অণ্ডালে বিজেপির অবস্থান। নিজস্ব চিত্র
গণবণ্টন ব্যবস্থায় দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে সোমবার পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জ ও অণ্ডালে পথে নামল বিজেপি। দুই জায়গায় বিজেপির বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ আসে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউন বিধি না মেনে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগে অণ্ডালে ১২ ও রানিগঞ্জে ৪ জন বিজেপি কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
বিজিপির রানিগঞ্জ বিধানসভার ২ ব্লক সভাপতি তথা অণ্ডালের মদনপুরের বাসিন্দা জয়ন্ত মিশ্র জানান, অণ্ডাল ব্লকে আটটি পঞ্চায়েত আছে। ১ মে দ্বিতীয় দফায় রেশন দেওয়া শুরু হয়েছে। তাঁর দাবি, সব পঞ্চায়েত এলাকার রেশন দোকানগুলি থেকে নিম্নমানের ও বেশ কয়েকটি জায়গায় পরিমাণে কম চাল দেওয়ার অভিযোগ পান। এর প্রতিবাদে এবং তিন মাস বিদ্যুতের বিল মকুব, ব্লকের সমস্ত গ্রামে জীবাণুনাশক ছড়ানো ও যাঁদের রেশন কার্ড নেই, তাঁরা যাতে রেশন পান, তার ব্যবস্থার দাবিতে এ দিন ব্লক অফিসে দলের কর্মী-সমর্থকেরা স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলেন।
তাঁর অভিযোগ, ‘‘নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব মেনে দলের আমরা বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সেখানে জড়ো হয়েছিলাম। কিন্তু বিডিও-র সঙ্গে দেখা করার আগেই পুলিশ এসে প্রথমে ২৫ জনকে আটক করে। ঘণ্টাখানেক পরে ১৩ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’’ জয়ন্তবাবু-সহ বাকিদের আটকে রাখা হয় বলে জানিয়েছেন দলের আসানসোল জেলা সাধারণ সম্পাদক ছোটন চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, ‘‘আমরা পুলিশকে জানিয়েছিলাম, পাঁচ জন বিডিও-র সঙ্গে দেখা করব। বাকিদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ তা শোনেনি। আমাকেও আটক করা হয়। পরে অণ্ডাল থানায় স্মারকলিপি দিয়েছি।’’
নির্দিষ্ট সময়ের আগেই লাইনে থাকা উপভোক্তারা রেশন নিয়ে নিয়েছেন। তাই ফাঁকা দোকান। দুর্গাপুরের অঙ্গদপুরে। নিজস্ব চিত্র
একই দাবিতে রানিগঞ্জ ব্লক অফিসে রানিগঞ্জ গ্রামীণ ৪ নম্বর মণ্ডলের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া হয় এ দিন। মণ্ডল সভাপতি সন্দীপ গোপ জানান, বিডিওকে না পেয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্তার হাতে দাবিপত্র দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ পুলিশ এসে বিনা কারণে চার জনকে আটক করে নিয়ে যায় বলে দাবি তাঁর।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি ক্ষেত্রেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা-সহ অন্য বিধি না মানার জন্যই তাঁদের আটক করা হয়েছে।
এই দু’টি ঘটনা ছাড়া রেশন নিয়ে জেলায় আর কোনও গোলমালের খবর নেই বলে স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিন দুর্গাপুর ও আসানসোলের বিভিন্ন রেশন দোকানে ঘুরে দেখা গিয়েছে, তেমন ভিড় নেই। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গ্রাহকেরা রেশনের সামগ্রী নিচ্ছেন। ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য অধিকাংশ জায়গাতেই রয়েছেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। রেশন দোকানগুলিতে পাড়া ভাগ করে সামগ্রী বিলি করার ব্যবস্থা করা হয়েছে দুর্গাপুর। কোন দি,ন কাদের রেশন দেওয়া হবে পাড়াভিত্তিক সেই তালিকা রেশন দোকানে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এক সঙ্গে সারা মাসের এবং অতিরিক্ত পরিমাণ খাদ্যশস্য বিলির জন্য বাড়তি ব্যবস্থা নিয়েছেন অধিকাংশ রেশন ডিলার। তাঁরা জানিয়েছেন, বেশি পরিমাণে খাদ্যশস্য দিতে হচ্ছে। সে জন্য ওজন করতে সময় বেশি লাগছে। পরিমাণ বেশি হওয়ায় একার পক্ষে বিলি করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বাড়তি কর্মী রাখতে হয়েছে।
অঙ্গদপুরের রেশন ডিলার সৌমেন রঞ্জন যশ জানান, কোন পাড়ার গ্রাহকদের কবে রেশন দেওয়া হবে দোকানে সেই তালিকা টাঙানো আছে। পাশাপাশি এলাকাতেও সেই তালিকা বিলি করা হয়েছে। যাতে কোনও ভাবে অন্য পাড়ার গ্রাহক চলে এসে সমস্যা তৈরি করে না করেন। ওই রেশন দোকানে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ‘মাস্ক’ পরা ও নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আর্জি জানিয়ে দোকানের সামনে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। পিছনে একটি মন্দিরের কাছে পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, পোস্টারে সে কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। ওই রেশন ডিলার জানান, সারা বছর দোকানে দু’জন কর্মী থাকেন। এখন বাড়তি কাজ সামাল দিতে আরও তিন জন কর্মীকে রাখা হয়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy