তপ্ত: কাটোয়ায় বেআইনি নির্মাণ নিয়ে গোলমালে জ্বলছে মোটরবাইক। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়
বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে অশান্তির ঘটনায় লাগল রাজনীতির রং। শনিবার সকালে কাটোয়ার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে ওই নির্মাণ ভাঙতে যাওয়ার পিছনে শাসকদলের রাজনীতি রয়েছে বলে দাবি বিজেপির। যদিও কাটোয়ার তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা তা উড়িয়ে দিয়েছে।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দলাল বসু রোডে গত জুলাইয়ে বাড়ির দোতলা তৈরি শুরু করেন গণেশবাবু। বাড়ির উল্টো দিকেই তাঁর মুদির দোকান রয়েছে। পুরপ্রধান জানান, ওই বাড়ির দোতলার ঝুলন্ত বারান্দাটি বেআইনি ভাবে নির্মাণ হয়েছে, এলাকা থেকে এই অভিযোগ পেয়ে খতিয়ে দেখার পরে নভেম্বরে গণেশবাবুকে সতর্ক করা হয়। তার পরে কয়েক বার পুরসভায় এ নিয়ে শুনানি হয়। জানুয়ারিতে কাউন্সিলরদের বৈঠকে ওই নির্মাণ ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়।
পুরসভা জানায়, ৯ মার্চ গণেশবাবুকে নোটিস দেওয়া হয়, সপ্তাহখানেকের মধ্যে বেআইনি অংশ ভেঙে ফেলতে হবে। কিন্তু তিনি না তা মানায় শুক্রবার নোটিস দিয়ে জানানো হয়, পুরসভা নির্মাণ ভাঙবে। এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ পুরসভার সহকারী ইঞ্জিনিয়ার অনুময় প্রামাণিক মিস্ত্রিদের নিয়ে ওই নির্মাণ ভাঙতে যান। তদারকিতে ছিলেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ভাস্কর মণ্ডল। গণেশবাবু নিজের মুদির দোকান থেকে বেরিয়ে আপত্তি জানাতে থাকেন। পুলিশ তাঁকে সরিয়ে দিলে তিনি দোতলার ছাদে উঠে ঝাঁপ দেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। এর পরেই পুরকর্মীদের উপরে হামলা, মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা।
দুপুরে কাটোয়া হাসপাতালে গণেশবাবুর চিকিৎসা চলার সময়ে জনা পঞ্চাশ কর্মীকে নিয়ে হাজির হন বিজেপি-র জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ। গণেশবাবুর ছেলে, আরএসএসের কর্মী পূর্ণেন্দুবাবুর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন তিনি। বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ গণেশবাবুর মৃত্যুর পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিজেপি কর্মীরা। তবে পুলিশ মোতায়েন থাকায় গোলমাল বাধেনি।
কৃষ্ণবাবু অভিযোগ করেন, আজ, রবিবার কাটোয়ায় তাঁদের রামনবমীর মিছিল আটকাতেই তৃণমূলের পুরসভা এই গোলমাল পাকিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘পুরসভায় অবৈধ নির্মাণ তো কম হচ্ছে না। কিন্তু ব্যবস্থা হচ্ছে রাজনৈতিক রং দেখে।’’ গণেশবাবুর মেয়ে গৌরী দত্তের অভিযোগ, ‘‘রাজনীতি করে বাবাকে শেষ করে দিল।’’
পূর্ণেন্দুবাবুর আবার অভিযোগ, ‘‘এক বছর ধরে বাড়ি তৈরি হলেও দোতলার ছাদ ঢালাইয়ের পরে নোটিস দিল পুরসভা। আমি আইনি ভাবে এগিয়েছিলাম। বাড়ি ভাঙার সময়ে তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হলাম।’’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, এ দিন নির্মাণ ভাঙার তদারকিতে আসা ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ভাস্কর মণ্ডল তাঁর কাছে টাকাও চেয়েছিলেন।
ভাস্করবাবু অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা সম্পূর্ণ প্রশাসনিক বিষয়। বারবার নোটিস দেওয়ার পরেও নিজে নির্মাণ না ভাঙলে পুরসভা তা ভেঙে দেবে, এটাই নিয়ম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy