পথ দুর্ঘটনা ঠেকাতে এবং গাড়ি, ট্রাক চালকদের সতর্ক করতে লাইসেন্স আটক করা শুরু করেছে বর্ধমান জেলা পুলিশ। বড় দুর্ঘটনা ঘটলে গাড়ির লাইসেন্স দু থেকে তিন মাসের জন্যও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া হচ্ছে। গত বছর ২৫৩টি লাইসেন্স এই কারণে বাতিল করা হয়েছে বলেও জেলা পুলিশের দাবি।
কিন্তু এমন অভিযানে নামল পুলিশ? জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার বাড়বাড়ন্তই এর কারণ। জেলা জুড়ে বিভিন্ন রাস্তা তো বটেই, শহরের বিভিন্ন সড়কেও প্রায় দিনই কোনও না কোনও দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রাণহানিও ঘটছে। প্রতিদিন অন্তত পাঁচ থেকে ছ’জনের মৃত্যু ঘটছে বলেও পুলিশের দাবি। আর আহতের সংখ্যা এর দ্বিগুন। ফলে বাধ্য হয়ে চালকদের সতর্ক করতে এই লাইসেন্স বাতিলের অভিযানে নামতে হয়েছে পুলিশকে। যদিও এই অভিযান নতুন নয়। গত তিন বছর ধরে চলছে এই ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স সাসপেনশন’ প্রক্রিয়া। পুলিশের দাবি, ২০১২ ও ২০১৩ সালে লাইসেন্স বাতিলের সংখ্যা ছিল যথাক্রেমে ২৭ ও ৮৩। ২০১৪ সালের গোড়ার দিকেও লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া তেমন জোরালো ছিল না। তবে পরের অর্ধে তাতে যথেষ্টই জোর দেওয়া হয়। ওই বছর জানুয়ারিতে ৭টি, ফেব্রুয়ারিতে ৫, মার্চে ৫ ও এপ্রিলে ২টি লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু ছবি বদলে যায় জুন থেকে। জুনে ৩২, জুলাইয়ে ২৩, অগস্টে ২২, সেপ্টেম্বরে ৪০, অক্টোবরে ১৬, নভেম্বরে ৪১ ও ডিসেম্বরে ৬০টি লাইসেন্স বাতিল করা হয়। তার মধ্যে গলসি থানা ২৩, বর্ধমান থানা ৩১, ভাতার ২০ ও কাটোয়া, আউশগ্রাম ও মেমারি থানা ১৯টি করে লাইসেন্স বাতিল করে। এর পাশাপাশি যানবাহন সংক্রান্ত আরও অভিযানও চালাচ্ছে পুলিশ। ট্রাফিক আইন না মেনে চলায় ২০১৪ সালে ৭৮৪টি মামলা দায়ের করা হয় ৭৮৬ জনের বিরুদ্ধে। ১০৯০৯০ জনকে জরিমান করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, জরিমানা বাবদ আদায় করা হয়েছে ১ কোটি ৪০ লক্ষেরও বেশি টাকা।
জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার দাবি, “লাইসেন্স বাতিলের এই প্রক্রিয়ায় আমাদের জেলাই রাজ্যে সবচেয়ে এগিয়ে। দুর্ঘটনা রুখতে চালকদের সতর্ক হয়ে গাড়ি চালানো একান্ত জরুরি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বিশেষত হাইওয়েগুলিতে চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর জেরে জীবনহানি যেমন হচ্ছে, ক্ষতি হচ্ছে সম্পত্তিরও। তাই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে বা কোনও ট্রাক ঢুকে দোকান ভেঙে দিলে সংশ্লিষ্ট চালকের লাইসেন্স অন্তত দু-তিন মাসের জন্য সাসপেনশনের আওতায় আনা হচ্ছে। জাতীয় সড়কে উল্টো দিকের লেনে গাড়ি চালালেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” পুলিশের আশা, এ ধরনের নিয়মিত অভিযানে পথ দুর্ঘটনা অনেকটাই কমানো যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy