শক্তিগড়ের সভায় শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র
‘শস্যগোলা’ বর্ধমানে এসে কৃষকদের নানা অভিযোগকেই হাতিয়ার করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সারের কালোবাজারি, আলুর দাম না পাওয়া থেকে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি নিয়ে চাষিদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ তুলে সরব হলেন তিনি। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে শক্তিগড়ের স্বস্তিপল্লি মাঠের সভায় জেলায় বালি পাচার থেকে বিধায়কের বিরুদ্ধে, নানা দুর্নীতি নিয়েই সরব হলেন শুভেন্দু।
এই সভা উপলক্ষে রবিবার এলাকা ঘিরে দেওয়া হয়েছিল পুলিশে। এর আগে বর্ধমানে শুভেন্দুর সভা আয়োজন করতে চেয়েও অনুমতি মেলেনি বলে অভিযোগ বিজেপির। সে প্রসঙ্গ তুলে এ দিন শুভেন্দু বলেন, ‘‘একটা সভা নিয়ে কী আতঙ্ক! চার বার মাঠ বদলাতে হয়েছে।’’ প্রতি বছরই সহায়ক মূল্যে ধান কেনা নিয়ে চাষিরা নানা অভিযোগ করেন। তার মধ্যে প্রতি বস্তা থেকে ‘আর্দ্র’ বলে বেশ কয়েক কেজি ধান বাদ দেওয়া হয় (চলতি কথায় চাষিরা তা ‘বাটা’ বলেন)। সে প্রসঙ্গ তুলে শুভেন্দুর অভিযোগ, “সহায়ক মূল্যে ধান কেনা হচ্ছে। সেখানে আট-দশ কেজি করে কেটে নেয়, বাটা নেয়। কাউকে ছাড়বেন না। রুখে দাঁড়াতে হবে। এক কেজি, ১০০ গ্রামও ছাড়বেন না।’’ চালকল মালিকেরাও বীরভূমের মতো বর্ধমানেও ‘ভুয়ো অ্যাকাউন্ট’ খুলে কত টাকা নিয়েছে তার সীমা নেই বলে দাবি করেন তিনি।
সারের কালোবাজারির অভিযোগ তুলে শুভেন্দুর দাবি, “১২০০ টাকার সার খোলাবাজারে ২,৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমরা বিধানসভায় এ নিয়ে বলেছিলাম। মাননীয়া বলছেন, সারের জোগান কম। জোগান কম তো ১২০০ টাকার সার ২৫০০ টাকায় বিক্রি করছে কালোবাজারিরা।’’ পুজোর পর থেকে আলুর দাম নিম্নমুখী। হিমঘর থেকে আলুর বস্তা তখন থেকেই ৬০০-৭০০ টাকার নীচে রয়েছে বলে বিরোধী দলনেতার দাবি। তাঁর অভিযোগ, “আলুর দাম আপনারা পান না। ৬০০-৭০০ টাকায় আলুর বস্তা বিক্রি করতে হয়েছে। আর সব বন্ড কিনে রাখে তৃণমূলের চোরগুলো। কবে জাগবেন কৃষকেরা?’’
আবাস যোজনায় দুর্নীতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু। পূর্ব বর্ধমানে আবাস যোজনার টাকায় তৈরি ঘরে তৃণমূলের কার্যালয় চলার অভিযোগ স্মরণ করিয়ে তাঁর দাবি, “গরিব মানুষ বাড়ি খুঁজছেন, আর তৃণমূল নেতারা টাকা রাখার জন্য খাট কিনেছে!” অনুব্রত মণ্ডলের ‘পর্যবেক্ষণে’ থাকা কেতুগ্রাম, আউশগ্রাম ও মঙ্গলকোটে বিজেপি করার অপরাধে তৃণমূল অত্যাচার করেছে বলেও অভিযোগ তাঁর। তাঁর আরও দাবি, শুধু বিজেপি কর্মীরা নন, মঙ্গলকোটে তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতাকেও মিথ্যা অভিযোগে জেলে রাখা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পরিবেশবিধি অগ্রাহ্য করে দামোদরে বালি লুট হচ্ছে। দামোদরের পাড় ভাঙছে।’’ বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক (বর্ধমান দক্ষিণ) খোকন দাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু। বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়েরও অভিযোগ, “খোকন দাসের সাইকেল ছিল না। এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। কী করে হল, তা জানার জন্য ইডি-সিবিআই দরকার। ওঁকে জেল খাটতেই হবে।’’
সব অভিযোগ উড়িয়ে খোকন বলেন, “আমাকে তো রাজ্য স্তরের নেতার মর্যাদা দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা! আমার কোথায় দুর্নীতি আছে, দেখিয়ে দিয়ে যাক।’’ তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য মুখপাত্র দেবু টুডু শুভেন্দুর নাম না করে দাবি করেন, “বাংলার মানুষ কি ওই নেতার কথা শোনেন? যত দিন যাচ্ছে, উনি হাসির পাত্র হচ্ছেন মানুষের কাছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy