পরপর পুড়ে গিয়েছে বিজেপি কার্যালয়, একটি বাড়ি ও দুটি দোকান। সেখানেই উঁকিঝুঁকি খুদেদের। গলসির পুরষায়। নিজস্ব চিত্র
বিজেপির একটি মণ্ডল কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পুড়েছে লাগোয়া একটি বাড়ি ও দু’টি দোকানও। বৃহস্পতিবার রাতে গলসি ১ ব্লকে উচ্চগ্রাম অঞ্চলে উচ্চগ্রাম বাজার এলাকার ঘটনা। বিজেপির দাবি, লোকসভা ভোটে ওই এলাকায় দল ভাল ফল করার পর থেকেই নানা ভাবে আক্রমণ করছে তৃণমূল। অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের পাল্টা দাবি, এলাকায় সন্ত্রাস তৈরি চেষ্টা করছে বিজেপি-ই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিবরাত্রি উপলক্ষে মেলা চলছে গ্রামে। মেলা কমিটির রাশ রয়েছে তৃণমূলের হাতে। অভিযোগ, ঘটনার দিন সেই মেলায় বইয়ের দোকান খোলার আবেদন জানিয়েছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু কমিটির অনুমোদন মেলেনি। তার জেরেই গ্রামে অশান্তি ছড়ায় বলে দাবি এলাকাবাসীর।
লোকসভা ভোটের পরেই উচ্চগ্রাম বাজার লাগোয়া সেচখালের বাঁধের উপর মাটির দেওয়াল, খড়ের চালা দেওয়া ঘরে বিজেপির মণ্ডল কার্যালয় গড়ে ওঠে। কার্যালয়ের পাশে বেশ কয়েকটি মাটির বাড়িও রয়েছে। বিজেপির এক মণ্ডল সভাপতি রাজু পাত্রের দাবি, “লোকসভা ভোটের পরে এলাকায় দলের প্রভাব বেড়েছে। তা নিয়ে আক্রোশ রয়েছে। এর সঙ্গে একশো দিনের কাজের টাকা নয়ছয়ের কিছু তথ্য সম্প্রতি আমাদের হাতে এসেছে। তাতেই আক্রোশ বাড়ে আরও। আমাদের দমাতেই কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।” তাঁর দাবি, আগুনে দলীয় পতাকা, ফেস্টুন-সহ কার্যালয়ের টিভি এবং বেশ কিছু আসবাব পুড়ে গিয়েছে। বিজেপির গলসি বিধানসভার আহ্বায়ক রমন শর্মা জানান, বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।
যদিও অভিযোগ মানেননি তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শেখ জাকির হোসেন। তাঁর দাবি, “ওই গ্রামের বাসিন্দা সুবোধ বাগদিকে টাকার লোভ দেখিয়ে বাড়ি দখল করে বিজেপি কার্যালয় তৈরি করেছিল। ওই ব্যক্তি এখনও টাকা পাননি। এ বার তিনি বাড়ি ফেরত চাইছেন। কিন্তু তা ফেরত দিতে চায় না বলে নিজেরাই দলের কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে বিজেপি।” তাঁর আরও দাবি, মেলা বন্ধ করারও চক্রান্ত করেছে বিজেপি। তাই এলাকায় ‘সন্ত্রাস ছড়ানোর’ চেষ্টা করা হয়েছে।
ঘরহারা হয়েছেন পেশায় ঘুগনি বিক্রেরা স্বপন বাচাল। তিনি জানান, বিজেপি কার্যালয়ের পাশেই তাঁর বাড়ি। আধ ঘণ্টার মধ্যে সব পুড়ে গৃহস্থালীর সমস্ত জিনিস পুড়ে গিয়েছে। স্বপনবাবুর স্ত্রী প্রতিমা বাচাল জানান, ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন তাঁরা।
বাজারের পাহারাদারেরা ছুটে এসে তাঁদের উদ্ধার করেন। তাঁর কথায়, ‘‘ঘুম ভাঙতেই দেখি দাউ দাউ করে জ্বলছে আমাদের বাড়ি। ওঁরা না থাকলে আমরা পুড়ে মরতাম।” আগামী জুলাইয়ে মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে ওই দম্পতির। সেই কারণে ঘরে বেশ কয়েকহাজার টাকা নগদ ছিল। আসবাবের সঙ্গে টাকাও পুড়ে গিয়েছে, দাবি তাঁদের। ক্ষতি হয়েছে বাণেশ্বর বাগদি ও সুকুমার বাগদির দোকানেও। তাঁদের দাবি, চাল পুড়ে গিয়েছে দোকানের। ক্ষতি হয়েছে মালপত্রেরও।
ওই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে তৃণমূল। দলের জেলা সম্পাদক প্রশান্ত লাহা বলেন, “ওই পরিবারের পাশে আছি। যে ভাবে হোক নির্দিষ্ট দিনে মেয়েটির বিয়ের ব্যবস্থা করা হবে। আমরাই জোগাড় করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy