শুভ চক্রবর্তী ও তাঁর স্ত্রী রমা। নিজস্ব চিত্র।
লকডাউনে বস্তি, সরকারি অফিস, থানা বিনামূল্যে ‘স্যানিটাইজ়’ করেছিলেন। এখন আবার দুঃস্থদের বিনামূল্যে জামাকাপড় দিতে আশিস মার্কেটে ‘ফ্রি বাজার’ খুললেন লাউদোহার দম্পতি। পাশাপাশি, বিশেষ ভাবে সক্ষমদের হুইল চেয়ার দেওয়ার তোড়জোড়ও করছেন পশ্চিম বর্ধমানের ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার জব্বরপল্লি এলাকার বাসিন্দা শুভ চক্রবর্তী। সব কাজেই পাশে পেয়েছেন স্ত্রী রমাকেও।
শুভ মহারাষ্ট্রে শাড়ির ব্যবসা করতেন। করোনার সময়ে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে নিজের গ্রামে ফিরে আসেন। তার পর থেকে কখনও ধূপকাঠির ব্যবসা, কখনও বা মাস্কের ব্যবসা করছেন। সে সঙ্গে, সমাজের জন্য কিছু করতে হবে, এই ভাবনা থেকেই এ সব কাজকর্মের শুরু। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন আছড়ে পড়ে, তখন করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যোগ দিতে থানা, ফাঁড়ি, বস্তি এলাকা বিনামূল্যে জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু করেন। মাস্ক বিলিও করতেন।
সম্প্রতি শুভ ও রমা দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের আশিস মার্কেটে চালু করেছেন ‘ফ্রি বাজার’। সেখানে দুঃস্থরা এসে নিজেদের প্রয়োজন মতো জামাকাপড় সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন। তেমনই এক জন সুস্মিতা বাদ্যকর বলেন, “মেয়ের জন্য জামা নিয়েছি ফ্রি বাজার থেকে। যখনই দরকার হবে তখনই আসব। খুবই ভাল উদ্যোগ।” কোথা থেকে আসছে এই জামাকাপড়? ওই দম্পতি জানান, অনেকেই নানা কারণে নিজেদের জামাকাপড় কিছু দিন ব্যবহার করার পরে ফেলে দেন। কেউ নতুন জামাকাপড় কেনেন। কারও আবার জামাকাপড় আকারে ছোট হয়ে যায়। কারও নতুন জামাকাপড় কেনার পরে, কোনও কারণে পছন্দ হয় না। অথচ, তখন হয়তো আর তা বদলানোর উপায় নেই। আবার কেউ পছন্দ করে জামাকাপড় কিনলেও পরে হয়তো তাঁর পছন্দ বদলে গেল। এ সব জামাকাপড় হয় তাঁরা ফেলে দেন বা আলমারির এক কোণে ফেলে রেখে দেন। বছর ৩৬-এর শুভ বলেন, “আমরা এমন বাসিন্দাদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, ওই ফেলে দেওয়া বা পড়ে থাকা জামাকাপড়গুলি পরিষ্কার করে আমাদের দিতে। সে জামাকাপড় কাজে লাগছে দুঃস্থদের। তাঁরা ব্যবহার করতে পারছেন।” রমা বলেন, “করোনার সময় থেকেই স্বামীর সঙ্গে সমাজের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি। এমন কাজ করতে পেরে আমরা গর্বিত।” এই দম্পতির বছর ১৪-র এক ছেলে রয়েছে।
শুভ জানান, একই সঙ্গে অন্যদের সহযোগিতায় বিশেষ ভাবে সক্ষমদের হুইল চেয়ার দেওয়ার কাজও চলছে। তিনি বলেন, “সহৃদয় ব্যক্তি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বলেই আমাদের চেষ্টা বাস্তবায়িত হচ্ছে।” মঙ্গলবার ফ্রি বাজারের উদ্বোধন করেছেন দুর্গাপুরের মেয়র অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ওই দম্পতির উদ্যোগ অনুপ্রাণিত করবে অন্যদেরও।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy