পূর্বস্থলীতে। নিজস্ব চিত্র
আর্সেনিক-এলাকা। সেই এলাকাকে বাঁচাতেই এই উৎসবের পথ চলা শুরু হয়েছিল। পূর্বস্থলীর ১-এর বাঁশদহ বিলের পাড়ে ১৯তম খালবিল উৎসবের মঞ্চে দাঁড়িয়ে এ বার এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ প্রস্তাব দিলেন, বিলকে কাজে লাগিয়ে তৈরি হোক দূষণমুক্ত জলপ্রকল্প।
বুধবার উৎসব মঞ্চ থেকে স্বপনবাবু বলেন, ‘‘মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের কারণে পূর্বস্থলী এই ব্লকে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। .৭১ একর বিলের জলকে কাজে লাগিয়ে মৎস্য দফতর, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর অথবা জেলা পরিষদ দূষণমুক্ত জলপ্রকল্প তৈরি করতে পারে।’’ মন্ত্রীর এই প্রস্তাব প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘মন্ত্রীর এই প্রস্তাব নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে অবশ্যই আলোচনা হবে।’’ একই কথা জানিয়েছে মৎস্য এবং জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরও।
উৎসব উপলক্ষে দুপুরে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন ছিল এলাহি— ধনে পাতা বাঁটা, বেগুনপোড়া, উচ্ছে দিয়ে মটর ডাল, মুড়িঘণ্ট, কাতলা মাছের কালিয়া। সঙ্গত রাখে হরেক রকমের চুনো মাছের পদও। শেষ পাতে ছিল চাটনি আর নলেন গুড়ের পায়েস।
১৯ বছর আগে উৎসবটি শুরু করেছিলেন মন্ত্রী স্বপনবাবু। ধীরে ধীরে সরকারি নানা প্রকল্পে বদলে যায় বিলের পরিকাঠামো। এ দিন পাতে যা ছিল, সেই চুনো মাছ বিলেরই। আনাজও বিলের পাড় থেকে আনা, জানান উদ্যোক্তারা। নলেন গুড় তৈরি হয়েছে আশপাশের খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে।
উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, সহ-সভাধিপতি দেবুবাবু, মহকুমাশাসক (কালনা) সুমন সৌরভ মোহান্তি-সহ আরও অনেকেই। সাতসকালে অতিথিদের হাতে তুলে দেওয়া হয় খেজুর রস আর নানা ধরনের পিঠে। অতিথিদের জন্য সাত রকমের পিঠে তৈরি করেছিলেন স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা। নলেন গুড় ভর্তি মাটির হাঁড়ি এবং বিলের সূর্যোদয়, পরিযায়ী পাখীদের খেলে বেড়ানোর দৃশ্য ছবির ফ্রেমে বাঁধিয়ে উপহার হিসেবে দেওয়া হয় অতিথিদের। তবে শুধু অতিথিরা নন, আশপাশে পাঁচটি জায়গায় পাত পেড়ে খাওয়ানো হয়েছে নানা গ্রামের প্রায় আট হাজার বাসিন্দাকে।
উৎসবের উদ্বোধন করে চন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘এ বার সবথেকে ভাল লেগেছে বিলে পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা দেখে। পাশাপাশি, এ বার বিলটিকে ‘ময়না প্রকল্পে’র আওতায় আনা হয়েছে।’’ মন্ত্রী জানান, ওই প্রকল্পে বিলে ছাড়া হবে ৪০ কুইন্টাল চারা পোনা। এ দিন তিন কুইন্টাল চারা পোনা বিলের জলে ছাড়াও হয়। মন্ত্রী স্বপনবাবু এ দিন জানান, পর্যটক-সুবিধায় বিলের জলের উপরে শ্রম দফতর তৈরি করবে ‘হলিডে হোম’। সেখানে থাকছে পাঁচটি কটেজ, কনফারেন্স হল প্রভৃতি। এর জন্য প্রাথমিক ভাবে ২ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দও হয়েছে। জেলাশাসকও বলেন, ‘‘পর্যটকদের জন্য এখানে দারুণ পরিবেশ রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy