বেহাল পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার দেউল যাওয়ার রাস্তা। ছবি: বিপ্লব ভট্টাচার্য।
রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে নাম রয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার শ্যামরূপা মন্দির ও দেউলের। বছরের প্রায় অর্ধেক সময় এখানে পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মূলত দুর্গাপুজোর সময় থেকে ভিড় বাড়তে থাকে কাঁকসার এই দুই এলাকায়। কিন্তু এই দুই জায়গায় যাওয়ার রাস্তার অবস্থা বেহাল। সে কারণে পর্যটকদের সমস্যা হয়। রাস্তাটি সংস্কারের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
ইতিহাসের দিক থেকে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে শ্যামরূপা মন্দির ও দেউলের। জানা গিয়েছে, সেন বংশের আমলে গড় জঙ্গলে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল শ্যামরূপা মন্দির। রাজা লক্ষ্মণ সেনের পুরো রাজত্ব গড়ে উঠেছিল এই গড়কে কেন্দ্র করে। ইতিহাসের টানে বছরের বিভিন্ন সময়ে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে এই মন্দিরে আসেন বহু মানুষ। আবার এখান থেকেই প্রায় ছ’কিলোমিটার মোরামের রাস্তা দিয়ে গেলেই পড়বে ইছাই ঘোষের দেউল। কথিত আছে, গোপ বংশের রাজা ইছাই ঘোষ এই দেউলটি নির্মাণ করেছিলেন। বর্তমানে দেউলটি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের অধীনে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মূলত এই দু’টি জায়গা কাঁকসার ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। দুর্গাপুজোর সময় থেকে শুরু করে মার্চ মাস পর্যন্ত ভিড় হয়। পর্যটকেরা মুচিপাড়া-শিবপুর রাস্তার শ্যামরূপা মোড় থেকে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যাওয়া প্রায় ছ’কিলোমিটার মোরামের রাস্তা ধরে এই মন্দিরে পৌঁছনো যায়। আবার এখান থেকেই একটি রাস্তা চলে গিয়েছে দেউলের দিকে। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই দুই স্থানকে কেন্দ্র করে তাঁদের অর্থনীতিও অনেকটা চাঙ্গা থাকে বছরের এই কয়েকটা মাস। কিন্তু যা রাস্তার অবস্থা, তাতে বহু মানুষ আসতে চান না। তাঁরা জানিয়েছেন, পুরো ১২ কিলোমিটার রাস্তা খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমে যায়। গাড়ি বা মোটরবাইক নিয়ে যাতায়াত করা খুবই সমস্যার। এলাকাবাসী সমীর রায়, বীরেশ ঘোষেরা বলেন,“অবিলম্বে রাস্তাগুলি সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। তা না হলে আমাদের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।”
শ্যামরূপা যাওয়ার রাস্তাটি মলানদিঘি পঞ্চায়েত ও দেউল যাওয়ার রাস্তাটি রয়েছে বনকাটি পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ছে। তবে পুরো রাস্তাটাই বন দফতরের অধীনে বলে দুই পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে। দুই পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানান, কাজেই এই রাস্তা কোনও দিন ঢালাই বা পিচ করা সম্ভব নয়। যেটুকু কাজ করার, তা বন দফতরের অনুমতি নিয়ে করতে হয়। মলানদিঘি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিশ্বরূপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে বন দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি। খানাখন্দগুলি অবিলম্বে ভরাট করা হবে।” বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তা সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। পঞ্চায়েতের আবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয়পদক্ষেপ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy