়, সেবক প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান ওই বিজেপি নেতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy