Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

বৃদ্ধ কী ভাবে আক্রান্ত, ধন্দ

জেলায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত গণ্ডিবদ্ধ এলাকা ছিল ১৮টি। বুধবার আরও তিনটি বেড়ে হয়েছে ২১টি। সব ক’টি গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় পূর্ণ ‘লকডাউন’ করার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২০ ০০:৩৪
Share: Save:

করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা দু’শো ছোঁয়ার মুখে জেলায় প্রথম করোনা-আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মেমারির সত্তর বছরের ওই বৃদ্ধ কী ভাবে সংক্রমিত হলেন, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন জেলার স্বাস্থ্য-কর্তারা। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, ওই বৃদ্ধ বেশ কয়েকবছর বাড়ির বাইরে পা রাখেননি। ফলে, গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সেটাই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদেরও মাথাব্যথার কারণও।

জেলায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত গণ্ডিবদ্ধ এলাকা ছিল ১৮টি। বুধবার আরও তিনটি বেড়ে হয়েছে ২১টি। সব ক’টি গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় পূর্ণ ‘লকডাউন’ করার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে প্রশাসনের তরফে জেলা পুলিশকে চিঠি দিয়ে কী-কী করণীয় তার নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয়েছে, গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সঙ্গে সংলগ্ন এলাকাতেও পূর্ণ ‘লকডাউন’ করতে হবে। সেখানে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, বাজার, মার্কেট কমপ্লেক্স, ব্যবসায়িক কাজকর্ম, কল-কারখানা, সরকারি, বেসরকারি অফিসও বন্ধ থাকবে। কোনও যানবাহনও চলবে না। কাজের প্রয়োজন ছাড়া, গণ্ডিবদ্ধ এলাকা থেকে বাইরে বার হতেও পারবেন না কেউ। স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় জিনিস বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, “ওই সব নিয়ম ছাড়া, ‘মাস্ক’ ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব মানার ব্যাপারে কড়াকড়ি করতে বলা হয়েছে। দোকানগুলিকেও এ ব্যাপারে দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

মেমারির বাগিলা গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণপুরের ওই বৃদ্ধ কী ভাবে করোনায় আক্রান্ত হলেন, বুধবার রাত পর্যন্ত তার হদিশ করতে পারেনি জেলা স্বাস্থ্য দফতর। আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে গঠিত বিশেষ টাস্ক ফোর্সও ওই পরিবারের কেউ সাম্প্রতিক কালে মেমারির বাইরে গিয়েছিলেন বলে বুধবার রাত পর্যন্ত রিপোর্ট করেননি। স্থানীয় লোকজনের দাবি, গত কয়েকবছর ধরে চোখের সমস্যার কারণে ওই বৃদ্ধ বাইরে বার হতেন না। তাঁর ছেলে ছোটখাট কাজ করে সংসার চালান। তিনিও বাজার যাওয়া ছাড়া, বাইরে গিয়েছেন বলে কেউ জানাতে পারছেন না। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, “মৃত ব্যক্তি কী ভাবে করোনায় আক্রান্ত হলেন সেটা আমাদের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়।’’ এ দিন জেলায় ওই বৃদ্ধ ছাড়া, আরও এক জন করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন।

মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে খণ্ডঘোষে প্রথম করোনা-আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া যায়। তার এক মাসের মধ্যে একশোর গণ্ডি পার করে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। তারপর থেকে প্রতিদিন দু’-চার জন করে করোনা-আক্রান্তের সন্ধান মিলছে। প্রশাসনের একাংশের দাবি, পরিযায়ী শ্রমিকের আসা কমতেই করোনা-আক্রান্তের সংখ্যাও কমতে শুরু করেছে। কিন্তু ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর পরে স্বাস্থ্য দফতর আর নিশ্চিন্তে থাকতে পারছে না।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘এই মৃত্যু গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি করছে। মৃতের ছেলের করোনা-রিপোর্ট আসার পরে, আশঙ্কা কতটা সত্যি বোঝা যাবে।’’ তাঁর দাবি, “গোষ্ঠী সংক্রমণের জন্য আইসিএমআরের নির্দিষ্ট নির্দেশিকা মেনে ‘র‌্যান্ডম স্যাম্পল টেস্ট’ করা হলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে।’’ যদিও ওই পরীক্ষা করানোর ব্যাপারে এখনও কোনও নির্দেশিকা জেলায় আসেনি বলে সিএমওএইচ জানিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy