দুর্গাপুরে দুর্গাপুজো উদ্বোধনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ক্ষুদিরাম মাঠে। ছবি: বিকাশ মশান
গত ১২ অক্টোবর রানিগঞ্জের নারায়ণকুড়িতে ইসিএলের বৈধ খনিতে ‘অবৈধ’ ভাবে কয়লা তুলতে গিয়ে তিন জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল পুলিশ। এ বার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করলেন, মৃতের সংখ্যা আদতে সাত জন। একই দাবি করে, সব ক’টি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আর্জি জানিয়ে মঙ্গলবার ইসিএলের কুনুস্তোরিয়া এরিয়া দফতরে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পাশাপাশি, অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, তৃণমূল নেতারা বাকি চার জনের দেহের ময়না-তদন্ত না করিয়ে শেষকৃত্য করাতে ‘প্ররোচনা’ দিয়েছিলেন। একই অভিযোগ করেছেন দু’জনের পরিবারের সদস্যও। তৃণমূল অভিযোগে আমল দেয়নি।
মঙ্গলবার দুর্গাপুরে শুভেন্দু বলেন, “রানিগঞ্জের সাত জন, জামুড়িয়ায় এক জন গরিব লোক মারা গেলেন। গরিব লোক বেআইনি কয়লার জন্য মারা গেলেন। কয়েক দিনের মধ্যে রানিগঞ্জে প্রতিটি মৃতের পরিবারের কাছে আসছি। আমরা এটা ছাড়ব না।” পাশাপাশি, আসানসোলের কম্বল-কাণ্ডে জিতেন্দ্র তিওয়ারির নামে অভিযোগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শুভেন্দুর সংযোজন: “যদি জিতেনবাবুর আয়োজিত অনুষ্ঠানে ত্রুটি থেকে থাকে, তা হলে রানিগঞ্জে বেআইনি খনির জন্য যদি কেউ দায়ী হয়ে থাকেন, তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওঁর নামেও খুনের এফআইআর হওয়া উচিত।” পাশাপাশি, অতীতে যে ‘প্যাড-প্রথার’ মাধ্যমে কয়লা চুরির অভিযোগ উঠত, ফের তা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, “ইসিএলের কোথাও কোথাও প্যাড এবং কয়লাও চালু হয়েছে।” তোপ দাগেন পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।
নারায়ণকুড়ির ওই ঘটনায় দীনেশ রুইদাস (৩৮), সমীর বাউড়ি (১৭) ও সুরজিৎ সেন (২১) নামে তিন জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল পুলিশ। ওই পরিবারগুলিকে রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ-সাহায্যও করেছে। এ দিন অগ্নিমিত্রা অভিযোগ করেছেন, “কয়েক জন তৃণমূল নেতার প্ররোচনায় বাকি চার জনের দেহ ময়না-তদন্ত না করিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই নেতাদের গ্রেফতার করতে হবে। ইসিএলকে সাতটি পরিবারকেই পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ও প্রত্যেক পরিবারের এক জনকে ঠিকা সংস্থায় চাকরি দিতে হবে।”
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বাকি চার মৃতেরা হলেন, উজ্জ্বল গড়াই, অনিল কোড়া, রাজেশ বাউড়ি, তপন রুইদাস। এর মধ্যে প্রথম তিন জন এগারা পঞ্চায়েত ও চতুর্থ জন বাঁকুড়ার মেজিয়ার বাসিন্দা। ওই চারটি পরিবারের সদস্যেরাও এ দিন বিজেপির বিক্ষোভে শামিল হন। তাঁদের একাংশও তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। অনিলের মা শকুন্তলা সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে বলেন, “তৃণমূল নেতারা বলেছিলেন, ময়না-তদন্ত না করিয়ে দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হোক।” একই দাবি করেছেন তপনের স্ত্রী তপতীও।
যদিও, অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, “এ সব ভিত্তিহীন কথা। বিজেপির চাপে কয়েক জন এ সব বলছেন। বিজেপি মিথ্যা কথা বলে হালে পানি পেতে চাইছে।”
এ দিকে, অগ্নিমিত্রার নেতৃত্বে এ দিন এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার অনিলকুমার সিংহের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। অনিল বলেন, “দাবিপত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।” পাশাপাশি, পুলিশ জানিয়েছে, খনি থেকে তিন জনেরই দেহ উদ্ধার হয়েছিল। আরও কারও মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের জানা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy