জখম মহিলা। নিজস্ব চিত্র
বালিঘাটের দখলদারি নিয়ে ধুন্ধুমার বাধল পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের বকুলিয়া গ্রামে। দু’দল দুষ্কৃতীর মধ্যে প্রথমে হাতাহাতি ও ইট পাটকেল ছোডাছুড়ি, পরে বোমাবাজি ও নির্বিচারে গুলি চলে বলে অভিযোগ। দুই মহিলা-সহ পাঁচ জনের গায়ে গুলি লাগে। সোমবার দুপুরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোরও। এলাকাবাসীর একাংশ ও বিজেপির দাবি, বালিঘাটের দখলদারি নিয়ে তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ও দলের মঙ্গলকোট ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। তা অস্বীকার করে তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, এলাকার দখল নিতেই বহিরাগত দুষ্কৃতী এনে গ্রামে হামলা চালিয়েছে বিজেপি। বিজেপি আবার এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার বালিঘাটের দখল কাদের হাতে থাকবে, দিন তিনেক আগে বকুলিয়া গ্রামের মেটেপাড়ায় তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা ও হাতাহাতি হয়। ফলে, গ্রামে উত্তেজনা ছিল। এ দিন দুপুরে পুরানো বিবাদ থেকেই ফের বচসা ও মারপিট শুরু হয়ে যায়। প্রথমে লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষ বাধলেও খানিক পরেই বোমাবাজি ও গুলি চালানো শুরু হয় বলে অভিযোগ। গোলমালের মাঝে পড়ে জখম হন কালু ধীবর, পিন্টু সর্দার, অসিত মাঝি, দোলা মাঝি ও পুরু ধীবর নামে পাঁচ জন। পিন্টুর কপালে ও পুরুদেবীর পেটে গুলি লেগেছে বলে জানা গিয়েছে। পাঁচ জনকে প্রথমে নতুনহাট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। পরে কালু ছাড়া, চার জনকেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গলকোটের বিজেপি নেতা রানাপ্রতাপ গোস্বামীর অভিযোগ, ‘‘বালিঘাটের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই বিধায়ক ও তৃণমূলের ব্লক সভাপতির লোকজনের মধ্যে গোলমাল চলছিল। দিন তিনেক আগে মারামারিও হয়। এ দিন তারাই বোমা-গুলি নিয়ে নিজেদের মধ্যে লড়াই করে এলাকা সন্ত্রস্ত করে তুলেছে। এর সঙ্গে আমাদের দলের কোন সম্পর্ক নেই।’’
মঙ্গলকোটের বিধায়ক তথা রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী অবশ্য বলেন, ‘‘আমি কলকাতায় আছি। ঘটনা সম্পর্কে বিশদ কিছু জানি না। তবে প্রাথমিক ভাবে শুনেছি, বিজেপি হামলা চালিয়েছে। আমার সঙ্গে ব্লক সভাপতির দ্বন্দ্ব লাগানোর চক্রান্ত করে বিজেপির কোনও লাভ হবে না।’’ তৃণমূলের মঙ্গলকোট ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী দাবি করেন, ‘‘আমরা বালিঘাটের টাকা নিয়ে রাজনীতি করি না। বিজেপি পরিকল্পিত ভাবে ওই গ্রামে আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা চালিয়েছে। ওদের ছোড়া গুলিতে আমদের দুই মহিলা-সহ পাঁচ কর্মী জখম হয়েছেন।’’
পুলিশ জানায়, ঘটনার খবর পেয়েই এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশের ধরপাকড়ের ভয়ে বিকেল থেকে গ্রাম কার্যত পুরুষশূন্য হয়ে গিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy