রূপনারায়ণপুরে হিন্দুস্তান কেব্লস কারখানা। ফাইল চিত্র।
শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে গিয়েছে পুনরুজ্জীবন ও অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বৈঠক। তাই ফের হতাশা হিন্দুস্তান কেব্লস কারখানার কর্মীদের মধ্যে।
বোর্ড ফর রিকনস্ট্রাকশন অব পাবলিক সেক্টর এন্টারপ্রাইজেস (বিআরপিএসই)-এর ওই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল গত ৩০ এপ্রিল। বৈঠকে থাকার কথা ছিল ভারী শিল্প মন্ত্রক ও কারখানাটি অধিগ্রহণের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করা অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের আধিকারিকদের। কিন্তু ভারী শিল্প মন্ত্রকের তরফে হঠাৎ জানানো হয়, এই বৈঠক হবে না। এই খবর শোনার পরে কারখানার শ্রমিক-কর্মীদের মধ্যে আবার আশঙ্কা দানা বেঁধেছে, সংস্থাকে ঘুরে দাঁড় করানোর যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, বৈঠক বাতিল হওয়ায় তা অনেকটা বাধা পেল। তবে সোমবার দিল্লিতে ভারী শিল্প মন্ত্রকের সঙ্গে সংস্থার আধিকারিকেরা একটি বিশেষ বৈঠক করেছেন বলে সংস্থার একটি সূত্রে খবর।
গত প্রায় এগারো বছর ধরে হিন্দুস্তান কেব্লস কারখানা পুনরুজ্জীবনের ব্যাপারে নানা আলাপ-আলোচনা চলে আসছে। এখনও পর্যন্ত বিআইএফআর এবং বিআরপিএসই-তে ৪০টিরও বেশি বৈঠক হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি নানা সংস্থাকে দিয়ে তৈরি করানো একাধিক পুনরুজ্জীবন প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। শেষমেষ এই কারখানা অধিগ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্ত অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড। গত প্রায় এক বছর ধরে সেই প্রক্রিয়া চলছিল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তারা একাধিক বার রূপনারায়ণপুরে ঘুরেও গিয়েছেন। অধিগ্রহণ সংক্রান্ত কাগজপত্রও তৈরি করেন সংস্থার আধিকারিকেরা। সংস্থা সূত্রে খবর, ৩০ এপ্রিল বিআরপিএসই-এর বৈঠকে সেই সব কাগজপত্র সংস্থার আধিকারিকেরা জমা করবেন বলে ঠিক ছিল। কিন্তু বৈঠকই বাতিল হয়ে গিয়েছে।
কেন বৈঠক বাতিল হল, সে ব্যাপারে কোনও কথা বলতে চাননি সংস্থার রূপনারায়ণপুর ইউনিটের প্রধান বাসুদেব দে। তবে তিনি বলেন, “আমরা সব কাগজপত্র তৈরি রেখেছিলাম। কিন্তু বৈঠক মাঝপথে না হওয়ায় আমরা সে সব জমা করতে পারিনি।” তাঁর দাবি, “সব তো ঠিকই চলছিল। কিন্তু বৈঠক না হওয়ায় আবার সংশয় দেখা দিয়েছে। অবশ্য এখনও আমরা হাল ছাড়ছি না।” সংস্থার এক আধিকারিকের আবার দাবি, সম্প্রতি ভারী শিল্প মন্ত্রকের পরিকল্পনা ও অর্থ দফতর বিশদ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানিয়েছে, এই সংস্থাটি লাভজনক করা যাবে না। তার পরেই ভারী শিল্প মন্ত্রকের তরফে ‘ক্লোজার’ ঘোষণার সুপারিশ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিআরপিএসই-এর বৈঠকটি নিস্প্রয়োজন মনে হওয়ায় তা বাতিল করা হয়। সংস্থার রূপনারায়ণপুর ইউনিটের জনসংযোগ আধিকারিক হরিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় জানান, ভারী শিল্প মন্ত্রকের ‘ক্লোজার’ ঘোষণার সুপারিশ ও বিআরপিএসই-এর বৈঠক বাতিলের পরেই সংস্থার আধিকারিকেরা দিল্লি গিয়ে মন্ত্রকের সচিবদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কথা হযেছে ভারী শিল্প মন্ত্রী প্রফুল্ল পটেলের সঙ্গেও। সোমবার এ বিষয়েই একটি উচ্চ পর্য়ায়ের বৈঠক হয়েছে।
বৈঠক বাতিল হওয়ার খবর আসতেই হতাশায় ভুগতে শুরু করেছেন সংস্থার শ্রমিক-কর্মী থেকে আধিকারিকেরা। সংস্থার প্রায় আটশো শ্রমিক-কর্মী গত আট মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। কারখানার আইএনটিইউসি নেতা উমেশ ঝা বলেন, “আর কোনও ভরসা পাচ্ছি না। কেন্দ্রে এ বার যে-ই সরকার গড়ুন না কেন, তারা যদি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না করেন, আমরা অথৈ জলে পড়ব।” সংস্থার সিটু নেতা প্রদীপ সাহা বলেন, “প্রায় আট মাস বেতন নেই। নতুন সরকার গঠনের পরে এ সব নিয়ে আলাপ-আলোচনায় বসতে আরও কয়েক মাস সময় পেরিয়ে যাবে। তত দিনে শ্রমিকদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
জল কোন দিকে গড়ায়, সে দিকেই এখন তাকিয়ে কেব্লস কারখানার কর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy