Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Blood bank

‘মিলছে না’ রক্ত, ভোগান্তি

শিবির হলেও সেখানে রক্তদাতার সংখ্যা হাতেগোনা। সে সবেরই প্রভাব পড়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২০ ০৭:৩৫
Share: Save:

‘ডোনার’ না আনলে রক্ত মিলছে না, এমনই অভিযোগ উঠেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। এমনকি, থ্যালাসেমিয়া রোগীদেরও রক্তদাতা আনতে বলা হচ্ছে, দাবি রোগীর পরিজনেদের। ফলে, প্রতিদিনই এসে ঘুরে যাচ্ছেন অনেকে। দীর্ঘ অপেক্ষা নিয়ে ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে পড়ছে লাইন।

হাসপাতালের দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে রক্তদান শিবিরের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। শিবির হলেও সেখানে রক্তদাতার সংখ্যা হাতেগোনা। সে সবেরই প্রভাব পড়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। কার্ডে রক্ত দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। একই গ্রুপের ‘ডোনার’ না হলে রক্ত দেওয়া হচ্ছে না। ফলে, সমস্যায় পড়ছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। বিশেষ করে বাইরে থেকে আসা লোকজন রক্ত জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে ব্লাড ব্যাঙ্কের ‘ডিস-প্লে বোর্ড’ও বিকল। ফলে, কোন গ্রুপের রক্ত, কতখানি মজুত রয়েছে তা সহজে জানা যাচ্ছে না। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, রক্ত মজুত আছে কি না জানতে গেলে জুটছে ‘দুর্ব্যবহার’।

শুক্রবার এক রোগীর আত্মীয় শেখ জাহাঙ্গিরের অভিযোগ, ‘‘হাসপাতালে ভর্তি রোগীর জন্যও ডোনার আনতে বলা হচ্ছে। আমাদের বাড়ি মুর্শিদাবাদ। কোথায় রক্তদাতা পাব এখানে!’’ ভাতারের মুকুন্দপুর থেকে এসেছিলেন রবি মাড্ডি। তাঁর আত্মীয়া থ্যালাসেমিয়া রোগী। মাসে এক বার করে রক্ত দিতে হয় তাকে। রবিবাবু জানান, ‘‘জুলাই মাসে ডোনার দিয়ে রক্ত নিয়েছি। অগস্টে ডোনার পাইনি। পরে হাসপাতাল সুপারের অফিসে যোগাযোগ করে রক্ত পাই।’’

হাসপাতালের দাবি, চিকিৎসাধীন রোগী ছাড়াও, শহরের বিভিন্ন নার্সিংহোমে এই ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত দেওয়া হয়। জোগান কম হওয়ায় নার্সিংহোমগুলিকে বেশি ‘রিক্যুইজিশন’ না পাঠাতে বলা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের আগে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে কার্ডে রক্ত দেওয়া হত। কিন্তু এখন জোগানের অভাবেই একই গ্রুপের ‘ডোনার’ না আনা হলে রক্ত দেওয়া হচ্ছে না। ব্লাড ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছরের অগস্টে জেলায় মাত্র ১৮টি রক্তদান শিবির আয়োজিত হয়েছে। গড়ে ৩০ থেকে ৪০ ইউনিট রক্ত মিলেছে। সেপ্টেম্বরে ১৭টি শিবির হয়েছে। সেখানেও মজুত রক্তের পরিমাণ একই। অথচ, অন্য বছর শিবির থেকে গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ ইউনিট রক্ত মেলে। ব্লাড ব্যাঙ্কের দাবি, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৫৫ ইউনিট রক্ত মজুত রয়েছে। তার মধ্যে ‘এ নেগেটিভ’ দুই ইউনিট, ‘বি নেগেটিভ’ তিন, ‘এবি নেগেটিভ’ একটি এবং ‘ও নেগেটিভ’ রক্ত রয়েছে দুই ইউনিট।

হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শিবির থেকে প্রত্যাশিত রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে রক্তের আকাল দেখা দিয়েছে। জরুরি প্রয়োজনের জন্য কিছু পরিমাণ রক্ত সব সময় মজুত রাখতে হয়। শিবিরের সংখ্যা বাড়লে সমস্যা কেটে যাবে।’’ হাসপাতালের সুপার প্রবীর সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘এক জন রক্ত দিলে, সে রক্ত অন্য জন পান। এটাই নিয়ম। করোনার সময় সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। প্রথমে ডোনার আনতে অনুরোধ করা হচ্ছে। না পারলে তাঁকে রক্ত দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কেউ রক্ত না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Blood bank
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy