এই চারাগুলিই রোপণ করা হবে জঙ্গলে। নিজস্ব চিত্র
জঙ্গলে এ বার ছ’-সাত ফুট লম্বা চারা গাছ রোপণ করা হবে। বর্ধমান বন বিভাগের দুর্গাপুরের আড়রা বিট অফিসের নার্সারিতে নাইলনের বড়-বড় টবে ৫০টি প্রজাতির এমনই হাজার দেড়েক চারা বড় করা হয়েছে। বেড়ে ওঠার পরে সেগুলি লাগানো হবে কাঁকসার জঙ্গলে। ধাপে-ধাপে সারা রাজ্যেই এমন লম্বা চারা তৈরি করে তা রোপণের পরিকল্পনা নেওয়া হবে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু লম্বা চারা রোপণের পরিকল্পনা কেন? বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গল লাগোয়া এলাকার গবাদি পশুরা অনেক সময়েই চারা রোপণের পরে তা খেয়ে নেয়। তা ছাড়া, সম্প্রতি নানা কারণে ঘন-ঘন জঙ্গলে আগুন লাগছে। সাধারণত জঙ্গলের ঝরা পাতায় আগুন লাগে। ফলে, আগুন বেশি উঁচুতে ওঠে না। তাই ছ’-সাত ফুট লম্বা চারা জঙ্গলে লাগালে এক দিকে যেমন তা গবাদি পশুর হাত থেকে বাঁচবে, তেমনই আগুন লাগলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমবে। তা ছাড়া একটি বর্ষা পেরিয়ে গেলেই গাছগুলি লম্বায় আরও কিছুটা বেড়ে উঠবে। সব মিলিয়ে ফের দ্রুত জঙ্গল ভরে উঠবে। তা ছাড়া নার্সারি থেকে রোপণের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তায় পরিবহণের সময় ছোট চারার তুলনায় বড় চারা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও কম।
আড়রা বিট অফিসে গিয়ে দেখা গিয়েছে, সারি-সারি নাইলনের টবে বসানো হয়েছে শাল, পিয়াল, মহুল, কুসুম, শ্বেতীশাল, মেহগিনি, হরিতকি, আমলকি, বহেরা-সহ মোট ৫০টি প্রজাতির গাছের চারা। ইতিমধ্যেই সেগুলি দু’ফুটের বেশি লম্বা হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, টবে প্রতিটি গাছের প্রয়োজনীয় সার, অণুখাদ্য দেওয়া হয়। বনকর্মীরা দু’বেলা পরিচর্যা করেন। গাছ দ্রুত বেড়ে ওঠার জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।
বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, কাঁকসার জঙ্গলে আগুন লেগে এ বার বহু গাছ পুড়ে গিয়েছে। হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির গাছ। সে কথা মাথায় রেখেই কাঁকসার জঙ্গলকে নতুন রূপ দিতে পরিকল্পনা নিয়েছে বন দফতর। মূলত হারিয়ে যাওয়া দেশীয় প্রজাতির নানা গাছ ফিরিয়ে আনতে পরীক্ষামূলক ভাবে এই উদ্যোগ। বিট আধিকারিক কিশলয় মুখোপাধ্যায় জানান, এখন নাইলনের টবেই গাছগুলি বেড়ে উঠবে। লম্বায় ছ’-সাত ফুট হওয়ার পরে চারা রোপণ করায় সহজেই গাছগুলি মাটির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারবে এবং দ্রুত নিজের রূপ ধারণ করবে।
বন দফতরের দক্ষিণ-পূর্ব চক্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্য বনপাল মানসরঞ্জন ভট্ট জানান, আড়রার নার্সারিকে নতুন পদ্ধতির চারা তৈরির ‘মডেল নার্সারি’ হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এ বছর দেড় হাজার চারা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। পরের বছর তা বাড়িয়ে ১০ হাজার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “ছোট চারার পরিবর্তে ছ’-সাত ফুট লম্বা চারা রোপণ করা হবে সব জঙ্গলেই। ধাপে-ধাপে সারা রাজ্যেই এই উদ্যোগ কার্যকরীকরা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy