মঙ্গলবার ‘আসানসোল মোটর ট্র্যান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’-এর বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
যাত্রী তোলাকে কেন্দ্র করে মাঝেমধ্যেই অটো-টোটো চালকদের মধ্যে অশান্তি বাধছে আসানসোলের নানা প্রান্তে। সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। এই পরিস্থিতিতে সমস্যার স্থায়ী সমাধান চেয়ে পরিবহণ দফতরের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তৃণমূল প্রভাবিত অটো ইউনিয়ন ও বাস মালিকেরা। ব্যবস্থা নিতে উপযুক্ত রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে বলে পরিবহণ আধিকারিকেরা জানান।
অটো ও টোটো চালকদের অশান্তির দীর্ঘ বৃত্তান্ত রয়েছে এই শহরে। সম্প্রতি, গত রবিবার রাতে আসানসোল উত্তর থানার ওকে রোড এলাকা এই অশান্তিকে কেন্দ্র করে তেতে ওঠে। মারামারি, ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ঘটে। এর আগে, গত ১৫ জুলাই রাতেও অশান্তি বাধে দু’পক্ষে। অশান্তি থামাতে আসতে হয় পুলিশকে। রবিবার রাতে অটো চালকদের উপরে হামলার অভিযোগে মঙ্গলবার সকালে আসানসোল উত্তর থানায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে তৃণমূল প্রভাবিত ‘আসানসোল মোটর ট্র্যান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’। বাস মালিক ও অটো চালক ইউনিয়নের অভিযোগ, শুধু ওকে রোডেই নয় আসানসোলের হাটন রোড, হাসপাতাল মোড়, স্টেশন মোড়-সহ নানা এলাকায় যাত্রী তোলাকে কেন্দ্র করে টোটো চালকদের সঙ্গে নিত্য বচসা, মারামারি হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে ‘আসানসোল মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’-এর নেতা রাজু অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘পরিবহণ দফতরের তরফে নির্দিষ্ট করে দেওয়া অটো স্ট্যান্ডে অবৈধ ভাবে জোর করে টোটো দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে। অটোর যাত্রীদের টেনে নামিয়ে টোটো-তে চাপানো হচ্ছে। অটো চালকেরা প্রতিবাদ করলেই অশান্তি শুরু হচ্ছে।’’ একই অভিযোগ করেছেন বাস মালিকেরাও। ‘আসানসোল বাস অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক বিজন মুখোপাধ্যায় ও ‘মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক সুদীপ রায় বলেন, ‘‘পরিবহণ আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাস রুট ধরে ছুটছে টোটো। বাসযাত্রীদের জোর করে টোটো-তে চাপানো হচ্ছে। ফলে, অশান্তি হচ্ছে।’’ তবে টোটো চালক মহম্মদ সাদিক, বিনোদ কুর্মীদের অভিযোগ, ‘‘ভাড়া কম ও স্বাচ্ছন্দ্যের কারণে যাত্রীরা টোটো-য় চড়তে চাইছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অশান্তি তৈরি করছেন অটো চালকেরাই। আমরা ঋণ নিয়ে টোটো কিনেছি। এখন বিষয়টা প্রশাসনেরই দেখা দরকার।’’
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪-র গোড়া থেকে আসানসোল মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে টোটো চলাচল শুরু হয়। টোটো চলাচলে লাগাম টানতে পুরসভাকে দায়িত্ব দেয় পরিবহণ দফতর। ঠিক হয় আবেদনের ভিত্তিতে পুরসভা টোটো চালকদের ‘টেম্পোরারি আইডেন্টিফিকেশন নম্বর’ (টিন) দেবে। সেই নম্বর নিয়েই টোটো চলবে। তবে বাস রুট বা অটোর রুটে তা চলবে না। টিন না থাকলে রাস্তায় টোটো নামানো যাবে না। পুরসভার পক্ষে এই কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ (জল) পূর্ণশশী রায়। তিনি বলেন, ‘‘৮৭২টি টোটো-কে টিন দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে টিন ছাড়া, কয়েক হাজার টোটো মহকুমা জুড়ে চলছে।’’
পাশাপাশি, অটো চালকদের একাংশের অভিযোগ, শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ভাবে টোটো বিক্রয়কেন্দ্র থাকায় সমস্যা আরও বেড়েছে। জেলা পরিবহণ আধিকারিক পুলকরঞ্জন দাসমুন্সি অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা পুরো বিষয়টির উপরেই নজর রেখেছি। কোভিড-পরিস্থিতির জন্য অভিযানে ভাটা পড়েছে। দ্রুত শুরু করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy