মেমারির রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র
গত কয়েকদিনে কাটোয়া, মেমারি, জামালপুর, মন্তেশ্বরের মতো পূর্ব বর্ধমান জেলার একাধিক জায়গায় শুভেন্দু অধিকারির ছবি দিয়ে ‘দাদার অনুগামী’দের পোস্টার, ফ্লেক্স চোখে পড়েছিল। কিন্তু শুক্রবার ‘দাদা’র মন্ত্রিপদ ছাড়ার দিনে তেমন কোনও বড় কর্মসূচিতে দেখা গেল না ‘অনুগামী’দের। তবে তৃণমূলের বিধায়কদের একাংশ, নেতারা যে শুভেন্দু অধিকারীর পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন, তা নিয়ে ওয়াকিবহাল দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব।
দলের রাজ্যের মুখপাত্র তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “বাঁকুড়ার সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কে, কার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তা দল জানে। তেমনি মুখ্যমন্ত্রীও নজরে রাখছেন। আমরা মনে করি, তৃণমূল ছেড়ে কেউ অন্য কোথাও গেলে হালে পানি পাবেন না।’’
তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, দলের অনেকেই যে সদ্য পদত্যাগ করা রাজ্যের পরিবহণ ও সেচমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তা জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের নজরে রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে কালনা মহকুমার এক বিধায়ককে দলীয় কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিতে দেখা যাচ্ছে না। ওই বিধায়কের সঙ্গে জেলার এক শীর্ষ নেতা, ব্লক নেতৃত্বের ‘দ্বন্দ্ব’ও বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। কয়েকদিন আগে তাঁকে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে দেখা গিয়েছিল। ওই নেতার সঙ্গে বেশ কয়েকবার জেলা নেতৃত্বের বৈঠকও হয়েছে। তবে তাঁর ‘অভিমান’ ভাঙেনি। এ দিন শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগের পরে ওই নেতাকে নিয়ে দলের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে। জেলার আরও তিন বিধায়কের গতিবিধির উপরেও দলের ‘নজর’ রয়েছে।
এ ছাড়া, জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষ, কয়েকজন সদস্য ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের উপরেও চোখ রাখছেন নেতারা। পুরসভাগুলির বিদায়ী কাউন্সিলরদের গতিবিধিও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। এ দিন দলের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, “ওই চার বিধায়কের জায়গায় দল বিকল্প প্রার্থীর খোঁজ শুরু করে দিয়েছে। প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা স্থানীয় স্তরে গিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছে।’’ কালনা মহকুমার ওই বিধায়কের এক ঘনিষ্ঠেরও দাবি, “কয়েকদিনের মধ্যেই কী হতে চলেছে, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অরাজনৈতিক সভা করছেন শুভেন্দু। এই জেলায় সভা না হলেও ‘দাদার অনুগামী’ ফ্লেক্সের খামতি ছিল না। কাটোয়ার গিধগ্রাম, কালনা শহরের ছ’নম্বর ওয়ার্ড, মন্তেশ্বর, মঙ্গলকোটে প্রকাশ্যে ‘দাদার অনুগামী’দের কর্মসূচি করতে দেখা গিয়েছে। মেমারি, জামালপুর, কালনা, পূর্বস্থলী দক্ষিণ-সহ বেশ কয়েকটি বিধানসভা এলাকাতেও ‘দাদার অনুগামী’রা উপস্থিতি জানান দিয়েছেন ফ্লেক্সে। শুক্রবার সন্ধ্যায় অবশ্য মেমারি শহরে ‘দাদার অনুগামী’ লেখা গেঞ্জি পরে কয়েকজনের পথে নামা ছাড়া, আর কোনও কর্মসূচি হয়নি।
‘দাদার অনুগামী’দের তরফে পূর্ব বর্ধমানের দায়িত্বে থাকা সুজন সর্দার বলেন, “অনেক বিধানসভা এলাকা থেকেই যুবকেরা রাস্তায় নামতে চেয়েছিলেন। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রেখে এগোতে চাইছি। তবে খুব দ্রুত বর্ধমান শহরে আমরা মিছিল করব।’’ কাটোয়ার গিধগ্রামের কারুলিয়া গ্রামের সুমন্ত ঘোষের দাবি, “দাদার পথই আমাদের পথ—এই বার্তা আমরা জেলায় ছড়িয়ে দেব।’’
এ নিয়ে অবশ্য বিচলিত নয় তৃণমূলের যুব সংগঠন। ওই সংগঠনের জেলা সভাপতি রাসবিহারী হালদার বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে সবাই দল করেন। কেউ তো আর দল ছেড়ে যাননি। সবটাই বিজেপির চক্রান্ত।’’ বিজেপি জেলা সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর টিপ্পনি, “তৃণমূলের ঘরে একটাই পোস্ট, বাকিরা ল্যাম্প পোস্ট—সেটা আজ প্রমাণিত হল। আশা করব, তৃণমূলের বিরুদ্ধের লড়াইয়ে উনি (শুভেন্দু অধিকারী) আমাদের সঙ্গে যোগ দেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy