ধস: এখানেই ছিল বাড়ি। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ
যে এলাকায় শুক্রবার রাতে মহিলার পাতাল-প্রবেশ, দু’টি বাড়ি ও একটি হোটেল ভূগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে, তার অদূরেই রয়েছে ১৩টি ‘পরিত্যক্ত’ খনিকর্মী আবাসন। সেগুলিও ধসের জেরে অল্পবিস্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অণ্ডালের জামবাদের বাসিন্দাদের একাংশ জানান। পাশাপাশি, ওই এলাকায় পুনর্বাসনের দাবিও উঠেছে। যদিও ইসিএল-কর্তাদের একাংশের দাবি, বিপদ জানানো সত্ত্বেও ভিটে ছাড়েননি এলাকাবাসী।
শুক্রবার রাতের ধসের পরে, আবাসনের বাসিন্দারা আত্মীয়দের বাড়িতে উঠেছেন। সেখানের বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর রাজকুমার সিংহ, গৌতম সিংহেরা বলেন, ‘‘খুবই আতঙ্কে রয়েছি। তাই আর ওখানে থাকতে সাহস হচ্ছে না।’’ ইসিএল-এর সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়ের দাবি, ‘‘বছর চারেক আগে ওই কর্মী আবাসনগুলি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। সংস্থার কর্মীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কিছু বহিরাগত আবাসন, এলাকা দখল করে রয়েছেন। আবাসনগুলি যে নিরাপদ নয়, তা নিয়ে আমরা একাধিক বার এলাকাবাসীকে সচেতন করা হয়েছে।”
তবে, এ দিন যাঁরা বাড়ি, হোটেল হারিয়েছেন, সেই মিরাজ শেখ, স্বপন ঘোষ, ইন্দর রজকেরা বলেন, ‘‘কোথায় যাব ভিটে-মাটি ছেড়ে? সরকার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুক আগে।’’ পুনর্বাসন চেয়ে ওই এলাকায় বিক্ষোভও দেখানো হয়। জামবাদের ওই আবাসনগুলির চত্বরে গিয়ে দেখা গিয়েছে, অসংখ্য ফাটল তৈরি হয়েছে। পাশেই বেশ কিছুটা ফাঁকা জায়গা বসে গিয়েছে। একটি কুয়ো ধসে গিয়েছে।
পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে জেলায়। বহু দিন আগে ধসপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত জামুড়িয়ার কেন্দা ও অণ্ডালের হরিশপুর গ্রাম। ‘কেন্দা গ্রামরক্ষা কমিটি’র সভাপতি সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘হরিশপুর গ্রাম কমিটি’র সদস্য তপন পালদের অভিযোগ, ‘‘দু’দশক আগে সচিত্র পরিচয়পত্র পান বাসিন্দারা। কিন্তু পুনর্বাসন মেলেনি। ফলে, বাসিন্দারা বাধ্য হয়েই বাড়ি তৈরি করেন এখানে।’’
পাশাপাশি, সংস্থার জমি ‘দখল’ করে বাড়ি তৈরির প্রবণতাও রয়েছে বলে ইসিএল-কর্তাদের দাবি। কিন্তু, তাতে নিয়মনীতি বা ছাড়পত্রের ‘দরকার’ পড়ে না বলে বাড়িগুলির নির্মাণ কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশের মধ্যে।
পুনর্বাসনের জন্য আবাসন তৈরি করতে জমি খোঁজার দায়িত্বপ্রাপ্ত আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘২৯ হাজার আবাসন তৈরি হবে। বারাবনির দাসকেয়ারি, জামুড়িয়ার বিজয়নগর, অণ্ডাল বিমানবন্দর এলাকায় ১২ হাজার আবাসন তৈরির কাজ শেষের মুখে। বাকি আবাসনগুলি তৈরির জন্য জায়গার খোঁজ চলছে। ভূগর্ভে কয়লা নেই, এমন জমি পেতে অসুবিধা হচ্ছে।’’ পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, ১৩টি পরিত্যক্ত আবাসনের বসবাসকারী-সহ এলাকার ৪২টি পরিবারের জন্য পুনর্বাসন চেয়ে দাবিতে এক সময়ে জেলাশাসকের কাছে আর্জি জানানো হয়। সে কাজ যাতে দ্রুত করার জন্য তদ্বির করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy