ছবি: সংগৃহীত।
তালিকার শীর্ষে উত্তরপ্রদেশ। তবে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস বুরো (এনসিআরবি)-র সাম্প্রতিক (২০১৮ সালের নিরিখে) রিপোর্ট অনুযায়ী সরকারি সম্পত্তি নষ্টের মতো রাজ্য-বিরোধী অপরাধ উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। যদিও বাংলায় এই ধরনের অপরাধের সংখ্যা অন্য অনেক রাজ্যের তুলনায় বেশ কম। এবং ওই রিপোর্টই বলছে, ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গে ‘আনলফুল অ্যাক্টিভিটি প্রিভেনশন অ্যাক্ট’ বা ইউএপিএ-তে কোনও মামলা হয়নি।
প্রশাসনিক ব্যাখ্যায়, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা ছাড়াও রাজ্য বা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সংগঠিত হিংসাত্মক বিক্ষোভকেও এই ধরনের অপরাধ হিসেবে ধরা হয়। এনসিআরবি-র সমীক্ষা অনুযায়ী রাজ্যের বিরুদ্ধে অপরাধের হার ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্রমশই বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ২০১৬ সালে এই ধরনের নথিভুক্ত অপরাধের সংখ্যা ছিল ১০২। ২০১৭-য় তা বেড়ে হয় ১৬৭। ২০১৮ সালে সংখ্যাটা ১৮৪-তে পৌঁছে যায়। তার মধ্যে ১৭৯টি অপরাধ নথিবদ্ধ হয়েছিল ‘দ্য প্রিভেনশন অব ড্যামেজ টু পাবলিক প্রপারটি’-র আওতায়। অর্থাৎ এই ঘটনাগুলিতে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট বা ভাঙচুর করা হয়েছিল ব্যাপক ভাবে। ২০১৮ সালে বাংলায় ভারতীয় দণ্ডবিধি (আইপিসি)-র ১২১ থেকে ১২৩ ধারায় অপরাধের অভিযোগ রুজু হয়েছে মাত্র চারটি। আইনজীবীদের একাংশের ব্যাখ্যা, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষণা, তার জন্য অস্ত্র সংগ্রহ এবং গোপনে তার পরিকল্পনা করার মতো অপরাধ এই তিন ধারার আওতায় আসে। সরকারের গোপন তথ্য ফাঁসের মতো একটি অপরাধও নথিভুক্ত হয়েছিল।
সরকারি ভাবে কেউ মুখ খুলতে না-চাইলেও প্রশাসনের একাংশের ব্যাখ্যা, এনসিআরবি-র রিপোর্ট প্রমাণ করে, গুরুতর অপরাধ অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেক কম হয়েছে বাংলায়। উত্তরপ্রদেশ বা তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যের তুলনায় সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের মতো ঘটনার সংখ্যাও এখানে অনেক কম। তবে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে আন্দোলনের ঘটনা যে গত তিন বছরে ক্রমশ বেড়েছে, রিপোর্ট থেকেই সেটা স্পষ্ট। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে অতীতে একাধিক বার সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা রুখতে আইনও পাশ করেছে এ রাজ্য।
আরও পড়ুন: সুকান্তের আসন নিয়ে ভাবনা বেশি তৃণমূলে
তালিকার শীর্ষে থাকা উত্তরপ্রদেশে ২০১৬, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে রাজ্যের বিরুদ্ধে অপরাধ নথিবদ্ধ হয়েছে যথাক্রমে ১৪১৪, ২০৫৫ এবং ২৫০৩টি। ২০১৮ সালে ওই রাজ্যে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের ২৩৮৮টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। অপরাধের সাতটি ঘটনা সরকারি গোপন তথ্য ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত। এবং ওই বছর উত্তরপ্রদেশে ইউএপিএ-তে মামলা হয়েছে ১০৭টি। সেই জায়গায় এ রাজ্যে ২০১৮ সালে কারও বিরুদ্ধেই ইউএপিএ প্রয়োগ করা হয়নি।
এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘এক সময় পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদী সমস্যা ছিল। এখন তা নেই। ২০১৮ সালে ইউএপিএ-তে যে বাংলায় কোনও মামলা রুজু হয়নি, সেটাই প্রমাণ করে, এ রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমোন্নতি হচ্ছে। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের মতো ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই সব দিক থেকে ইতিবাচক জায়গায় থাকবে পশ্চিমবঙ্গ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy