মিঠানির রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় দু’বছর আগে সাংসদ কোটার টাকায় শুরু হয়েছিল রাস্তার কাজ। কিন্তু সময় পেরোলেও রাস্তার হাল সেই তিমিরেই। কুলটির মিঠানি গ্রামে এ নিয়ে ক্ষোভ এতটাই যে বিদায়ী সাংসদ তথা দলীয় প্রার্থীকে নিয়ে এলাকায় স্বাচ্ছন্দে ভোটের প্রচারও করতে পারছেন না এলাকার সিপিএম নেতা-কর্মীরা। যদিও এই পরিস্থিতির কথা মানতে চাননি তাঁরা।
বহু বছর ধরেই মিঠানি গ্রামের ওই রাস্তা সংস্কারবিহীন হয়ে পড়ে রয়েছে। অথচ প্রতিদিনই প্রায় কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন ওই রাস্তা দিয়ে। এলাকার মাধ্যমিক স্কুলে যাওয়া-আসারও একটা রাস্তা এটা। স্থানীয়রা জানান, পাশের পাটমোহনা, বিদ্যানন্দপুর, আলুঠিয়া, করঞ্জপাড়া এলাকার ছাত্রছাত্রীরা ওই রাস্তা দিয়েই স্কুলে আসে যায়। ইসিএল ও ইস্কোয় কর্মরত এলাকার বাসিন্দাদের একাংশও নিত্য যাতায়াত করেন সেখান দিয়েই। বাসিন্দাদের দাবি, কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় ও আসানসোলের সাংসদ বংশোগোপাল চৌধুরীর কাছে একাধিক বার রাস্তার হাল ফেরানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। সব শোনার পরে বংশোগোপালবাবু সাংসদ কোটা থেকে ওই রাস্তাটির জন্য প্রায় সাত লক্ষ টাকা অনুমোদনও করেন। বাসিন্দারাই জানান, ২০১২ সালের ৬ নভেম্বর এলাকার সিপিএম নেতারা ঘটা করে রাস্তা তৈরির সূচনা করেন। মাটি কেটে বড় বড় বোল্ডার ফেলা হয়, মোরামও বিছানো হয়। কিন্তু দিন পনেরো পরে আচমকা কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সেই কাজ আজও শুরু হয়নি। উপায় না থাকায় এলাকাবাসী ওই ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করছেন।
রাস্তার কাজ এভাবে থমকে গেল কেন জানতে চাওয়া হলে অবশ্য সিপিএমের কোনও নেতা-কর্মীই মন্তব্য করতে চাননি। তবে বিদায়ী সাংসদ বংশোগোপাল চৌধুরী বলেন, “প্রথম পর্য়ায়ে যে পরিমাণ টাকা পাওয়া গিয়েছিল তাতে ওই কাজ হয়েছে। নির্বাচনে জিতলে আবার অর্থ অনুমোদন করিয়ে বাকি কাজ করা হবে।” এলাকার বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি ইস্কো কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁদের সামাজিক দায়িত্ব তহবিল (সিএসআর) থেকে অর্থ অনুমোদন করে রাস্তাটি তৈরির আবেদন করেছিলাম। কিন্তু সাংসদ নিজের কোটা থেকে অর্থ অনুমোদন করায় ইস্কোর কাছ থেকে অনুদান মেলেনি।” উজ্জ্বলবাবুর অভিযোগ, সাংসদ তহবিল থেকে পর্যাপ্ত টাকা না মেলায় ওই রাস্তাটিও বানানো যায়নি। তবে এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, ইস্কোর সাহায্য নিয়ে কুলটির তৃণমূল বিধায়ক রাস্তাটি তৈরি করে দিলে তিনি এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠবেন। এই ভয়ে দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এলাকার সিপিএমর নেতারা সাংসদকে দিয়ে তড়িঘড়ি অর্থ অনুমোদনের ব্যবস্থা করেন।
কিন্তু রাজনীতির টানাপড়েনে লাভ হয়নি কোনও পক্ষেরই। বাসিন্দারা রাস্তা পাননি। রাস্তা না হওয়ায় সিপিএম জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। ফলে সাংসদকে নিয়ে সেভাবে এলাকায় ভোটের প্রচার করতে পারছেন না সিপিএমর নেতারা। ক্ষোভ জানিয়ে বিদায়ী সাংসদ বংশোগোপাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে ফ্লেক্স টাঙিয়েছেন, দেওয়াল লিখেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তবে ক্ষোভের কথা অস্বীকার করেছেন সিপিএমর কুলটি জোনাল সম্পাদক সাগর মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ওই এলাকায় কোথাও কোনও ক্ষোভ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy