রেলের টিকিট সংরক্ষণের জন্য ভোর থেকে কাউন্টারে লম্বা লাইন। আসানসোলের রবীন্দ্রভবনে ওই কাউন্টার সকাল ৮টায় খোলার খানিক পরেই থমকে গেল কাজ। কর্তব্যরত কর্মী জানিয়ে দিলেন, ‘লিঙ্ক’ নেই। তাই আপাতত কাজ হবে না।
চিত্র ২: কুলটির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে সকাল থেকে টাকা তোলা-জমা দেওয়ার জন্য গ্রাহকদের থিকথিকে ভিড়। কিন্তু ব্যাঙ্ককর্মীরা হাত গুটিয়ে বসে। ও দিকে ভিড় বাড়ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ‘লিঙ্ক’ নেই।
চিত্র ৩: আসানসোলের ঊষাগ্রাম এলাকার এক কলেজে অনলাইনে ভর্তি-সহ নানা কাজে ব্যস্ত শিক্ষাকর্মীরা। আচমকা সব বন্ধ হয়ে গেল। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে অধৈর্য ছাত্রছাত্রীরা। কর্মীরা জানালেন, তাঁদের কিছুই করার নেই। কারণ, ‘লিঙ্ক’ নেই।
সব ক’টি ঘটনাতেই অভিযোগ বিএসএনএলের পরিষেবা নিয়ে। বেহাল পরিষেবায় প্রতিদিন কয়েক হাজার গ্রাহক সমস্যায় পড়ছেন। অথচ, সমস্যার কথা জানাতে গেলে দুর্ব্যবহারের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ। রেহাই পেতে টেলিকম মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের সঙ্গে দেখা করে তিনি অভিযোগ করেছেন বলে জানান আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বংশোগোপাল চৌধুরী। আলাদা একটি অভিযোগ করেছেন দক্ষিণবঙ্গের ন’টি জেলার সমন্বয়ে গঠিত ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের কার্যকরি সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দিনের অধিকাংশ সময়েই ওই সংস্থার মোবাইল সংযোগের লাইন পাওয়া যায় না। কথা বলার সময়ে একাধিক বার ‘কল ড্রপ’ হচ্ছে। বেশির ভাগ সময়ে ল্যান্ড ফোনেও লাইন পাওয়া যাচ্ছে না। ইন্টারনেটেরও লিঙ্ক থাকে না বহু সময়। ফলে, কাজকর্মে খুব অসুবিধে হয়। রাজেন্দ্রপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘আমরা বিএসএনএলের এই বেহাল পরিষেবায় বিরক্ত। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যেরও ক্ষতি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও লাভ হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে মন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছি।’’ তিনি দাবি করেন, অনেকে অন্য সংস্থার সংযোগের দিকেও ঝুঁকেছেন। আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপালবাবু বলেন, ‘‘মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে শিল্পাঞ্চলে বিএসএনএলের এমন দশা নিয়ে বিশদ অভিযোগ করেছি।’’
আসানসোল জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক সৈকত বসু বলেন, ‘‘প্রায় সময়েই মোবাইল ফোন কাজ করে না। রোগীরা চেষ্টা করেও বহু বার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। রাতবিরেতে বিপাকে পড়ছেন অনেকে।’’ আসানসোলের কলেজের অধ্যক্ষ অমলেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে কলেজের স্বাভাবিক কাজকর্ম, সবেতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে। অভিয়োগ করলেও কেউ শোনার নেই।’’
পরিষেবায় সমস্যার কথা স্বীকার করেন বিএসএনএলের আসানসোল মণ্ডলের জেনারেল ম্যানেজার দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেন, জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য অনেক জায়গায় সংস্থার কেব্ল কাটা পড়ছে। তাই পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। তাঁর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘আমরা যথেষ্ট ভাল পরিষেবা দিচ্ছি। কিন্তু যে সমস্যা হচ্ছে সেটা স্বাভাবিক। কোনও সংস্থাই একশো শতাংশ পরিষেবা দিতে পারে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy