Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

মন্ত্রীর কাছে নতুন সেতুর দাবি গ্রামের

কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত, কলেজ, স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসার জন্য ২৫টি গ্রামের ভরসা কালনার কেলনই গ্রামের এই পুরনো সেতুটি। কিন্তু কোথাও সেতুর বিমে ফাটল, কোথাও বা গার্ড ওয়াল ভেঙে গিয়েছে।

কেলনই গ্রামে বেহাল সেতু পরিদর্শনে মন্ত্রী-সহ প্রশাসনের আধিকারিকেরা। নিজস্ব চিত্র।

কেলনই গ্রামে বেহাল সেতু পরিদর্শনে মন্ত্রী-সহ প্রশাসনের আধিকারিকেরা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৪৪
Share: Save:

কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত, কলেজ, স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসার জন্য ২৫টি গ্রামের ভরসা কালনার কেলনই গ্রামের এই পুরনো সেতুটি। কিন্তু কোথাও সেতুর বিমে ফাটল, কোথাও বা গার্ড ওয়াল ভেঙে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এক বছর আগে সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বুধবার ওই এলাকায় গেলে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ-সহ প্রশাসনের কর্তাদের কাছে বাসিন্দারা সেতুটি নতুন ভাবে তৈরির দাবি জানান।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৬০ বছর আগে বেহুলা নদীর থেকে প্রায় ৪০ ফুট উপরে একশো ফুট লম্বা সেতুটি তৈরি করা হয়। এই সেতুটি দিয়েই কালনা শহর ও লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা কলকাতা, হুগলির পাণ্ডুয়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতেন। খেত থেকে ফসল তুলে কুলটি, একচাকা, রাহাতপুর, মহেশ্বরপুর, দফরপুর, ছোটপাতা, বড়পোতা-সহ ২৫টি গ্রামের চাষিরা পাইকারি বাজারে যেতেন। এ ছাড়াও স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্কুল, কলেজ-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য দিনভর এই সেতুর উপরে চলত ভ্যান, ট্রেকার-সহ ছোটবড় বিভিন্ন গাড়ি।

বাসিন্দাদের দাবি, বছর তিনেক আগে থেকে সমস্যা শুরু হয়। সেতুর পাঁচটি বিমের একটি বিম নষ্ট হয়ে যায়। অন্যান্য বিমগুলিতেও দেখা গিয়েছে চওড়া ফাটল। এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, সেতুর বিমগুলি মাটিতে বসে যেতে শুরু করেছে। সেতুর গার্ড ওয়ালটিও ভেঙে পড়েছে। বড়সড়ো বিপদের আশঙ্কায় গত বছর থেকে সেতুটির উপরে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।

সেতুটি নতুন ভাবে তৈরি করার জন্য জেলা প্রশাসন চিঠি পাঠায় সেচ দফতরকে। সেচ দফতরের কর্মীরা এলাকায় এসে মাপজোকও করে যান। মাস ছয়েক আগে সেতুর পাশ দিয়ে কংক্রিটের পাইপ দিয়ে একটি অস্থায়ী রাস্তাও তৈরি করে জেলা পরিষদ। তবে গত বর্ষায় তা ভেঙে গিয়েছে। এলাকার বাসিন্দা নবকুমার বাগ বলেন, ‘‘রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় মাঠে ফসল কেটে সেখানেই ঝাড়াই করতে হচ্ছে। তারপরে ফসল নিয়ে সাত কিলোমিটার দূরে কুশোডাঙা মোড় অথবা ১০ কিলোমিটার দূরের দফরপুর দিয়ে ঘুরপথে বাড়ি ফিরছি।’’ সর্বমঙ্গলা গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত দাস, নিতাই ঘোষেরা জানান, রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ার পরে অনেকেই ফের বিপজ্জনক সেতুটি ব্যবহার করছেন। বাসিন্দাদের দাবি, হাঁটাহাঁটি করলেও সেতুটি কাঁপছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, তৈরির পরে থেকে সেতুটির তেমন সংস্কার হয়নি।

গত বুধবার কেলনই গ্রামের থেকে খানিক দূরে রাহাতপুর গ্রামে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন মন্ত্রী স্বপনবাবু, বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, বিডিও-সহ প্রশাসনিক কর্তারা। বাসিন্দারা তাঁদের কাছে সেতুটি পরিদর্শনের আবেদন জানালে মন্ত্রী-সহ প্রশাসনের কর্তারা কেলনই গ্রামে যান। ওই এলাকায় দাঁড়িয়েই মন্ত্রী জেলাশাসক ও কালনার মহকুমাশাসককে ফোন করে অস্থায়ী রাস্তা তৈরির আবেদন জানান। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও বিডিও-কে অস্থায়ী রাস্তা তৈরির বিষয়ে পরিকল্পনা তৈরি করতে বলেন। মন্ত্রী স্বপনবাবুর আশ্বাস, ‘‘এক সপ্তাহের মধ্যে অস্থায়ী রাস্তাটি তৈরির চেষ্টা করা হবে। সেচ দফতরও যাতে সেতুটি দ্রুত নতুন করে তৈরি করে, তাও দেখা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

New Bridge Kalna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE