Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Survey of India

‘সমীক্ষা’ শুনেই ঘেরাও, নালিশ নথিপত্র ছেঁড়ার

গ্রামবাসীর একাংশের অভিযোগ, সাধারণ বাসিন্দারা নন, ওই কাজ করেছেন তৃণমূলের লোকজন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গলসি শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২০ ০২:০৭
Share: Save:

এনআরসি-র কাজে গ্রামে এসেছেন সন্দেহ করে কিছু গ্রামবাসী তাঁদের নথিপত্র ছিঁড়ে দিয়েছেন, অভিযোগ করলেন ‘সার্ভে অব ইন্ডিয়ার’ কর্মীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে গলসির বাহিরঘন্যা গ্রামে মানচিত্র তৈরি সংক্রান্ত কাজ করতে গিয়ে ঘেরাও-বিক্ষোভের মুখে পড়েন ওই কর্মীরা। পরে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে রেহাই পান তাঁরা। যদিও নথিপত্র ছেঁড়ার অভিযোগ নিয়ে চাপান-উতোর তৈরি হয়েছে এলাকায়। গ্রামবাসীর একাংশের অভিযোগ, সাধারণ বাসিন্দারা নন, ওই কাজ করেছেন তৃণমূলের লোকজন।

সার্ভে অব ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমকে নিয়ে গঠিত কলকাতা সার্কেলের টেকনিক্যাল অফিসার অভিজিৎ দাস বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারকে জানিয়েই কাজ শুরু হয়েছে। আমরা রাজ্য সরকারেরও বিভিন্ন প্রকল্পের সমীক্ষা করে থাকি। কিন্তু অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য গলসি এলাকায় কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।’’ আর যাতে কোথাও এরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, সে ব্যবস্থার আর্জি জানাতে সার্কেলের অধিকর্তা ‘নবান্ন’-এর কর্তাদের সঙ্গে শীঘ্রই দেখা করবেন বলেও দাবি করেন তিনি। মহকুমাশাসক (বর্ধমান উত্তর) পুষ্পেন্দু সরকার বলেন, ‘‘ওই কর্মীরা কাজ করতে আসবেন, আগে থেকে আমাদের এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। ওঁদের বলা হয়েছে, প্রশাসনের উচ্চ স্তর থেকে জানানো হলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।’’

সার্ভে অফ ইন্ডিয়া সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে এটিএম— কোথায় কী রয়েছে, সেগুলি মানচিত্রে তুলে আনতে সংস্থার কর্মীরা এলাকা ঘুরে সমীক্ষা করে থাকেন। সেই কাজেই বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ চার কর্মী নীহার হাজরা, সুমিলন সরকার, সুশান্ত রায় ও রঞ্জন রায় গলসির ওই গ্রামে যান। এলাকার মানুষের কাছে গ্রামের নাম-সহ কিছু তথ্য জানার ফাঁকে বিভিন্ন জায়গার ছবি তোলা, মাপজোক শুরু করেন। সে খবর ছড়িয়ে পড়তেই জড়ো হতে থাকেন বাসিন্দারা।

ওই কর্মীদের দাবি, প্রায় আড়াইশো মানুষ তাঁদের ঘিরে ধরে নানা প্রশ্ন শুরু করেন। এক কর্মীর কথায়, ‘‘হঠাৎ কয়েকজন ‘এনআরসি, সিএএ, এনপিআর মানছি না’ স্লোগান দিতে শুরু করেন। কী ঘটছে বুঝতে পারছিলাম না। আমরা বারবার তাঁদের বলার চেষ্টা করি, রাজ্য সরকারকে জানিয়ে আমরা কাজ করতে এসেছি। নথিও দেখাই। এরই মধ্যে এক জন তিনটি মানচিত্র কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে দেন। তার পরে আমাদের ব্লক অফিসে নিয়ে গেলে বিডিওকে নথিপত্র দেওয়া হয়।’’ তাঁরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে গলসি থানায় সরকারি সম্পত্তি ছেঁড়া ও বিক্ষোভের ঘটনার কথা লিখিত আকারে জানানো হয়। সংস্থার প্রধান কার্যালয় এবং কলকাতা সার্কেলকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।

এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের। গ্রামবাসীর একাংশের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের ওই কর্মীদের কাছে তাঁরা বিষয়টি জানতে চেয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু ক্ষোভ-বিক্ষোভ করা হয়নি। খবর পেয়ে পঞ্চায়েত সমিতির (গলসি ২) বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ সাব্বিরউদ্দিন আহমেদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মানচিত্র ছেঁড়া ও বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সাব্বিরউদ্দিন শুক্রবার দাবি করেন, ‘‘প্রায় ২৫০ জন ঘিরে রেখেছিলেন ওই কর্মীদের। তাঁদের শান্ত রাখতেই মানচিত্র নেওয়া হয়, ফোনে বিডিওর সঙ্গে কথা বলা হয়। তবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।’’ সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘জেলা প্রশাসন থেকে পঞ্চায়েতকে জানিয়ে সমীক্ষা করতে এলে নিশ্চয় কাজ করতে দেব। তা না হলে সমস্যা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Survey of India NRC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy