প্রতীকী চিত্র
জেলা তৃণমূলের সংগঠনে রদবদলের ঘোষণা করলেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। দলের জেলা চেয়ারম্যান পদে আনা হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটককে। রদবদল সামনে আসতেই তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশ মনে করছেন, ভারসাম্য আনার চেষ্টা করা হল। যদিও দলের জেলা-নেতারা সে ‘তত্ত্ব’ মানেননি।
বৃহস্পতিবার জানা যায়, তৃণমূলের জেলা ‘কো-অর্ডিনেটর’ হয়েছেন দুর্গাপুরের বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ও কেকেএসসি নেতা হরেরাম সিংহ। পাশাপাশি, দলের জেলা পর্যবেক্ষক হিসেবে কাউকে রাখা হয়নি। রাজ্যের সম্পাদকদের মধ্যে আনা হয়েছে দলের সদ্য প্রাক্তন জেলা ‘কো-অর্ডিনেটর’ ভি শিবদাসনকে।
কিন্তু জেলা তৃণমূলের অন্দরে কেন ‘সাংগঠনিক ভারসাম্য’ নিয়ে চর্চা হচ্ছে? এলাকার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, প্রথমত, বিধানসভা ভোটের আগে দলে ‘গোষ্ঠীকোন্দল’ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কারণ, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগেই দেখা যায়, কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে মলয়বাবু, শিবদাসন এবং দলের বর্তমান জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারির মধ্যে ‘মতপার্থক্য’ দেখা দিচ্ছে। যেমন, লোকসভা ভোটের আগে আসানসোল পুরসভার কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন মন্ত্রী। কিন্তু দেখা যায়, বেশির ভাগ কাউন্সিলরই সেখানে অনুপস্থিত। পাশাপাশি, লোকসভা ভোটের প্রচারপর্বেও দলের একাধিক কর্মসূচিতে ওই তিন নেতাকে এক সঙ্গে কার্যত দেখা যায়নি বলেই জানান তৃণমূলের স্থানীয় নেতা, কর্মীদের একাংশ। দলের জেলা নেতৃত্বের অন্দরে কতটা সমন্বয় আছে, সে সময়ে এ প্রশ্নও ওঠে। সেই সঙ্গে, নিচুতলাতেও ‘সমন্বয়’ দেখা যায়নি বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। যদিও প্রকাশ্যে কোনও নেতাই কোন্দলের কথা স্বীকার করেননি। কেউ পরস্পরের বিরুদ্ধে মুখও খোলেননি।
তবে সংগঠনের এই পরিস্থিতির প্রভাব দেখা যায় লোকসভা ভোটের ফলে। তৃণমূলের বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় নেতা, কর্মীদের একাংশের মতে, দলের অন্দরে ‘কোন্দল’ না থাকলে বিজেপি আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে বিপুল ভোট পেয়ে জিতত না। তৃণমূল নেতা, কর্মীদের একাংশ বলছেন, এই রদবদলকে ‘ভারসাম্য’ মনে করার আরও একটি কারণ, বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ও হরেরাম সিংহ। আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি বিশ্বনাথবাবুকে কেন্দ্র করে দুর্গাপুরে একাধিক বার দল ও গণ-সংগঠনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু এই দুই নেতাকেই কো-অর্ডিনেটর করে আসলে দলের শ্রমিক সংগঠনকেও বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হল বলে মনে করা হচ্ছে। রদবদল নিয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য রাত পর্যন্ত একাধিক বার ফোন করা হলেও যোগাযোগ করা যায়নি মলয়বাবুর সঙ্গে। জবাব আসেনি মেসেজের। তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্রবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন এখন আমাদের মূল লক্ষ্য। প্রত্যেকের মধ্যে সমন্বয় রাখতে হবে। কোথাও কোনও দ্বন্দ্ব নেই।’’
এ দিকে, যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি করা হয়েছে প্রায় ৪৫ বছর ছুঁইছুঁই রূপেশ যাদবকে। কিন্তু সংগঠনের সদস্যদের একাংশের দাবি, ২০১১-য় তিনি শেষ বার জেলার যুব কমিটিতে ছিলেন। বয়স এবং দীর্ঘদিন সংগঠনের সঙ্গে ‘যোগাযোগ না থাকা’র কারণে নতুন দায়িত্ব তিনি কতটা সামলাতে পারবেন, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে সংগঠনের অন্দরে। তবে রূপেশবাবু বলেন, ‘‘আমি যুবদের মধ্যেই আছি। প্রত্যেকের সঙ্গে মানিয়ে চলতে সমস্যা হবে না। ৪৫ বছর বয়সেও যুব সংগঠন করা যায়। সেটা বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy