Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

বিপদ শুনলেই ঝাঁপিয়ে পড়ছেন শিক্ষকেরা

‘লকডাউন’-পর্বে এলাকার গ্রামে গ্রামে ঘুরে ৫৬৪ জন গরিব মানুষের তালিকা তৈরি করেন ওই শিক্ষকেরা।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২০ ০৪:০৯
Share: Save:

খাবারের অভাব হোক বা চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে হিমসিম খাওয়ার খবর পেলেই হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন ওঁরা। সঙ্গে পড়ুয়াদের সাহায্য, স্বাস্ব্যকর্মীদের ‘হেলথ কিট্’ তুলে দেওয়ার মতো কাজও করছেন। ‘লকডাউন’ পর্ব জুড়ে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নসরতপুরের ওই ৮০ জন শিক্ষকের কর্মকাণ্ড দেখে এলাকার অনেকেই বলছেন, বইয়ের শিক্ষা দানের বাইরেও ‘সমাজের শিক্ষক’ হয়ে উঠেছেন ওঁরা।

‘লকডাউন’-পর্বে এলাকার গ্রামে গ্রামে ঘুরে ৫৬৪ জন গরিব মানুষের তালিকা তৈরি করেন ওই শিক্ষকেরা। নিজেরা চাঁদা তুলে ওই পরিবারগুলিকে খাদ্যসামগ্রী বিলি করেন। সেই শুরু। তার পর থেকে সাধারণ মানুষের বিপদের কথা শুনলেই দল বেঁধে এগিয়ে এসেছেন তাঁরা। গড়ে তুলেছেন ‘নসরতপুর টিচার্স রিলিফ ফান্ড’।

‘গৃহবন্দি’ পর্বে একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন বহু ছাত্রছাত্রী। ওই শিক্ষকেরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, প্রায় সত্তর জনের পরিবারের বই, খাতা কেনারও সামর্থ্য নেই। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে তাদের চাহিদা মতো বই, খাতা তুলে দেয় ওই সংগঠন। ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’ এবং তার পরবর্তী প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরেও এলাকার মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদ অনুভব করেন ওই শিক্ষকেরা। ঝড়ে বিধ্বস্ত বেশ কিছু পরিবারকে ত্রিপল দিয়ে সাহায্য করা হয়। ঝড়ের তাণ্ডবে এলাকার বহু গাছ নষ্ট হয়েছে জেনে পরিবেশ দিবসে দেড়শোর বেশি চারা গাছ বিলি করেন তাঁরা। যাঁরা চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে পারছেন না, বা গাড়ি ভাড়া করে চিকিৎসকের জন্য নিয়ে যেতে পারছেন না, তাঁদের পাশেও দাঁড়ান ওই শিক্ষকেরা।

ওই শিক্ষকদের মধ্যে পিন্টু চট্টোপাধ্যায়, গৌতম ঘোষেরা জানান, করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যাঁরা মাঠে নেমে সরাসরি কাজ করছেন তাঁদের মধ্যে চারটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ২৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ারের হাতে ‘হেলথ কিট’ তুলে দিয়েছেন তাঁরা। বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংস্থাকে পশুদের জন্য খাদ্যদ্রব্য দেওয়া হয়। পরিযায়ী শ্রমিকদের একটি দলের হাতে খাবার তুলে দেওয়া, মুম্বইয়ে আটকে পড়া এক পরিযায়ী শ্রমিককে সাহায্য করা, অসহায় এক বৃদ্ধাকে ঘর তৈরির জন্য সাহায্য করার মতো বেশ কিছু কাজও করেছেন ওই শিক্ষকেরা। তাঁদের কাজের প্রশংসা করেছেন পূর্বস্থলী দক্ষিণ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক দিবাকর ঘোষ।

তবে গোবিন্দ বসাক, রামানন্দ সাহা, চৈতন্য সরকারেরা প্রশংসা চান না। তাঁদের কথায়, ‘‘লকডাউনে গরিব পরিবারগুলির হাত খাবার তুলে দেওয়ার পরে বুঝতে পারি, আরও অনেক কাজ করার আছে। চেষ্টা করছি যতটা পারি, মানুষের পাশে থাকতে। এই সঙ্কটে হাতে হাত রেখে, দল বেঁধে থাকাটাই দরকার।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy