চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রসঙ্গে নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
আন্দোলন প্রত্যাহার করে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে যোগ দিতে ফের আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার তাঁদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, পরিষেবা স্বাভাবিক হোক, সরকার সব সহযোগিতা করবে। একই সঙ্গে শান্তিপূর্ণ উপায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিনি যে আগ্রহী, তা উল্লেখ করে চিকিৎসার মতো জরুরি পরিষেবা চালু করতে প্রয়োজনীয় আইনি ক্ষমতা যে প্রশাসনের হাতে রয়েছে, তা-ও এ দিন স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এর পরে রাতে জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষ থেকে আলোচনার রাস্তা খোলা আছে বলে জানানো হলেও কর্মবিরতি তুলে নিয়ে আমজনতাকে স্বস্তি দেওয়ার কোনও ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি। সরকারের সঙ্গে তাঁরা কোথায় আলোচনায় বসতে পারেন, তা-ও জানাতে পারেননি তাঁদের মুখপাত্র।
শুক্রবার প্রবীণ পাঁচ চিকিৎসককে মধ্যস্থতার দায়িত্ব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আন্দোলনকারীরা যাতে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারেন, সে জন্য প্রায় পাঁচ ঘণ্টা নবান্নে অপেক্ষা করেন তিনি। কিন্তু তাঁরা আসেননি। এর পর প্রবীণ চিকিৎসকেরা তাঁদের শনিবার বিকেল পাঁচটায় নবান্নে আসার অনুরোধ করেছিলেন। এ দিন নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে জুনিয়র ডাক্তারেরা জানিয়ে দেন, তাঁরা নবান্নে যাবেন না। মুখ্যমন্ত্রীকেই এনআরএসে আসতে হবে, এবং এসএসকেএমে তিনি যে ‘হুমকি’ দিয়েছেন তার জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। এই অবস্থায় শনিবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে দুই প্রবীণ চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় ও অভিজিৎ চৌধুরী বলে দেন, ‘‘আমরা মধ্যস্থতা করতে ব্যর্থ। সরকার এ বার যা করার করবে।’’
এর পরে ফের বৈঠক চলে প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলে। তার পরে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে বহু মানুষ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুও হচ্ছে। এই অবস্থায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়াকে অমানবিক বলে মনে করছে সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সমানে চেষ্টা করছি। গত কাল (শুক্রবার) এবং আজ আলোচনার জন্য অপেক্ষা করেছি। যারা কাজে যোগ দিতে চাইছেন, তাঁদের সরকার সহযোগিতা করবে। নিরাপত্তার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকার আরও দাবি মানতে রাজি।’’
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছেন, জরুরি পরিষেবা চালানোতে তাঁর হাতে এসেনশিয়াল সার্ভিসেস মেনটেন্যান্স অ্যাক্ট (এসমা) রয়েছে। এর আগে কয়েকটি রাজ্যে এসমা প্রয়োগ করে চিকিৎসকদের কাজে যোগ দিতে বাধ্য করা হলেও, তিনি এখনই যে সে পথে হাঁটতে চান না, সেই বার্তাও দিয়েছেন মমতা। তবে তাঁরও যে একটা সীমাবদ্ধতা আছে, সে কথা বুঝিয়ে দিতেও ছাড়েননি তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায় রয়েছে। চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা যায়। ইতিমধ্যেই ৯-১০টি রাজ্য এসমা প্রয়োগ করেছে। এখনও মানবিকতা, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি বলে এ সব কিছুই করিনি। কিন্তু কত দিন?’’
রাতে জুনিয়র ডাক্তারেরা জানান, নবান্নে বন্ধ ঘরে আলোচনা সম্ভব নয়। একই সঙ্গে তাঁদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে, সরকারের এই দাবি সম্পর্কে জুনিয়র ডাক্তারদের মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমাদের কোনও প্রতিনিধি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেননি। তা হলে আমাদের কী দাবি, উনি জানলেন কী করে?’’ এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, এত দিন কি কোনও দাবিদাওয়ার কথা না-জানিয়েই তাঁরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছিলেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy