Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Vendors

‘আপন ট্রেনই পর’, বর্ষশেষে আক্ষেপ হকারদের

হকারদের দাবি, ফের ট্রেনে ওঠার, স্টেশনে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হোক তাঁদের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:৩১
Share: Save:

ট্রেনের কামরা আমলকি, জোয়ান-সহ নানা কিছু নিয়ে অণ্ডাল থেকে কুমারডুবি স্টেশন পর্যন্ত ফেরি করতেন কুমারডুবির বদ্রি প্রসাদ। আসানসোল স্টেশনে ছড়া কাটতে কাটতে গরম চা ফেরি করতেন বিনোদ ভুঁইয়া। কোভিড পরিস্থিতিতে ন’মাস আগে দু’জনেরই কাজ গিয়েছে। এই মুহূর্তে প্রথম জন, দিনমজুর। অন্য জন, আসানসোলের আনাজ বাজারে ঝাঁকামুটের কাজ করেন।

ট্রেনের হকারদের এমন এক-দু’টো ছবি আসলে আসানসোল ডিভিশনের অন্তত চার হাজার হকারের জীবনের প্রতিচ্ছবি, দাবি করেছেন ‘হকার্স সমন্বয় সমিতি’র সম্পাদক গোপাল লাল। তিনি বলেন, ‘‘ট্রেন চালু হলেই আমাদের সুদিন ফিরবে ভেবেছিলাম। কিন্তু সে আশা আর নেই।’’ আসানসোল স্টেশনের হকার বিনোদবাবু জানান, ন’মাস আগেও তাঁর দিনে প্রায় পাঁচশো টাকা রোজগার হত। তাঁর কথায়, ‘‘এখন যা অবস্থা সংসার চালানোটাই মুশকিল হয়ে গিয়েছে।’’

পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশন সূত্রে জানা যায়, গত ২ ডিসেম্বর থেকে এখানে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। প্রায় ৪১টি ট্রেন চলছে এই ডিভিশনে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যাত্রী সংখ্যাও বেড়েছে অনেকটাই। কিন্তু করোনা-পরিস্থিতিতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ রাখতে ডিভিশনের স্টেশনে, ট্রেন কড়া নজরদারি চালাচ্ছে আরপিএফ ও জিআরপি।

এই পরিস্থিতিতে হকারদের দাবি, ফের ট্রেনে ওঠার, স্টেশনে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হোক তাঁদের। হকার্স সমন্বয় সমিতি সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে ডিআরএম-এর (আসানসোল) দফতরে আর্জিও জানিয়েছে। গোপালবাবুর দাবি, ‘‘নতুন বছর থেকে ফের ব্যবসা শুরু করার অনুমতি দিক। না হলে, আর টেকা সম্ভব নয়।’’ প্রায় ২৫ বছর ধরে কোলফিল্ড এক্সপ্রেস ট্রেনে খেলনা-সহ নানা জিনিসপত্র ফেরি করছেন বাপি দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘ট্রেন চালুর খবরে আশা ছিল, ফের ফেরি করব। কিন্তু আপন ট্রেনই এখন পর। জানি না, নতুন বছরে কী হবে!’’

যদিও ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক গৌতম সরকার বলেন, ‘‘স্টেশন ও ট্রেনের কামরায় হকারদের এখনই ফেরি করার অনুমতি নেই। রেলের অনুমতি প্রাপ্ত স্টেশনের স্টলগুলি থেকে যাত্রীরা প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে পারবেন।’’ কেন অনুমতি নেই, সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন গৌতমবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘দেশে করোনা পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। তাই স্টেশন ও ট্রেনের কামরায় ভিড় যতটা সম্ভব কম থাকা দরকার। যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থেই এটা করা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Vendors Indian Railways distress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE