বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান। নিজস্ব চিত্র
বাবুল সুপ্রিয়র ‘গড়’ আসানসোলে বিজেপি-তে ভাঙন। পূর্ব ঘোষণা মতোই গেরুয়াশিবির ছেড়ে তৃণমূলেই যোগ দিলেন এক সময় বিজেপি-র আসানসোলের জেলা সম্পাদক পদে থাকা মদনমোহন চৌবে। রবিবার আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনে মলয় ঘটক তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন। মদনমোহনের সঙ্গে বিজেপি ছেড়েছেন তাঁর বহু অনুগামীও।
শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে মদনমোহন ফোনে বলেছিলেন, ‘‘আমরা তৃণমূলে যাচ্ছি।’’ ওই দিনই আসানসোলের জেলা সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। ছেড়ে দেন দলীয় সদস্যপদও। শিল্প শহরের তৃণমূল নেতাদের দাবি, রবিবার তাঁদের দলে যোগদান করেছেন গেরুয়াশিবিরের ৩৯টি শাখা সংগঠনের নেতা। আর কর্মী-সমর্থক ধরলে রবিবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানের সংখ্যাটা সব মিলিয়ে প্রায় ৩ হাজারের বেশি বলেই জোড়াফুল শিবিরের দাবি।
তৃণমূলে যোগ দিয়েই বিজেপি-কে কটাক্ষ করেছেন মদনমোহন, ‘‘২৮ বছর ধরে দল করেছি। কিন্তু এই সময়ে বিজেপি ভ্রষ্টাচারে জড়িয়ে পড়েছে। সব কথা বলা যায় না। দল হোটেল থেকে পরিচালনা করা হয়েছে। কিন্তু ভোট হোটেলে বসে থেকে পরিচালনা করা যায় না। মাটিতে নেমে করতে হয়। বিজেপি-তে থেকে দমবন্ধ হয়ে আসছিল। তাই তৃণমূলে যোগ দিলাম।’’
আসানসোলে বিজেপি-র সংগঠনে এমন ধস নামায় স্বাভাবিক ভাবেই উল্লসিত জোড়াফুল শিবির। কটাক্ষের সুরেই মলয় বলছেন, ‘‘কাল থেকে বিজেপির দলীয় দফতরের তালা খোলার লোকও আর আসানসোল উত্তর কেন্দ্রে থাকল না।’’ তাঁর মতে, ‘‘যাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা বুঝেছেন রাজ্যের উন্নয়ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করবেন। আগামী দিনে তিনি দেশেরও উন্নয়ন করবেন।’’
বিজেপি অবশ্য ভাঙলেও মচকাচ্ছে না। বিজেপির রাজ্য কমিটির নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘৩৯ জনের তালিকা ওরা (তৃণমূল) দিয়েছে। তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ লোককে ফোন করলাম। তাঁরা হয় বাড়িতে, নয় জেলা অফিসে যা কর্মসূচি হচ্ছে সেখানে আছেন।’’ মদনমোহনকে নিয়ে কৃষ্ণেন্দুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি প্রবীণ নেতা। উনি আগেই যাবেন বলেছিলেন। তখন ফোন করেছিলাম। বললেন, ‘দাদা আমি তো পার্টি করে কিছু পাইনি’। সুবিধাবাদী রাজনীতির খেলা শুরু হয়েছে। তাই অনেকে নিজের অবস্থান বদলাচ্ছেন। ভুল বুঝে যদি উনি দলে ফিরে আসেন তা হলে রাস্তা খোলা আছে।’’
গত লোকসভা নির্বাচনে আসানসোল লোকসভার অন্তর্গত সব ক’টি বিধানসভাতেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। ২০২১ সালের নির্বাচনে ২টি মাত্র আসন পেয়েছে বিজেপি। আসানসোল দক্ষিণ ও কুলটি। দলীয় সূত্রে খবর, বিজেপি-তে জিতেন্দ্র তিওয়ারি যোগ দেওয়ার পরই দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। মনে করা হচ্ছে, এর পরই হয়তো বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার বিষয়টি গতি পেয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy