Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কখনও ‘কাকা’, কখনও ‘নাতি’, ভোটদানে সাহায্যের হাত

কাকা আকবর আলি মণ্ডলের এই প্রস্তাব শুনে অবাক টুম্পা খাতুন।  হুইল চেয়ার চালিয়ে বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দুরে রাজারহাটের রাইগাছি প্রি-প্রাইমারি স্কুলে ভোট দিতে এসেছেন বছর আঠাশের তরুণী টুম্পা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০৬:৩৫
Share: Save:

‘‘ভাইজির ভোটটা আমি দেব।’’

কাকা আকবর আলি মণ্ডলের এই প্রস্তাব শুনে অবাক টুম্পা খাতুন। হুইল চেয়ার চালিয়ে বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দুরে রাজারহাটের রাইগাছি প্রি-প্রাইমারি স্কুলে ভোট দিতে এসেছেন বছর আঠাশের তরুণী টুম্পা। সঙ্গে মা মমতাজ বিবি। ভোটকেন্দ্রে হুইল চেয়ারে বসে তাঁর দাবি, ‘‘ এত বছর তো ভোটটা আমিই দিয়ে এসেছি। এবারও আমিই দেব।’’

দেড় বছরে পোলিওয় আক্রান্ত হয়ে টুম্পার দু’পা অকেজো। একটু বড় হতেই টুম্পা হুইলচেয়ারে বন্দি। হুইলচেয়ারেই স্কুলে গিয়ে মাধ্যমিক পাশ করেছেন। হুইলচেয়ার চালিয়েই সকাল আটটার মধ্যে চলে এসেছেন ভোটকেন্দ্রে। কিন্তু এখানে এসে কিছুটা অবাকই হয়েছেন। ভোটকেন্দ্রে তো কোনও মহিলা পুলিশকর্মী নেই। ভাগ্যিস মাকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। মা না থাকলে কে তাকে হুইল চেয়ার থেকে তুলে কোলে করে ব্যালট বক্স পর্যন্ত নিয়ে যেত?

মহিলা পুলিশকর্মী নেই কেন? উত্তর নেই বুথে কর্মরত পুলিশকর্মীর। টুম্পার মতোই ভোট দিতে আসা কয়েক জন মহিলা ভোটারের প্রশ্ন, এই বুথে এত মহিলা ভোটার লাইন দিয়ে ভোট দিচ্ছেন। গন্ডগোল হলে কী ভাবে মহিলাদের সামলানো হবে? টুম্পা যদি হুইলচেয়ার চালিয়ে একা ভোট দিতে আসতেন তা হলে কি তিনি ভোট না দিয়ে ফিরতেন?

টুম্পা অবশ্য ভোট না দিয়ে ফিরে যাওয়ার মেয়ে নন। বয়স্ক মাকে বলেন, ‘‘মহিলা পুলিশ যখন নেই তখন তুমিই আমাকে কোলে করে ব্যালট বাক্স পর্যন্ত পৌঁছে দাও। আমার ভোট আমিই নিজেই দেব।’’

টুম্পার জেদেরই জয় হল। হুইল চেয়ার দাঁড়াল বুথের দরজার ঠিক কাছে। সেখান থেকে টুম্পার মা মমতাজ মেয়েকে কোলে তুলে নিলেন। ভোট দেওয়ার আগের প্রক্রিয়া সেরে টুম্পাকে নিয়ে পৌঁছে গেলেন ব্যালট বক্সের ঘেরাটোপের মধ্যে। নিজের ভোট নিজেই দিলেন টুম্পা।

টুম্পার কাকার মতোই পুরুলিয়ার বরাবাজারে দাদুর হয়ে ‘নাতি’ ভোট দিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। যদিও দাদুর নাম জানেন না ‘নাতি’। প্রত্যক্ষদর্শীরা চেপে ধরতেই দাদুর কাছে নাম জানতে যান ‘নাতি’। বিডিও (বরাবাজার) শৌভিক ভট্টাচার্যের অবশ্য দাবি, ‘‘এমন কোনও অভিযোগ পাইনি।’’

সহ প্রতিবেদন: সমীর দত্ত

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE