Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

আতঙ্কের ভূস্বর্গ থেকে ফিরলেন ১৩৮ জন শ্রমিক

২৯ অক্টোবর রাতে কুলগামের কাতরাসু গ্রামে জঙ্গিদের গুলির শিকার হন মুর্শিদাবাদের বাহালনগর গ্রামের পাঁচ শ্রমিক।

সোমবার ট্রেনে শ্রীনগর থেকে কলকাতায় পৌঁছন বাংলার বেশ কয়েক জন শ্রমিক। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

সোমবার ট্রেনে শ্রীনগর থেকে কলকাতায় পৌঁছন বাংলার বেশ কয়েক জন শ্রমিক। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৫৫
Share: Save:

কাশ্মীরের কুলগামে মুর্শিদাবাদের পাঁচ বাসিন্দাকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়ার দুঃসংবাদ সেই রাতেই শ্রীনগরের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাঙালি শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল। তার পর থেকে তাঁরা ঘরবন্দি হয়ে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী ও স্থানীয় পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেই পর্বের বিবরণ দিতে গিয়ে চোখ ছলছলিয়ে উঠল শ্রীনগর থেকে কলকাতায় ফেরা বাঙালি শ্রমিকদের। সোমবার বিকেল ৫টা নাগাদ জম্মু-তাওয়াই এক্সপ্রেসে মোট ১৩৮ জন বাঙালি শ্রমিক কলকাতা স্টেশনে এসে পৌঁছন।

২৯ অক্টোবর রাতে কুলগামের কাতরাসু গ্রামে জঙ্গিদের গুলির শিকার হন মুর্শিদাবাদের বাহালনগর গ্রামের পাঁচ শ্রমিক। তার পর থেকে প্রবল আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছিলেন কাশ্মীরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা বাঙালি শ্রমিকেরা। কাশ্মীরের অশান্ত পরিবেশের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ১৩৮ জন বাঙালি শ্রমিককে এ দিন ফিরিয়ে আনা হয়। কলকাতা স্টেশনে তাঁদের অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কাশ্মীরফেরত শ্রমিকদের ব্যারিকেড করে প্ল্যাটফর্মের বাইরে নিয়ে যায় পুলিশ। কলকাতা স্টেশন থেকে তাঁদের পাঁচটি সরকারি বাসে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

নবান্ন সূত্রের খবর, কাশ্মীরফেরত ১৩৮ জন শ্রমিকদের মধ্যে ১১২ জনই দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা। পাঁচ জনের বাড়ি অসমে। বাকিরা উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, বীরভূম এবং মালদহের বাসিন্দা।

আরও পড়ুন: ইভিপি ম্যাচে দৈনিক গড় বাড়াতে মরিয়া বঙ্গ

কাশ্মীরে পাঁচ বাঙালি শ্রমিক খুনের প্রতিবাদে শহরে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।

বাবলু হক নামে দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমুন্ডির এক শ্রমিক বলেন, ‘‘কুড়ি বছর ধরে শ্রীনগরে প্লাউউডের কাজ করছিলাম। পাঁচ বাঙালিকে খুন করা হয়েছে শুনে আমরা মালিকের ঘরে আতঙ্কে থাকতাম। ঘর থেকে বেরোতে পারতাম না। শেষে ৩১ অক্টোবর রাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে আমাদের ক্যাম্পে নিয়ে গেল। ওরা বারবার বলছিল, এই পরিস্থিতিতে আমাদের কাশ্মীরে থাকা ঠিক হবে না।’’ আর এক শ্রমিক আব্দুল কালাম আজাদের কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার যে-ভাবে আমাদের বাড়ি পৌঁছনোর ব্যবস্থা করল, তাতে আমরা খুশি।’’ একই সঙ্গে শ্রমিকদের দুর্ভাবনা, বেশি টাকা রোজগারের আশায় তাঁরা কাশ্মীরে গিয়েছিলেন। এখানে ফিরে তত টাকা আয়ের সুযোগ মিলবে কি?

ফিরহাদ বলেন, ‘‘এখানে একশো দিনের কাজ আছে। কাশ্মীরের মতো অত টাকা পাবেন না ঠিকই। তবে ওঁরা এ রাজ্যে শান্তিতে থাকতে পারবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kashmir Terrorist Attack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy