তিন দিন আগেই মস্কোর ‘নিউক্লিয়ার ডক্ট্রিন’ আনুষ্ঠানিক ভাবে বদল করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার পর বৃহস্পতিবার প্রথম বার তারা একটি আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও (ইন্টার-কন্টিনেন্টাল ব্যালেস্টিক মিসাইল, সংক্ষেপে আইসিবিএম) ছুড়েছে ইউক্রেনে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ০৭:৫৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামার নাম নেই। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে বিশেষ ফৌজি অভিযান (স্পেশ্যাল মিলিটারি অপারেশন) শুরু করে রুশ সেনা। তার পর থেকে হাজার দিন কেটে গেলেও পূর্ব ইউরোপে থামছে না যুদ্ধ। বরং সংঘাতের উত্তাপ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
০২১৭
তিন দিন আগেই মস্কোর ‘নিউক্লিয়ার ডক্ট্রিন’ আনুষ্ঠানিক ভাবে বদল করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার পর বৃহস্পতিবার প্রথম বার তারা একটি আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (ইন্টার-কন্টিনেন্টাল ব্যালেস্টিক মিসাইল, সংক্ষেপে আইসিবিএম) ছুড়েছে ইউক্রেনে।
০৩১৭
আন্তর্জাতিক কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, পরমাণু অস্ত্রবিহীন ক্ষেপণাস্ত্রটি যে কঠিন সতর্কবার্তা এবং সীমা লঙ্ঘন করলে যে পরমাণু অস্ত্র ছোড়া হবে তা ইউক্রেন এবং তার বন্ধু দেশগুলিকে বোঝাতেই সেই পদক্ষেপ করেছে রাশিয়া।
০৪১৭
অনেকে আবার মস্কোর সেই পদক্ষেপকে রাশিয়ার অস্ত্রাগারের শক্তি প্রদর্শন বলেও মনে করছেন। ইউক্রেনের ডিনিপ্রো শহরে পরীক্ষামূলক সেই হাইপারসনিক ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া।
০৫১৭
ইতিমধ্যেই ইউক্রেনে হাইপারসনিক ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ঘটনায় সরব হয়েছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। সেই হামলাকে ‘যুদ্ধের মাত্রা এবং বর্বরতা বৃদ্ধির স্পষ্ট নিদর্শন’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
০৬১৭
পরিস্থিতি যে দিকে মোড় নিচ্ছে, তাতে মস্কো-কিভ সংঘাতে আরও অনেক দেশের জড়িয়ে পড়া আশ্চর্যের নয়। আর সেটা যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ডেকে আনতে পারে, তাতে একরকম নিশ্চিত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা।
০৭১৭
রুশ প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেছেন যে, ইউক্রেন যুদ্ধ একটি বৈশ্বিক সংঘাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমেরিকা এবং ব্রিটেনের থেকে পাওয়া অস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনের হামলার পরেই পশ্চিমি দেশগুলিকে সতর্ক করেছে মস্কো।
০৮১৭
অন্য দিকে, ইউক্রেনের প্রাক্তন সামরিক কর্তা (কমান্ডার-ইন-চিফ) ভ্যালেরি জ়ালুঝনির বিশ্বাস তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। তাঁর দাবি, যে ভাবে রাশিয়া এবং তার বন্ধু দেশগুলি এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে তা বিশ্বযুদ্ধেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
০৯১৭
সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে জ়ালুঝনি বলেন, ‘‘আমি পুরোপুরি বিশ্বাস করি যে ২০২৪ সালে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছে।’’
১০১৭
বর্তমানে ইউক্রেনের দূত হিসাবে ব্রিটেনে দায়িত্ব পালন করছেন জ়ালুঝনি। তিনি দাবি করেছেন, রাশিয়ার বন্ধু দেশগুলির যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ার কারণেই যুদ্ধের পরিধি বেড়ে গিয়েছে।
১১১৭
জ়ালুঝনি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘‘উত্তর কোরিয়ার সৈন্যরা ইউক্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ইতিমধ্যেই ইউক্রেনে ইরানি ‘শাহেদি’রা সাধারণ মানুষকে প্রকাশ্যে খুন করছে। এদের কোনও লজ্জা নেই।’’
১২১৭
জ়ালুঝনির এই মন্তব্যে অনেকেই যুক্তি খুঁজে পেয়েছেন। কারণ, কিভ-মস্কো উত্তেজনার আবহে কুরস্ক অঞ্চলে উত্তর কোরিয়ার ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
১৩১৭
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ইরানি ড্রোন এবং অন্যান্য উন্নত অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও খবর উঠে এসেছে। উত্তর কোরিয়ার সেনার পাশাপাশি অস্ত্র পাঠিয়ে চিনও সংঘাতে সরাসরি যুক্ত হয়ে পড়েছে বলেও মনে করছেন জ়ালুঝনি।
১৪১৭
এই নিয়ে ইউক্রেনের বন্ধুদের সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ করতে এবং সংঘাতকে দেশের সীমানার বাইরে ছড়িয়ে পড়া থেকে আটকানোর আহ্বানও জানিয়েছন জ়ালুঝনি।
১৫১৭
জ়ালুঝনি আরও বলেছেন, ‘‘ইউক্রেনের ভূখণ্ডে এখনই এই সংঘর্ষ বন্ধ করা সম্ভব। কিন্তু কিছু কারণে আমাদের অংশীদাররা এটি বুঝতে চায় না। এটা স্পষ্ট যে ইউক্রেনের ইতিমধ্যেই অনেক শত্রু রয়েছে।’’
১৬১৭
ইউক্রেনের প্রাক্তন সামরিক কর্তার কথায়, ‘‘যুদ্ধে যতই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হোক না কেন, ইউক্রেন ঠিক সামলে নেবে। কিন্তু এটা পরিষ্কার নয় যে, ইউক্রেন এই যুদ্ধ একা লড়াই করে জিততে পারবে কি না।’’
১৭১৭
উল্লেখ্য, এ বছরের শুরুতে জ়ালুঝনিকে বরখাস্ত করেছিল ইউক্রেন। তবে এখনও সে দেশের রাজনৈতিক আলোচনায় একটি উল্লেখযোগ্য কণ্ঠস্বর তিনি।