দরজায় ঝুলে যাতায়াত। —নিজস্ব চিত্র।
অর্ধেক দরজা খোলা রেখেই দৌড়চ্ছে বাস। পাশ দিয়ে যাওয়া মোটরবাইক বা সাইকেল আরোহী, এমনকী পথচারীরা পড়ছেন বিপাকে। শুধু তাই নয়, বাসস্টপে না দাঁড়িয়ে রাস্তার যেখানে-সেখান থেকে তোলা হয় যাত্রী। তার ফলেও সমস্যায় পড়েন পথচারীরা। আসানসোল শিল্পাঞ্চলে এমনই অভিযোগ উঠেছে বাস, মিনিবাসের চালক-কর্মীদের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, নিয়ম যারা ভাঙবে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সপ্তাহখানেক আগেই কুলটির নিউরোডের কাছে একটি বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। কুলটি কারখানার ওই কর্মী জি টি রোড ধরে সাইকেল চালিয়ে কাজে যাচ্ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বরাকরগামী একটি বাসের অর্ধেক খুলে রাখা সামনের দরজায় ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়েন তিনি। বাস চলে যায় তাঁর উপর দিয়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বাস ও মিনিবাসগুলি বাসের দরজা অর্ধেক খুলে রেখে যাতায়াত করে। দরজায় ধাক্কা খান পথচারীরা। সব সময় প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও প্রায়শয়ই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ।
শুধু দরজা খুলে যাতায়াত করাই নয়, শহরের বাসগুলি, বিশেষত মিনিবাস পরিবহণ আইনের ধার ধারে না বলে অভিযোগ। নির্দিষ্ট বাসস্টপে না দাঁড়িয়ে যেখানে-সেখানে রাস্তার মাঝখান থেকে যাত্রী তোলা-নামা করে তারা। আচমকা বাস দাঁড় করানোয় পিছন থেকে ছুটে আসা অন্য গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে। একই অভ্যাস রয়েছে শহরের অটো রিকশাগুলিরও। পুলিশ জানায়, এরাও কোনও নিয়ম মানে না। এমনকী, নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী তোলে।
শহরের রাস্তায় বাসের রেষারেষি প্রায় প্রতি দিনের ঘটনা। পুলিশ জানায়, অভিযান চালিয়ে দেখা গিয়েছে, আসানসোল-বরাকর রুট, আসানসোল-চিত্তরঞ্জন রুট ও আসানসোল-বার্নপুর রুটে এই ধরনের অভ্যাস সবচেয়ে বেশি। বাসের চালক ও খালাসিদের দাবি, এই সব রুটে বাসের সংখ্যা অনেক বেশি। তাই বেশি লাভের আসায় দ্রুত গতিতে চালিয়ে বেশি যাত্রী তুলতে গিয়েই বাসগুলি রেষারেষিতে জড়িয়ে পড়ে। বাসের ছাদে পণ্য পরিবহণও চলছে আগের মতোই। মাসখানেক আগে কুলটির নিয়ামতপুরে বাসের ছাদ থেকে চালের বস্তা পড়ে এক স্কুলছাত্রী গুরুতর জখম হয়। তার পরেও এই বেনিয়ম কমার লক্ষণ নেই।
পুলিশ জানায়, শিল্পাঞ্চলের এই বেনিয়ম বন্ধ করতে এ বার উঠেপড়ে নামা হচ্ছে। কমিশনারেটের এসিপি (ট্রাফিক) অভিষেক রায় বলেন, “এই ধরনের ঘটনা আমরা খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। ঠিক হয়েছে, বাসের দরজা আধখোলা অবস্থায় রাস্তায় চলতে দেওয়া হবে না। কড়া হাতে এ সব বন্ধ করা হবে।” তিনি আরও জানান, বাসের মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে পুলিশের এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। এর পরে কেউ যদি এই নিয়ম না মানেন তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলির তরফে জানানো হয়, পুলিশের এই সিদ্ধান্ত মানা হবে।
বাসের চালক-খালাসিরা সত্যি তা মানছেন কি না, প্রমাণ মিলবে পথেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy