Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

বাড়ি বিক্রিতে বাধা-হুমকি, নালিশ তৃণমূল নেতার নামে

বাড়িতে একাই থাকতেন বয়স্কা বিধবা মহিলা। এক মাত্র মেয়ে মেমারি ব্লক অফিসে চাকরি করেন। সম্প্রতি সেখানে বাড়িও কিনেছেন। অভিযোগ, মেয়ের নতুন বাড়িতে মালপত্র নিয়ে যাওয়ার সময় তৃণমূলের এক কাউন্সিলর লোকজন নিয়ে বাধা দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৩৬
Share: Save:

বাড়িতে একাই থাকতেন বয়স্কা বিধবা মহিলা। এক মাত্র মেয়ে মেমারি ব্লক অফিসে চাকরি করেন। সম্প্রতি সেখানে বাড়িও কিনেছেন। অভিযোগ, মেয়ের নতুন বাড়িতে মালপত্র নিয়ে যাওয়ার সময় তৃণমূলের এক কাউন্সিলর লোকজন নিয়ে বাধা দেন। মোটা অঙ্কের টাকা দাবিও করেন ওই নেতা— জেলা পুলিশ সুপারের কাছে এমনই অভিযোগ করেছেন বর্ধমানের নীলপুরের উত্তর বাজারের বাসিন্দা রীতা দাস।

বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল পুরো বিষয়টি তদন্ত করার জন্য এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ)কে দায়িত্ব দিয়েছেন।

সোমবার রীতাদেবী পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, বড়নীলপুরের বাড়িতে তাঁর মেয়ে সুস্মিতা ও জামাই দিলীপ দুবে একসঙ্গে থাকতেন। বর্তমানে তাঁদের মধ্যে বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা চলছে। তাঁর মেয়ে মেমারি ব্লক অফিসে চাকরি করায় সেখানেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে ছিল। কিছু দিন আগে নতুন বাড়ি কেনে। চাকরির কারণে তাঁরা মেমারিতেই থাকবেন বলে ঠিক করেন। রবিবার সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য জিনিসপত্র একটি গাড়িতে তোলা হচ্ছিল। অভিযোগ, সেই সময় বর্ধমান শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের স্বামী তথা তৃণমূল নেতা অনন্ত পালের নেতৃত্বে পড়শিরা তাঁদের কাছে এসে বাড়ি বিক্রি করার জন্য চার লক্ষ টাকা দাবি করেন। রিতাদেবীর অভিযোগ, “বাড়ি বিক্রিই হয়নি, ওই টাকা দেব কী করে, বলার পর থেকে এক লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য অনন্তবাবু ও প্রতিবেশীরা চাপ সৃষ্টি করছেন।” রবিবার রাতে মা ও মেয়ে লুকিয়ে মেমারিতে চলে এসেছেন।

রিতাদেবীর মেয়ে সুস্মিতা দুবের অভিযোগ, “আমাদের উপর টাকা চেয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। গাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছিল। তখন পুলিশ এসে মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য থানায় ডেকে পাঠায়।”

বর্ধমানের আইসি শান্তনু মিত্র অবশ্য জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হচ্ছিল বলে পুলিশ সেখানে গিয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে সমস্যা মেটানোর পরে উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার জন্য তাঁদের থানায় ডাকা হলেও হতে পারে। বাকিটা অপব্যাখা করা হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগকারিণীর জামাই দিলীপ দুবে ওই পাড়ায় বিভিন্ন দোকান ও পড়শিদের কাছে প্রায় চার লক্ষ টাকা ধার করেছেন। দেড় বছর ধরে দিলীপবাবু উধাও। তারপর ওই পরিবারও জিনিসপত্র নিয়ে কেটে পড়ছে দেখেই পড়শিরা টাকা চেয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। যদিও সুস্মিতাদেবীর দাবি, “আমার স্বামী বাইরে কী করেছেন তা আমার জানা নেই। বাড়িটা তো আমার নয়, মায়ের। আমাদের মা-মেয়ের অন্যায়টা কোথাই? দলের অফিসে ডেকে পাঠিয়ে অনন্তবাবুরা টাকা চেয়ে চাপ দেওয়ায় রাতের অন্ধকারে মাকে নিয়ে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। এর চেয়ে লজ্জার কী আছে!”

অনন্তবাবুর যদিও দাবি, “ঘটনার সময় আমি হার্ডওয়ার দোকানে ছিলাম। রিতাদেবীরাই আমার কাছে এসে ঘটনার কথা জানান। আমি পড়শিদের বিরুদ্ধে গিয়ে ওঁদের হয়েই কথা বলি। তারপরেই দেখি পুলিশ আসে। তখন আমি ওই এলাকা থেকে চলে আসি।’’ তিনি আরও জানান, রাতের বেলা তৃণমূলের দফতরে এসে নিজের মুখে স্বামীর ঋণ শোধ করার জন্য এক লক্ষ টাকা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন সুস্মিতা দুবে। তখন পড়শিদের বিষয়টি নিজেদেরই মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি, বলেও অনন্তবাবুর দাবি। তাঁর অভিযোগ, এরপরেও তাঁর নামে মিথঅযএ অভিযোগ করা হচ্ছে।

তৃণমূলের বর্ধমান শহরের সভাপতি অরূপ দাস বলেন, “আমি এ রকম কোনও ঘটনা শুনিনি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Demanding Money TMC Leader Accused for Threatening
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy