Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

শববাহী ট্রাক্টরের জন্য আলাদা রুট

সোমবার শববাহী ট্রাক্টরের ধাক্কায় মারা যান কাটোয়ার হরিসভাপাড়ার বাসিন্দা এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। শহরের মধ্যে দিয়ে বেপরোয়া ট্রাক্টর চলাচল নিয়ে ক্ষোভ জানান বাসিন্দারা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার বৈঠক ডাকেন মহকুমাশাসক সৌমেন পাল।

মালপত্র নিয়ে কাটোয়ার রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ট্রাক্টর। নিজস্ব চিত্র

মালপত্র নিয়ে কাটোয়ার রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ট্রাক্টর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৫৭
Share: Save:

শহরের মধ্যে দিয়ে বেপরোয়া ভাবে পণ্যবাহী, শববাহী ট্রাক্টর চলা নিয়ে অভিযোগ উঠছিল। পরিস্থিতি সামলাতে শববাহী গাড়ির জন্য পৃথক পথের পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন। সঙ্গে ট্রাক্টরের ট্রলির রেজিস্ট্রেশনও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সোমবার শববাহী ট্রাক্টরের ধাক্কায় মারা যান কাটোয়ার হরিসভাপাড়ার বাসিন্দা এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। শহরের মধ্যে দিয়ে বেপরোয়া ট্রাক্টর চলাচল নিয়ে ক্ষোভ জানান বাসিন্দারা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার বৈঠক ডাকেন মহকুমাশাসক সৌমেন পাল। এ দিন ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস, মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক বীরেন্দ্রনাথ দাস, ওসি ট্র্যাফিক সংগ্রাম মোহিতে প্রমুখ। শহরবাসীর অভিযোগ ছিল, ‘নো এন্ট্রি’র সময়েও শহরের বেশ কিছু রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকে পণ্যবাহী ট্রাক্টরগুলি। কাটোয়া-বর্ধমান রোড, এসটিকেকে রোড, বোলপুর রোড থেকে ইট, পাথর, বালি বোঝাই করে শহরের মধ্যে দিয়ে দিনরাত চলাচল করে সেগুলি। ফলে, ব্যস্ত রাস্তায় অনেক সময় দাঁড়িয়ে থাকা বা জোরে চলা ট্রাক্টরের সঙ্গে পথচারী বা মোটরবাইক আরোহীদের ধাক্কা লাগে। ঘটে যায় দুর্ঘটনা।

প্রশাসন সূত্রের দাবি, পুরসভার আবর্জনা বহনকারী ট্রাক্টর, শববাহী ট্রাক্টরের মতো যানবাহনগুলির শহরের মধ্যে চলা একেবারেই বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে গতিতে রাশ টানা যেতে পারে। শববাহী গাড়ি চালকেরা বেশির ভাগ সময় মত্ত থাকেন বলে অভিযোগ। ফলে, সেগুলি শহরে ঢোকা ও বেরনোর জন্য পৃথক ‘রুট’ করার পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন।

বৈঠকে মহকুমা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককে জানানো হয় যে, চালকল থেকে বেরোনো গাড়ি ও বালি-ইট বোঝাই গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। পণ্যবাহী ট্রাক্টরের ট্রলিরও রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। পুরসভা সূত্রে জানা যায়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ট্রাক্টর কেনার পরে কাঠের ট্রলি তৈরি করে জুড়ে দেওয়া হয়। রেজিস্ট্রেশন তো দূর, অনেক সময় চালকের দেখার জন্য যথাযথ আয়নাও লাগানো হয় না। ফলে, দুর্ঘটনা ঘটে। ওই সব ক্ষেত্রে আহত বা মৃতের পরিবার বিমাও পান না বলে পুরসভার দাবি। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘শীঘ্রই ভাটা ও চালকল মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করবে কাটোয়া, কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোট থানা। বৈঠকের এক মাসের মধ্যে সমস্ত ট্রাক্টর মালিকদের ট্রলির রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে।’’ মহকুমা প্রশাসনের দাবি, সেই সঙ্গে মোটরবাইক আরোহীদের উপযুক্ত নথি রয়েছে কি না, আরোহী হেলমেট পড়েছেন কি না, মোটরবাইক চালাতে চালাতে মোবাইলে কথা বলছেন কি না, তা নিয়েও সচেতন করা হবে। টোটোর ক্ষেত্রেও ‘ওয়ান ওয়ে’ করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। স্কুল বাসগুলোর স্বাস্থ্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরীক্ষা করার কথাও জানিয়েছেন পুরপ্রধান।

এ দিনই কাটোয়ার এসটিকেকে রোড, বোলপুর রোডের মিলপাড়া, চরখি সেতুর কাছ ও পাঁচঘড়া মোড় থেকে ১৬টি ট্রাক্টর ধরেছে কাটোয়া থানার পুলিশ। পণ্যবাহী এই ট্রাক্টরগুলির ট্রলির রেজিস্ট্রেশন নেই বলে পুলিশের দাবি।

অন্য বিষয়গুলি:

Katwa City Traffic Rash Driving Hearse Van
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE