—প্রতীকী চিত্র।
চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে বর্ধমান শহরের তৃণমূল নেতা তথা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি সীতারাম মুখোপাধ্যায়কে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানায়, সীতারামের বাড়ি শহরের খাজা আনোয়ার শা রোডে। বুধবার রাতে বাড়ির কাছে প্রান্তিক বাজার থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার আদালত তাঁকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে। আর্থিক প্রতারণার মামলায় ধৃতকে কেন পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হল না, তা নিয়ে আইনজীবীরা প্রশ্ন তুলেছেন।
বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত সীতারামবাবুর নাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষাবন্ধু সমিতির সভাপতি থাকার সময়ে নানা ঘটনায় জড়িয়েছিল। বিরোধী ছাত্র আন্দোলন তুলতে লাঠিপেটা করায় বড় ভূমিকা নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতারও হন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধী কর্মচারী সংগঠনের কর্মীদের মারধরের অভিযোগ, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মীদের মধ্যে মারপিটেও নাম জড়িয়েছিল তাঁর। সংগঠনের প্রভাব খাটিয়ে নিজের পদোন্নতি, পরিজনদেরও চাকরির ব্যবস্থা করার অভিযোগও ওঠে।
পুলিশ জানায়, বীরভূমের রামপুরহাটের নারায়ণপুরের রিঙ্কু দাস নামে এক যুবক অভিযোগ করেছেন, তাঁকে মৎস্য দফতরে চাকরি দেওয়ার নাম করে সীতারামবাবু ১২ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন। ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর তিনি অগ্রিম পাঁচ লক্ষ টাকা দেন। এর দু’মাস পরে হঠাৎ এক দিন তাঁর ঠিকানায় একটি নিয়োগপত্র আসে। তিনি সেটি পরিচিত কয়েকজনকে দেখালে তাঁরা সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাঁদের পরামর্শে মৎস্য দফতরে খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন, নিয়োগপত্রটি জাল। এর পরে সীতারামবাবুর বাড়ি গেলে তাঁকে জানানো হয়, কোনও কারণে ভুল হয়েছে। ফের নিয়োগপত্র যাবে।
রিঙ্কুর অভিযোগ, পাঁচ-ছ’মাস পরেও নিয়োগপত্র না আসায় তিনি সীতারামবাবুর বাড়ি গিয়ে দেখেন, আরও কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী জড়ো হয়েছেন। তাঁরা টাকা ফেরত চাইছেন। রিঙ্কু অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, তাঁরা বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালে টাকা ফেরানোর মৌখিক আশ্বাস দেন সীতারামবাবু। কিন্তু তা তাঁরা মানতে চাননি। গত বছর ২২ মে তিনি লিখিত ভাবে জানান, চাকরি করে দেওয়ার জন্য যে টাকা নিয়েছেন, তা ফেরত দেবেন। অভিযোগ, এর পরেও টাকা ফেরত না পেয়ে ৫ ডিসেম্বর চাকরিপ্রার্থীরা একজোট হয়ে ফের সীতারামবাবুর বাড়িতে গেলে তাঁর ছেলে হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়।
আইনজীবী কমল দত্তের অভিযোগ, ‘‘প্রতারণা করে লক্ষ-লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে। টাকা ফেরতের জন্য চেক দিয়েছিলেন। সে চেক বাউন্সের মামলা চলছে। এ রকম অভিযুক্তকে পুলিশ জেরা করতে নিজের হেফাজতে নিল না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।’’ বাম প্রভাবিত বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ইউনিয়নের সম্পাদক বুদ্ধদেব চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন বারবার বিরোধীদের উপরে আক্রমণ করেছেন ওই ব্যক্তি। তখন থেকেই নানা আর্থিক অভিযোগ শোনা যেত।’’
সীতারামবাবুর পরে তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি হয়েছেন নীলেন্দু ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘উনি আমাদের রাজ্য সংগঠনের সহ-সভাপতি। এই ঘটনার দায় নিশ্চয় সংগঠনের ঘাড়ে চাপবে না।’’ তৃণমূল প্রভাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘খুবই লজ্জার বিষয়।’’ বর্ধমান শহরের তৃণমূল নেতা রাসবিহারী হালদারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy