শোকস্তব্ধ পরিবার। শনিবার রানিসায়ের গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
পুকুর থেকে উদ্ধার হল ভাইবোনের দেহ। শনিবার দুপুরে রানিগঞ্জের রানিসায়ের গ্রামে দুই খুদের দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা এলাকা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পাঁচেকের শচীন কর্মকার ও আড়াই বছরের পুষ্পা কর্মকারের বাড়ি জামুড়িয়ার নন্ডি গ্রামে। তাদের বাবা কার্তিক কর্মকার পেশায় দিনমজুর। তাঁর স্ত্রী ললিতাদেবী বৃহস্পতিবার ছেলেমেয়েকে নিয়ে রানিসায়ের গ্রামে তাঁর দিদি সাবিত্রীদেবীর বাড়িতে এসেছিলেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, এ দিন দুপুরে মাসির বাড়ির সামনের রাস্তায় দুই খুদে একটি পরিত্যক্ত টায়ার নিয়ে খেলছিল। দুপুর ১টা নাগাদ তাদের দেখতে না পেয়ে ললিতাদেবী খোঁজ শুরু করেন। কিছুটা দূরে পুকুরে পাড়ের কাছে জলে মেয়ের দেহ ভাসতে দেখেন তিনি। তাঁর চিৎকার-চেঁচামেচিতে প্রতিবেশীরা জড়ো হয়ে যান। তাঁরা ওই পুকুর থেকেই ছেলেটির দেহ উদ্ধার করেন।
ঘটনার পরে ললিতাদেবী কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না সাবিত্রীদেবী। কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর দিদি সাবিত্রীদেবী। তিনি জানান, তিনি অসুস্থ হওয়ায় ছেলেমেয়েকে নিয়ে তাঁকে দেখতে এসেছিলেন বোন। এমন ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা কেউই। সাবিত্রীদেবীর স্বামী দীপকবাবু বলেন, “এর আগে ললিতার দুই মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। আবার ছেলেমেয়েকে হারানোর পরে তাকে সামলানো যাচ্ছে না। একেবারে ভেঙে পড়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে রানিসায়ের থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে মণ্ডলপুরে বাড়ির অদূরে পুকুরে ডুবে মৃত্যু হয় চার খুদের। আবার সেই রকম ঘটনা ঘটায় উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী। স্থানীয় কাউন্সিলর নারায়ণ বাউড়ি বলেন, ‘‘সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। জলাশয়ের কাছে যাতে খুদেরা যেতে না পারে সে নিয়ে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।’’ প্রশাসনের তরফে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা প্রয়োজন বলে দাবি এলাকাবাসীর অনেকের।
আসানসোল জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন পুলিশ দেহ দু’টি হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসক মৃত ঘোষণার পরে পরিবারের লোকজন ময়না-তদন্ত না করিয়েই দেহ নিয়ে ফিরে গিয়েছেন। আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার ডিপি সিংহ জানান, কী ঘটেছে তা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy