Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Lockdown

ছাত্রীদের হাতে চাল-আলু, নালিশ

বিভিন্ন স্কুল সরকারি নির্দেশিকা মেনে, স্কুলের বাইরে অভিভাবদের ‘স্যানিটাইজ়ার’ ব্যবহার করে হাত ধোয়ার পরে নির্দিষ্টে দূরত্বে দাঁড় করিয়ে প্যাকেট বিলি করেছে।

কাটোয়ার স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

কাটোয়ার স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ০৭:০৭
Share: Save:

মিড-ডে মিলের চাল-আলু দেওয়া শুরু হল বিভিন্ন স্কুল থেকে। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতিদিন এক-একটি ক্লাসের অভিভাবকদের ডেকে প্যাকেট তুলে দিতে হবে। পড়ুয়াদের স্কুলে আসা চলবে না, বলা হয়েছে নির্দেশে। কিন্তু কাটোয়া ও ভাতারের দু’টি মেয়েদের স্কুলে পড়ুয়াদের হাতেই মিড-ডে মিল দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকার এক ব্যক্তির শরীরে করোনার প্রমাণ মেলায় খণ্ডঘোষের বেশ কিছু স্কুলে সোমবার মিড-ডে মিল দেওয়া যায়নি। পূর্ব বর্ধমানের নানা স্কুল কর্তৃপক্ষের আবার অভিযোগ, সরকারের নির্দেশিকার চেয়ে বেশি দামে আলু কিনতে হয়েছে। চালের জোগানেও সমস্যা ছিল। যদিও তা মানতে নারাজ জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসনের মিড-ডে মিল প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে ৩,৮৫৬টি প্রাথমিক স্কুলে ৪,০৭,২৪০ জন পড়ুয়া রয়েছে। তিন কেজি করে হিসাবে প্রায় ১,২২২ টন করে চাল ও আলু লাগছে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত (আপার প্রাইমারি বা উচ্চ প্রাথমিক) ৮৫৩টি স্কুলে ১,৭১,৯৬৩ জন পড়ুয়া রয়েছে। তাদের জন্য প্রায় ৫১৬ টন করে চাল-আলু বরাদ্দ করা রয়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় প্রায় ১৭৪১ টন চাল-আলু বিলির দায়িত্ব পড়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের উপরে।

বিভিন্ন স্কুল সরকারি নির্দেশিকা মেনে, স্কুলের বাইরে অভিভাবদের ‘স্যানিটাইজ়ার’ ব্যবহার করে হাত ধোয়ার পরে নির্দিষ্টে দূরত্বে দাঁড় করিয়ে প্যাকেট বিলি করেছে। বেশিরভাগ স্কুলই এক-এক দফায় চার-পাঁচ জন করে অভিভাবককে ভিতরে নিয়ে গিয়ে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিয়েছে। কিছু স্কুল বারান্দায় চাল-আলুর প্যাকেট রেখে দেয়। অভিভাবকেরা একে একে এসে তা নিয়ে যান। তবে অনেক জায়গায় কিছু অভিভাবক ‘মাস্ক’ ছাড়াই স্কুলে এসেছিলেন বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, আতঙ্কিত না হয়ে জেনে নিন করোনা-পরীক্ষার বিষয়ে

কাটোয়া ও ভাতারের দু’টি স্কুলে পড়ুয়ারা এসেছিল বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। কাটোয়ার স্কুলটির প্রধান শিক্ষিকা টিউলিপ দাসের অবশ্য দাবি, ‘‘পড়ুয়ারা অভিভাবকদের সঙ্গেই স্কুলে এসেছিল। বিষয়টি নজরে আসার পরেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।’’ ভাতারের ব্লক দফতরের সামনেই মেয়েদের স্কুলে পড়ুয়ারা লাইনে ঠেসাঠেসি করে দাঁড়িয়ে মিড-ডে মিল নিয়েছে বলে অভিযোগ। ওই স্কুলের শিক্ষিকা আবেদা বেগমের অবশ্য দাবি, ‘‘ওই পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা অনেকেই ভিন্‌ রাজ্যে আটকে রয়েছেন। ওদের ফিরিয়ে দেব কী করে? মানবিক কারণেই পড়ুয়াদের হাতে মিড-ডে মিল দিতে হয়েছে।’’ স্কুল সূত্রের আরও দাবি, পড়ুয়ারা স্কুলে ঢোকার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুয়েছে। তাদের ‘মাস্ক’ও পরতে বাধ্য করা হয়েছে।

বিজেপির ‘টিচার্স সেল’-এর সভাপতি রাধাকান্ত রায়ের অভিযোগ, “বিভিন্ন জায়গায় চালের জোগানের সমস্যা হয়েছে। সরকারি নির্দেশিকার চেয়ে আলু বেশি দামে কিনতে হয়েছে। তা ছাড়া, অনেক স্কুল নভেম্বরের পরে মিড-ডে মিলের টাকাও পায়নি।’’ যদিও তৃণমূল প্রভাবিত প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি তপন পোড়েল পাল্টা দাবি করেন, ‘‘আলুর দামের সমস্যা মিটে গিয়েছে। শিক্ষকেরাও প্রশাসনের ‘পাস’ নিয়ে যাতায়াত করেছেন।’’

জেলার মিড-ডে মিল প্রকল্পের আধিকারিক মৌলি সান্যাল বলেন, “পড়ুয়াদের স্কুলে ঢোকার ব্যাপারে কড়া নির্দেশ ছিল। যে সব স্কুল তা মানেনি, তাদের শো-কজ করা হবে। মিড-ডে মিলের টাকা এক মাসের অগ্রিম (‌মে মাস পর্যন্ত) দেওয়া রয়েছে।’’


(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy