Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪

এলাকা পরিষ্কারে কোদাল হাতে নামলেন প্রবীণেরা

রবিবার হলেই ঝুড়ি, কোদাল নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন এলাকার বয়স্ক মানুষেরা। তারপর কখনও পাড়ার পার্ক, কখনও মাঠের পার্থেনিয়ামঝপাঝপ কোদাল চলতে থাকে তাঁদের। দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের প্রবীণদের কাছে ছুটির দিন কাটানোর সেরা উপায় এটাই। এতে এলাকা সাফ তো হয়ই, সঙ্গে পারস্পরিক যোগাযোগটাও গড়ে ওঠে বলে তাঁদের দাবি।

সিটি সেন্টারে ঝোপঝাড় সাফ। নিজস্ব চিত্র।

সিটি সেন্টারে ঝোপঝাড় সাফ। নিজস্ব চিত্র।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৪ ০২:৫৫
Share: Save:

রবিবার হলেই ঝুড়ি, কোদাল নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন এলাকার বয়স্ক মানুষেরা। তারপর কখনও পাড়ার পার্ক, কখনও মাঠের পার্থেনিয়ামঝপাঝপ কোদাল চলতে থাকে তাঁদের। দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের প্রবীণদের কাছে ছুটির দিন কাটানোর সেরা উপায় এটাই। এতে এলাকা সাফ তো হয়ই, সঙ্গে পারস্পরিক যোগাযোগটাও গড়ে ওঠে বলে তাঁদের দাবি।

ওই প্রবীণেরাই জানান, সিটি সেন্টারের অবয়ব আগের থেকে অনেক বেড়েছে। বাইরে থেকে নতুন অনেকে এসেছেন। ফলে পারস্পরিক চেনা-পরিচয়ের গণ্ডিটা অনেকটাই ছোট হয়ে গিয়েছে। তাই একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে মাস খানেক আগে এক বৈঠক করেন তাঁরা। ঠিক করেন, কিছু গঠনমূলক কাজকর্ম করবেন। সেই শুরু। এরপরে ‘দুর্গাপুর সেন্ট্রাল পার্ক এক্সটেনশন রেসিডেন্টস ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’ নামে কমিটি গড়ে প্রতি রবিবার এলাকা সাফ করার পাশাপাশি বিভিন্ন গঠনমূলক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাজকর্ম করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।

সপ্তাহ তিনেক আগে প্রথম কাজ শুরু হয়। একজোট হওয়ার পরেই সবার চোখে পড়ে পাড়ার আনাচে কানাচে পার্থেনিয়ামের বাড়বাড়ন্ত। সকলে নেমে পড়েন পার্থেনিয়াম সাফ করতে। এ রবিবারও পাড়ার পার্ক সাফাইয়ে হাত লাগান তাঁরা। সংগঠনের সভাপতি তথা দুর্গাপুর ইস্পাতের জনসংযোগ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, “নোংরার মধ্যেই ছেলেমেয়েগুলো খেলাধুলো করে। তাই ভাবলাম পার্কটা পরিস্কার করে দিই।” কিন্তু রবিবারই কেন? অমিতাভবাবু জানান, এলাকার অনেক কমবয়েসীরাও তাঁদের কাজে হাত লাগাতে চান। তাঁদের সুবিধের জন্যই ছুটির দিন বেছে নেওয়া। সংগঠনের সম্পাদক সুধীরকুমার পণ্ডা বলেন, “আমরা এভাবে সবাইকে এককাট্টা করতে চাই। তাহলেই আগের মতো পাড়ার আন্তরিক পরিবেশ ফিরে আসবে।”

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সিটি সেন্টার এলাকায় অনেক ফাঁকা জায়গা পড়ে রয়েছে। সেখানে নিত্য দিনই অসামাজিক কাজকর্ম হয়। এলাকাবাসীরা জানলেও ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারেন না। কিন্তু সবাই একসঙ্গে বাদা দিলে সমাজবিরোদীরা ভয় পাবে বলে তাঁদের আশা। এমন উদ্যোগে খুশি পাড়ার যুব সমাজও। বেসরকারি সংস্থার কর্মী পিনাকী গুহ বলেন, “আমি দীর্ঘদিন ধরে এখানে ভাড়া থাকি। এমন কাজের কথা শোনার পর থেকেই হাত লাগাতে চাই। সেক্ষেত্রে নিজেকে এখানকার একজন বলে ভাবতে পারব।” বাসিন্দাদের এমন উদ্যোগের খবর পেয়ে এ দিন হাজির হয়েছিলেন স্থানীয় ২২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি পরিমল অগস্তি। তিনিও হাত লাগান সাফাইয়ের কাজে। পরিমলবাবু বলেন, “ওয়ার্ডের এলাকাটি বেশ বড়। পুরসভার কাজে বাসিন্দারা যদি এ ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে সুবিধেই হবে।” তাঁর আশা, অন্যান্য ওয়ার্ডের কাছেও সিটি সেন্টারের এই প্রবীণ বাসিন্দাদের উদ্যোগ সাড়া ফেলবে।

অন্য বিষয়গুলি:

durgapur city centre subrata shit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy