রাজেন কিস্কু এবং শ্রীমতী হেমব্রম। নিজস্ব চিত্র।
রাজেন কিস্কু এবং শ্রীমতী হেমব্রম। শাসকদলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তাঁরা। সরকারি প্রকল্পে ঘরের জন্য তাঁদের উপরেই ভরসা করতে হয় গ্রামের গরিব মানুষকে। কিন্তু তাঁদের বাড়ির অবস্থা বসবাসের উপযুক্ত নয়। সম্প্রতি দিন কয়েকের নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ঘরে ঢুকেছিল জল। ফাটলও দেখা দিয়েছে বাড়ির মাটির দেওয়ালে। কষ্ট করে দিন চালাতে হলেও, নিজের পদমর্যাদা বা প্রশাসনিক ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে সরকারি প্রকল্পের ঘর পেতে আগ্রহী নন তাঁরা।
রাজেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার লাউদোহারের প্রতাপপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। অন্য দিকে, শ্রীমতী দুর্গাপুর-ফরিদপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। সম্পর্কে তাঁরা ভাই-বোন। দু’জনেই তৃণমূলের টিকিটে জিতেছেন। কিন্তু নিত্যদিনের অভাব তাঁদের সৎ থাকার স্বভাব থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। যে দলের বহু কর্মীর বিরুদ্ধে কাটমানি বা জালিয়াতির অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা, সেখানে পশ্চিম বর্ধমানের এই ভাই-বোনের ভূমিকা দলের ভাবমূর্তিতে অন্য উচ্চতায় তুলে নিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
ঘর না পাওয়ায় কোনও আক্ষেপ নেই শ্রীমতী এবং রাজেনের। তাঁদের সইয়ের পর গ্রামের গৃহহারা অনেক পরিবার ঘর পেয়েছে। কিন্তু তাঁদের ঘর যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে। ‘কষ্ট হচ্ছে’ স্বীকার করার পরও কেন শাসকের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করছেন না তাঁরা? রাজেন বলেছেন, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনেই আবেদন করেছি। কিন্তু নিময় ভেঙে কিছু পেতে চাই না।’’ শ্রীমতী বলছেন, ‘‘অনেক দিন ধরেই কষ্ট করছি আমরা। বর্ষায় কষ্ট করেই থাকতে হয় ঘরে। যতদিন না কিছু হচ্ছে কষ্ট তো করতেই হবে।’’
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’-সহ দুর্নীতির অভিযোগে সরব বিরোধীরা। সেই আবহে শ্রীমতী-রাজেনের স্বার্থত্যাগ দেখে গর্বিত পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুজিত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘‘শ্রীমতি, রাজেনের মতো মানুষ যাঁরা সরকারি পদে থেকেও নিয়ম ভাঙেন না, তাঁদের জন্য গর্ব হয়। ওঁরা দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। ওঁদের কাজের মাধ্যমে দলের নেত্রীর কথার মর্যাদা বাড়িয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy