Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Pathashree Project

রাস্তা ‘তৈরিই’, তবু নির্মীয়মাণ তালিকায় ঠাঁই

ব্যানারে দেখা যাচ্ছে, মদনপুর পঞ্চায়েতে তিনটি রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। ‘নির্মীয়মাণ’ ওই তিনটি রাস্তার জন্য কত খরচ হবে, তা-ও লেখা রয়েছে।

A Photograph of Rastashree scheme

বাঁ দিকে, এই ব্যানার ঘিরে বিতর্ক। ডান দিকে, ‘তৈরি’ রাস্তা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
অন্ডাল শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৩ ০৮:৪৮
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার ‘পথশ্রী-রাস্তাশ্রী’ প্রকল্পের সূচনা করেছেন রাজ্য জুড়েই। এ দিন ‘ভার্চুয়াল’ মাধ্যমে রাজ্যের নানা জায়গার পাশাপাশি, পশ্চিম বর্ধমানের নানা প্রান্তেও রাস্তা উদ্বোধন করেছেন তিনি। কিন্তু এই প্রকল্পের আওতায় থাকা অন্ডালের মদনপুর পঞ্চায়েতের একটি রাস্তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতি ও অন্ডাল ব্লকের প্রচারিত একটি ব্যানারে লেখা, পলাশবন প্রাথমিক স্কুল থেকে রঙ্কিনী মন্দির পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তাটি ‘নির্মীয়মাণ’। ব্যানারটির তলায় লেখা, ‘পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর’। এলাকাবাসীর একাংশ ও বিরোধী নেতৃত্বের একাংশের দাবি, রাস্তাটি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেটির অবস্থাও ভাল।তা হলে সেখানে আবার কী নির্মাণ কাজ হবে!

ওই ব্যানারে দেখা যাচ্ছে, মদনপুর পঞ্চায়েতে তিনটি রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। ‘নির্মীয়মাণ’ ওই তিনটি রাস্তার জন্য কত খরচ হবে, তা-ও লেখা রয়েছে। এর মধ্যেই একটি রাস্তা পলাশবন প্রাথমিক স্কুল থেকে রঙ্কিনী মন্দির পর্যন্ত। রাস্তাটির জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৩১ লক্ষ ৬ হাজার টাকা। এ দিন অন্য একটি রাস্তার উদ্বোধনে যান তৃণমূল পরিচালিত অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি লক্ষ্মী টুডু। তিনি বলেন, “সেখানেই জানতে পারলাম, রঙ্কিনী মন্দির পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাটি ঢালাই করা আছে। কোনও ক্ষতিও হয়নি।”

কোন যুক্তিতে ফের ওই রাস্তা তৈরি হবে? লক্ষ্মীর দাবি, “এই রাস্তাটি যে হবে, তা আমাকে জানানো হয়নি!” তবে তাঁকে কার জানানোর কথা, তা অবশ্য ভাঙেননি তিনি। যদিও, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কৌশিক মণ্ডলের দাবি, এলাকাবাসীর আবেদনের ভিত্তিতেই রাস্তাটি তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল! বিডিও (অন্ডাল) সুদীপ্ত বিশ্বাসেরও বক্তব্য, “এলাকাবাসীর একাংশের দাবিতেই রাস্তাটি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। এখন অন্য কথা শোনা যাচ্ছে। ফলে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। কোনও ভাবেই অর্থের অপচয় হবে না।” প্রতিক্রিয়ার জন্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের জেলা আধিকারিক তমোজিৎ চক্রবর্তীকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। রাত পর্যন্ত মেসেজের জবাব মেলেনি। তবে দফতর সূত্রে দাবি, প্রকল্পটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) প্রশান্ত শুক্লা। প্রশান্তের অবশ্য বক্তব্য, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।”

এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রবীর মণ্ডল, বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি শ্রীদীপ চক্রবর্তীরা বলেন, “তৈরি রাস্তা ফের তৈরির নামে লুটের ব্যবস্থা হয়েছিল। লুটের সরকার চলছে। এ ধরনের ব্যানার প্রকাশ্যে আসার ফলে, সেটাই স্পষ্ট হল।” যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের অন্ডাল ব্লক সভাপতি কালোবরণ মণ্ডলের বক্তব্য, “এলাকাবাসীর একাংশই চেয়েছিলেন, রাস্তাটি ফের ঢালাই করা হোক। তা হলে রাস্তাটির আয়ু বাড়বে। এখন তাঁরাই আর তা চাইছেন না। প্রশাসন অবশ্যই সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবে।” যদিও বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি কোনও বাসিন্দা।

পাশাপাশি, পশ্চিম বর্ধমানে এই প্রকল্পে মোট ১৪১টি রাস্তা তৈরি বা সংস্কার করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Pathashree Project Mamata Banerjee Ondal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy