অশান্ত টিটাগড়।
শান্তির পথে দু’কদম এগোলেই ফের গোল বাধছে ভাটপাড়ায়।
শুক্রবার পুলিশের গুলিতে এক দুষ্কৃতীর মৃত্যুতে নতুন করে অশান্ত হতে শুরু করে ভাটপাড়ার কাঁকিনাড়া। তাতে জনজীবনে প্রভাব তেমন পড়েনি। কিন্তু শনিবার রাতে কি মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা পড়ে কাঁকিনাড়ার তিনটি এলাকায়। রবিবার সকালে সেই রেশ কাটতে না কাটতে দুপুরে আরও একবার বোমাবাজিতে ফের স্তব্ধ হল জনজীবন। বোমায় জখম চার। এ দিন দোকানপাট কার্যত খোলেইনি। দিন পনেরো আগের মতো এলাকা ফের অশান্ত হয়ে উঠবে কি না, তা নিয়ে আতঙ্কে সাধারণ মানুষ।
নতুন করে গোলমালে রাজ্যে ফের ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের দাবি তুললেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। আজ, সোমবার সংসদে জিরো আওয়ারে-ও তিনি এই দাবি তুলবেন বলে জানান অর্জুন। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (জোন ১) অজয় ঠাকুর জানান, বোমাবাজির ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার পুলিশের গুলিতে প্রভু সাউ নামে এক দুষ্কৃতীর মৃত্যুর পরেও শনিবার দোকান-বাজার খোলাই ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ কাঁকিনাড়া ৫ এবং ৬ নম্বর রেলওয়ে সাইডিংয়ে বোমাবাজি শুরু হয়। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই রাস্তা ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। প্রায় কাছাকাছি সময়ে বোমাবাজি শুরু হয় ভাটপাড়া থানার অদূরে ঘোষপাড়া রোডের উপরেও। এখানে রাস্তার দু’দিকে অনেক দোকান। জমজমাট বাজারে সেই সময় প্রচুর মানুষের ভিড়ও ছিল। বোমাবাজি শুরু হওয়ার পরে আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট। বোমার ঘায়ে জখম হন এক মহিলা। পুলিশ জখমদের ভাটপাড়া এবং নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়।
রবিবার সকালেও কাঁকিনাড়ার রেল সাইডিং এলাকায় বোমাবাজি হয়। তার ফলে দোকান খোলার সাহস পাননি এলাকার ব্যবসায়ীরা। এলাকার বাসিন্দারা মনে করছেন, শান্তি নষ্ট করার জন্য পরিকল্পিতভাবে বোমাবাজি করা হচ্ছে। এ দিন দুপুরে বিজেপির বিরুদ্ধে ভাটপাড়ার এক তৃণমূল কাউন্সিলরকে মারধরের অভিযোগ উঠল।
এই অশান্তি নিয়ে বিজেপি পুলিশের অপদার্থতাকে দায়ী করলেও তৃণমূল বিজেপির দিকেই আঙুল তুলেছে। ভাটপাড়া বিধানসভা এলাকার চেয়ারম্যান ধর্মপাল সিংহ বলেন, ‘‘শান্তি ফিরলে বিজেপি নেতার এলাকায় অপ্রাসাঙ্গিক হয়ে পড়বেন। ভয়ে তাঁরা অশান্তি জিইয়ে রাখছে।’’
নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘জোর করে দখল করা হালিশহর ও কাঁচরাপাড়া পুরসভা বিজেপির হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। অন্যান্য এলাকাতেও তাঁদের সন্ত্রাসের রেশ ফিকে হচ্ছে। সেই জন্যই ওরা ফের অশান্তি পাকাচ্ছে।’’ অর্জুন বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতারা দিবাস্বপ্ন দেখছেন। সময় এলে দেখিয়ে দেব, সব পুরসভাই আমাদের দখলে। পুলিশ আমাকে জব্দ করতে গোলমাল পাকাচ্ছে।’’
জনসংযোগ বাড়াতে পুলিশ ভাটপাড়া এলাকায় ছোটদের নিয়ে ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করেছিল শুক্রবার। সেদিনই সকালে কাঁটাপুকুরের যে মাঠে খেলা ছিল, সেই মাঠে বোমাবাজি হয়। তার ফলে সেদিন খেলা বন্ধ রাখা হয়। টুর্নামেন্ট সরিয়ে আনা হয় কাঁকিনাড়ার একটি মাঠে। শনিবার সেখানে খেলা হয়। রবিবার ছিল তার ফাইনাল। শনিবার রাত থেকেই বোমাবাজি শুরু হয়েছিল। তবে রবিবার ফুটবল খেলা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা-সহ ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কর্তারা মাঠে ছিলেন। পুলিশ কমিশনার জানান, এই টুর্নামেন্টের সেরা দুই খেলোয়াড়কে তাঁরা প্রশিক্ষণের জন্য জার্মানি পাঠাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy