জাল দিয়ে ঢাকা হয়েছে পুকুর। —নিজস্ব চিত্র।
কোথাও নাইলনের দড়ি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে জাল। আবার কোথাও সরু ছিদ্রের মাছ ধরার জাল বিছিয়ে রাখা হয়েছে পুকুরের উপরে। মাছের টানে ছোঁ মেরে পুকুরে নামতে গেলেই ঘটছে বিপত্তি। বক, পানকৌড়ি, মাছরাঙার পা আটকে যাচ্ছে জালের ছিদ্রে। মারাও যাচ্ছে পাখিরা। কালনার শহর, গ্রামে অজস্র পুকুরে এমন ঘটনায় প্রতিদিন মৃত্যু হচ্ছে বহু দেশি পাখির। পক্ষীপ্রেমীদের দাবি, পুকুর মালিকদের এমন প্রবণতা ঠেকাতে প্রচারে নামুক বন দফতর।
কেন এমন ব্যবস্থা? পুকুর মালিকদের একাংশের দাবি, ভোর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখির দল খাবারের সন্ধানে পুকুরের পাড়ে পৌঁছে যায়। কোনও পাখি পাড়ে বসে ছোট ছোট মাছ শিকার করে খায়। আবার কিছু কিছু পাখি মাছেদের গতিবিধি দেখে জল থেকে ছোঁ মেরে মাছ ধরে নিয়ে যায়। শীতকালে বহু মাছ জলের উপরে ভেসে থাকে। ফলে এই সময় জলাশয়ের আশেপাশে পাখিদের সংখ্যাও বেড়ে যায়। কালনার এক পুকুর মালিক জনার্দন মালিক বলেন, ‘‘জল শয়ের আশপাশে ফাঁকা মাঠ থাকলে পাখিদের সংখ্যা বেশি হয়। প্রতিদিন প্রচুর মাছ পাখির দল খেয়ে নেয় বলে বাধ্য হয়ে পুকুরের উপরে জাল দিয়ে ঘিরে দিয়েছি।’’ আর এক পুকুর মালিক মহিদুল শেখ জানান, পুকুর মালিককে মোটা অঙ্কের বাৎসরিক টাকা দিয়ে মাছ চাষ করা হয়। দৈনিক প্রায় ১০ কেজি করে মাছ খেয়ে নিচ্ছিল বক এবং মাছরাঙার দল। ঢিল ছুড়ে, পটকা ফাটিয়েও পাখিদের ঠেকানো যাচ্ছিল না। বাধ্য হয়ে জাল দিয়ে পুকুরের মাথা ঘিরে দেওয়া হয়েছে। পাখিদের মৃত্যু নিয়ে তাঁদের দাবি, আর কোনও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এটাই করতে হচ্ছে।
কালনা শহরের বাসিন্দা নব্যেন্দু পালের দাবি, এলাকায় চার রকমের মাছ দেখা যায়। মাছরাঙা ছোট মাছ খায়। তবে যে ভাবে বহু পুকুরের মাথা জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে, তাতে ছোট ছোট পাখিদের পা আটকে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ ছটফট করে পাখিদের মৃত্যু হচ্ছে। পাখিদের খাদ্য সঙ্কট হচ্ছে বলেও দাবি তাঁদের। বন দফতরের কাটোয়া রেঞ্জের এক কর্মী বলেন, ‘‘আমাদের কাছে পক্ষীপ্রেমীদের অভিযোগ এলে পুকুরে জাল খুলে দেওয়ার চেষ্টা করি। বছর খানেক আগে কালনা স্টেশনের পাশে একটি পুকুরে জাল খুলে দেওয়া হচ্ছিল। সমস্যা একটাই পুকুর মালিকরা যখন বলেন তাঁদের ক্ষতি কী ভাবে পূরণ করা হবে, তার সুদুত্তর দেওয়া যায় না।’’
বন দফতরের কাটোয়ার রেঞ্জার শিবপ্রসাদ সিংহ বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে।অনেক এলাকাতেই এমন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ব্যবস্থা নেওয়া ও প্রচারকরা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy