পাড়ায় পাড়ায়। নিজস্ব চিত্র।
প্রথম দু’দিন ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার ছিল প্রায় ৮০ শতাংশ। কিন্তু তার পরেই কমতে শুরু করেছে স্কুলে হাজিরা। পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশের দাবি, নানা কারণে স্কুলে যেতে অনীহা দেখা দিয়েছে পড়ুয়াদের। তাদের স্কুলমুখী করতে মাইক হাতে প্রচারে নেমেছেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার শিক্ষকেরা দল বেঁধে শহরের সংখ্যালঘু এলাকা-সহ অন্য পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে আসার আবেদন করেন। কোন বাড়িতে পড়ু্য়া রয়েছে, তা খোঁজ নিয়ে অভিভাবকদেরও ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠানোর জন্য অনুরোধও করা হয়। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোহর দাস বলেন, ‘‘বর্তমানে স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার খুবই কম। তাদের স্কুলমুখী করতে আমরা আপাতত কয়েকদিন এ ভাবেই মাইকে প্রচার করব। প্রথম দিনের প্রচারে ভালই সাড়া পেয়েছি। আশা করি, এতে কাজ হবে।’’
এলাকার অন্যতম পুরনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। বর্তমানে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় হাজার দেড়েক। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ছাত্রীদেরও পড়ায় সুযোগ রয়েছে। শিক্ষকদের দাবি, নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া রয়েছে ১০৪ জন। তাদের মধ্যে ৩৫ থেকে ৪০ জনের দেখা মিলছে স্কুলে। দ্বাদশ শ্রেণিতেও ২৮৯ জনের মধ্যে হাজির হচ্ছে ১৩৫-১৪০ জন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই করোনা-সংক্রমণের ভয়ে অভিভাবকেরা স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না বলে দাবি শিক্ষকদের।
এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ ভ্যানে মাইক বেঁধে প্রধান শিক্ষক জনা দশেক সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে প্রচারে নামেন। পাইকপাড়া, কাজিপাড়া থেকে শুরু করে সুভাষ রোড, সাহাপাড়া, বাজারপাড়ায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা প্রচার চলে। পাইকপাড়ার বাসিন্দা মাতব্বর শেখ, মহব্বত শেখদের দাবি, ‘‘স্কুল যে খুলেছে প্রথমে জানতে পারিনি। এখন শুনছি পড়ুয়ারা যেতে চাইছে না। আসলে দীর্ঘক্ষণ স্কুলে থাকায় করোনার ভয় রয়েছে। তাই একটু চিন্তায় আছি। তবে শিক্ষকদের এই উদ্যোগে ভরসা পাচ্ছি।’’ আর এক বাসিন্দা অশোক মণ্ডলও বলেন, ‘‘স্কুলে যাওয়া নিয়ে এখনও কিছুটা ভীতি, কিছুটা গুজব কাজ করছে। তাই অনেকে যেতে চাইছে না।’’ পড়ুয়ারা কেউ দীর্ঘক্ষণ মাস্ক পরে থাকায় অসুবিধার কথা জানিয়েছে। কারও কথায় বোঝা যাচ্ছে, দীর্ঘ স্কুল বন্ধে বাড়িতে থাকার অভ্যাস বদলাতে সময় লাগছে। একাদশ শ্রেণির ছাত্রী জালিলা খাতুন, দশম শ্রেণির সৈইফ আলি খানেরা বলে, ‘‘প্রথম দিকে স্কুলে যেতে খুবই ইচ্ছে করত। কিন্তু টানা মাস্ক পরে থাকতে পারছি না। তাই রোজ যাচ্ছি না।’’ তবে শিক্ষকদের কথায় অনেকেরই আগ্রহ ফিরছে। দাঁইহাটের পুরপ্রশাসক শিশির মণ্ডল শিক্ষকদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy