গত বছর বড় দিনের রাতে দুর্গাপুরের ‘ন্যাশনাল স্টিল পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড’-এর (এনএসপিসিএল) ডিজিএম বীরেন্দ্রকুমার মিশ্রের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সেই ডাকাতির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জন দুষ্কৃতীকে বিহার থেকে পাকড়াও করে নিয়ে এল দুর্গাপুর থানার পুলিশ। ওই দুষ্কৃতীরা একটি লুঠপাটের ঘটনায় বিহারের জেলে ছিল। ওই রাজ্যের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের দুর্গাপুরে নিয়ে আসা হয়েছে।
দুর্গাপুর থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের ইস্পাতনগরীর বি-জোনের জয়দেব রোডের বাসিন্দা এনএসপিসিএলের ডিজিএম বীরেন্দ্রবাবু ২০১৫-র ২৫ ডিসেম্বর রাতে বাড়িতে একাই ছিলেন। তাঁর স্ত্রী নির্মলাদেবী সেই সময় পাশেই পড়শির বাড়িতে গিয়েছিলেন। বীরেন্দ্রবাবু জানান, রাত পৌনে ন’টা নাগাদ আচমকা দরজায় টোকা পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে ঘরে ঢুকে পড়ে তিন জন সশস্ত্র দুষ্কৃতী। ঘরে ঢুকেই বীরেন্দ্রবাবুর হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। ছিনিয়ে নেওয়া হয় তাঁর সঙ্গের দু’টি মোবাইল ফোনও। লুঠ করা হয় আলমারি। বীরেন্দ্রবাবুর দাবি, লুঠ হয়ে যায় টাকা ও সোনার গয়না। যাওয়ার সময় জোর করে বীরেন্দ্রবাবুর কাছ থেকে এটিএম কার্ড ও পিন নম্বর নিয়ে এলাকা থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
বীরেন্দ্রবাবুর অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে দুর্গাপুর থানার পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে শহরের প্রান্তিকা লাগোয়া এলাকার একটি এটিএম থেকে বীরেন্দ্রবাবুর অ্যাকাউন্ট থেকে দু’দফায় প্রায় ৪০ হাজার টাকা তুলে নেয় দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, টাকা তুলেই দু’টি মোটরবাইকে চড়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। ওই এটিএম থেকেই মেলে সিসিটিভি ফুটেজ। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে ছিনতাই হওয়া দু’টি মোবাইল নম্বরের একটি ব্যবহার করা হচ্ছে। আইএমইআই নম্বর ধরে দেখা যায় নম্বরটি বিহারের কোনও এলাকায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এরপরই বিহার থেকে ওই নম্বরের ব্যবহারকারীকে পাকড়াও করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুর্গাপুরের পুলিশ জানতে পারে ডাকাতির ঘটনায় অনিল সিংহ, সুধীল সিংহ ও ইশারুল আহমেদ নামে তিন দুষ্কৃতী জড়িত।
কী ভাবে এই দুষ্কৃতীরা জালে পড়ল? দুর্গাপুর থানার সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তে নেমে জানা যায় প্রত্যেকেই বিহারের সিওয়ান জেলার বাসিন্দা। তারপরেই ভিন্ রাজ্যের ওই জেলার পুলিশের ও স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে দুর্গাপুরের পুলিশ। দুর্গাপুর থানার পুলিশ জানায়, বিহারের গোপালগঞ্জে এক ব্যবসায়ীর থেকে টাকা লুঠের ঘটনায় ওই তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে ওই রাজ্যের বরহারিয়া থানার পুলিশ। তারপরেই শুক্রবার বিহারের জেল থেকে ওই তিন দুষ্কৃতীকে ট্রানসিট রিমান্ডে দুর্গাপুরে আনা হয়। শনিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে জেল হাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) কুমার গৌতম বলেন, ‘‘ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ডাকাতির জিনিসপত্র উদ্ধারেরও চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy