Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

আন্দোলন এ বার ঔদ্ধত্যে পৌঁছচ্ছে

ছ’দিন গড়িয়ে গিয়েছে। সমস্যা জটিলতর হয়েছে। রোগীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। আন্দোলন মেটেনি।

আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা।—ছবি পিটিআই।

আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা।—ছবি পিটিআই।

দেবাশিস ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৯ ০৩:১১
Share: Save:

ঔদ্ধত্যের একটা সীমা আছে। আজ বলতেই হবে, আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা তা ভুলে যাচ্ছেন।

এর আগে মনে হয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক বার প্রহৃত চিকিৎসকের পাশে দাঁড়িয়ে মাথায় সহানুভূতির হাত রাখলে সমস্যার সমাধান আরও আগে এবং অনেক সহজে হত। তাঁর ভাবমূর্তির সঙ্গেও এমনটি মানানসই। এখনও বলব, মমতা এ টুকু আগেই করতে পারতেন।

কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার দিনভর আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা যা করলেন— মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, প্রবীণ চিকিৎসকদের মধ্যস্থতার চেষ্টা, সব কিছু যে ভাবে প্রত্যাখ্যান করলেন, তাকে অসৌজন্য এবং সীমাহীন ঔদ্ধত্য ছাড়া আর কোনও ভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না। এটা নিন্দার যোগ্য।

ছ’দিন গড়িয়ে গিয়েছে। সমস্যা জটিলতর হয়েছে। রোগীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। আন্দোলন মেটেনি। কারণ, চিকিৎসকদের দাবি মেনে মুখ্যমন্ত্রী নিজে এনআরএসে যাননি।

কিন্তু এটাই একমাত্র চাহিদা বলে জিদ ধরে চিকিৎসকেরা যদি কাজ বন্ধ রেখে রোগীদের ক্রমাগত সীমাহীন দুর্গতির দিকে ঠেলে দিতে থাকেন, তবে তা দুর্ভাগ্যের। তাঁদের আন্দোলন বিষয়টিকে সেই দিকেই নিয়ে যাচ্ছে।

শুক্রবার সন্ধ্যাতেই প্রবীণ চিকিৎসকদের মাধ্যমে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে উদ্যোগী হয়েছিলেন মমতা। শনিবার ফের সেই চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পরে তিনি নিজে সরাসরি কর্মবিরতি তোলার আবেদন জানিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে বলেছেন, যদি তাঁকে ‘পছন্দ’ না হয়, তা হলে তাঁরা রাজ্যপাল, মুখ্যসচিবের মতো যে কোনও শীর্ষ পদাধিকারীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন। আন্দোলনকারীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি, এ-ও বলেন, চিকিৎসার মতো জরুরি পরিষেবায় কাজ বন্ধ রাখলে ‘এসমা’ জারির যে সংস্থান আছে, তা তিনি প্রয়োগ করতে চান না। বরং বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবে মিটিয়ে নিতে চান।

তা সত্ত্বেও আন্দোলনে অনড় থাকার সিদ্ধান্ত বহাল রেখে চিকিৎসকেরাই এ বার হয়তো ক্রমশ ‘গণশত্রু’ হয়ে উঠবেন। তার পরিণাম কখনওই মঙ্গলজনক হতে পারে না। যদি এর পিছনে কোনও সূক্ষ্ম রাজনৈতিক ইন্ধন থাকে, যদি কোনও শক্তি পশ্চিমবঙ্গে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে চরম অচলাবস্থার ‘ফায়দা’ তুলতে চায়, তা হলে এর পর তাঁদেরও সতর্ক হওয়ার সময় এল। কারণ, সামাজিক শৃঙ্খলা এটাই দাবি করে। একটা জিনিস বুঝতে হবে, দেরি হলেই সব কিছু শেষ হয়ে যায় না। সবুরে মেওয়া ফলে। মুখ্যমন্ত্রী এখন যে ভাবে এগিয়ে এসেছেন, তাকে অমর্যাদা করার অর্থ সরকার ও চিকিৎসাপ্রার্থীদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিপাকে ফেলা।

চিকিৎসকেরা সমাজের সব চেয়ে বড় বন্ধু। তাঁরা সেই ‘বন্ধুত্বে’র মান রাখবেন এটাই প্রত্যাশা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy