ইসরো-র ক্যাম্পাসে ইউসরা আলম (চিহ্নিত)। —ফাইল চিত্র।
চন্দ্রযান-২-এর চাঁদের মাটি ছোঁয়ার সাক্ষী হওয়া হয়নি। তা বলে মুষড়ে পড়েনি ইউসরা। বর্ধমানের পীরবাহারামের কিশোরী ইউসরা আলম ‘ইসরো’র ‘স্পেস কুইজ়’-এ জিতে এ রাজ্যের অন্যতম প্রতিনিধি হিসেবে শুক্রবার হাজির ছিল বেঙ্গালুরুতে, ‘ইসরো’-র সদর দফতরে। সেখানে সমবয়সী অনেকের সঙ্গে আলাপ হয়েছে তার। বন্ধু হয়ে গিয়েছে দেশের অন্য প্রান্ত থেকে আসা পড়ুয়ারা। দেখা হয়েছে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। সব মিলিয়ে ভরেছে অভিজ্ঞতার ঝুলি। তাতেই খুশি সে।
শনিবার সকালে ফোনে কথা বলার সময়ে ইউসরা জানাল, শুক্রবার রাত ৯টায় বাসে ওঠার সময়েও বিশ্বাস হচ্ছিল না সে চন্দ্রযানের যাত্রার সাক্ষী হতে যাচ্ছে। দু’ঘণ্টার বাসযাত্রা অবশ্য কাটে নিমেষেই। হাসি-গল্প শেষে শুক্রবার রাত ১১টায় ইসরোর সদর দফতরে পা রাখে সে।
দফায় দফায় নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে পৌঁছয় ‘ইসরো’-র ‘কন্ট্রোল রুম’। পরের গন্তব্য, নির্ধারিত ‘অডিটোরিয়াম’। দু’ধারের দেওয়াল-জোড়া প্রজেক্টরে ভেসে উঠছে চন্দ্রযানের নানা খুঁটিনাটি, ছবি। নির্দিষ্ট জায়গায় বসার পরেও দেখা শেষ হচ্ছিল না ইউসরার। ছোটবেলা থেকে যে মহাকাশ অভিযান পড়ে বড় হয়েছে সে, তার সাফল্যের মুহূর্ত দেখার সুযোগ এ ভাবে মিলবে ভাবেনি নবম শ্রেণির ওই ছাত্রী। ইউসরার কথায়, ‘‘পরের তিন ঘণ্টা বোঝার আগেই কেটে যায়।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সামনাসামনি দেখা হয় তাদের। প্রথম দফায় দূর থেকে হাত নেড়ে পড়ুয়াদের শুভেচ্ছা জানান তিনি। তার পরে চলে যান অডিটোরিয়ামের দোতলায় নির্দিষ্ট অংশে। উৎকণ্ঠা, চিন্তার মাঝে আচমকা জানানো হয়, যোগাযোগ করা যাচ্ছে না চন্দ্রযান-২-এর ‘ল্যান্ডার’ বিক্রমের সঙ্গে। ঘড়িতে তখন রাত ১টা ৫৫ মিনিট।
ইউসরা বলে, “মনে হচ্ছিল একটা গোলমাল হয়েছে। সবাই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিলেন। কারও মুখেই হাসি ছিল না। কিছুক্ষণের মধ্যে পরপর ঘোষণা হতে থাকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। খুবই খারাপ লাগছিল।’’ আরও বেশ কিছুক্ষণ পরে প্রধানমন্ত্রী বেরিয়ে যান ‘ইসরো সেন্টার’ থেকে। যাওয়ার আগে ইউসরাদের বলে যান, ‘‘আপাতত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। দেখা যাক, কী হয়!’’ তাঁর সঙ্গে দল বেঁধে ছবি তোলে ইউসরারা। তার পরেই তাদেরও ফিরিয়ে আনা হয় গেস্টহাউসে।
শনিবার গোটা দিনটাই বেঙ্গালুরুতে থাকার কথা ইউসরাদের। সে জানাল, সকালে একটি ‘ইন্টার-অ্যাকশন সেশন’ রয়েছে। রবিবার কলকাতায় ফেরার বিমান। মেয়ের সঙ্গে রয়েছেন বাবা বর্ধমানের একটি সাবান কারখানার মালিক হাসিব আলমও। তিনি জানান, মেয়ে শুক্রবার সকালে বেঙ্গালুরু পৌঁছনো থেকেই খুব উত্তেজিত। ‘কন্ট্রোল রুম’-এর ভিতর থেকে ঘুরে আসার পরে মহাকাশ বিজ্ঞানী হওয়ার ইচ্ছেটা আরও বেড়েছে ইউসরার।
‘ইসরো’-র বিজ্ঞানীরা যতটা সাফল্য আশা করেছিলেন, তা হয়নি। ‘ব্যর্থতা’, কারও কারও ভেঙে পড়া দেখে মহাকাশ বিজ্ঞানী হওয়ার ইচ্ছেটা একই রইল তো? ইউসরার জবাব, “সাফল্যের পথ তো
ব্যর্থতা ছুঁয়েই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy