উপরে, আসানসোলে বিজেপির জিটি রোড অবরোধ। নীচে, পুলিশের সঙ্গে বচসা। ছবি: পাপন চৌধুরী।
সন্দেশখালির ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার সকালে আসানসোলে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল বিজেপির যুব সংগঠন ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা। কর্মসূচিতে বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে প্রথমে বচসা ও পরে ধস্তাধস্তি হয় আন্দোলনকারীদের। হয় রাস্তা অবরোধ, থানা ঘেরাও। এর জেরে বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষজন। বিজেপির এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
গত কয়েক দিন ধরে তৃণমূলের কয়েক জন নেতার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের জেরে অশান্ত উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি। মহিলাদের উপরে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় আন্দোলনের তীব্রতা আরও বাড়ে শনিবার। এই আবহে শনিবার সন্দেশখালিতে যাওয়ার পথে বিজেপির প্রতিনিধিদের পুলিশ বাধা দেয় বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদে এ দিন আসানসোলে পথে নামেন যুব মোর্চার কর্মী-সমর্থকেরা। আসানসোলের উষাগ্রাম এলাকায় সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় কর্মসূচি। নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কর্মসূচির শুরুতেই পুলিশ বাধা দেয় বিক্ষোভকারীদের। তা উপেক্ষা করে কর্মসূচি চালিয়ে যেতে থাকেন তাঁরা। তখন পুলিশের সঙ্গে বচসা বেধে যায়। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। তার পরেই রাস্তার মাঝে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। জিটি রোড অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। থমকে যায় যানবাহন। ব্যস্ত সময়ে পথের দু’পাশে গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। বিপাকে পড়েন যাত্রী ও পথচারীরা। বাপ্পাদিত্যের অভিযোগ, “আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করতে চেয়েছিলাম। পুলিশ বাধা দিচ্ছে। সেই কারণে আমরা অবরোধ করছি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুলিশ বার বার অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করলেও তাতে কর্ণপাত করেননি বিক্ষোভকারীরা। পৌনে ১টা নাগাদ পুলিশের বিশাল বাহিনী গিয়ে অবরোধকারীদের রাস্তা থেকে হটিয়ে দেয়। তার পরে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বিজেপির মহিলা মোর্চার উদ্যোগেও আসানসোল বাজারের দলীয় কার্যালয় থেকে একটি মিছিল শুরু হয়। সেটি শেষ হয় রাহা লেনে।
সন্ধ্যায় দুর্গাপুরে মিছিল করে বিজেপির মহিলা মোর্চার কর্মীরা। বিজেপি নেত্রী কবি মণ্ডলের অভিযোগ, “রাজ্য সরকার এবং পুলিশ সন্দেশখালির মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ।” মিছিলে ছিলেন বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপির এই কর্মসূচিকে ‘আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি’ বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, “সন্দেশখালিতে যা ঘটেছে তার প্রেক্ষিতে পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ করেছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারও করেছে। এর পরেও শান্তিপূর্ণ এলাকায় মিছিল, মিটিং করে বিজেপি গোটা রাজ্যকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে।”
সন্দেশখালিতে অশান্তিতে ইন্ধন জোগানের অভিযোগে ধৃত সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের মুক্তির দাবিতে এ দিন রানিগঞ্জে মিছিল করেন বামপন্থী কর্মীরা। কদমডাঙায় মিছিল শুরু হয়ে শেষ হয় তিন মাথা মোড়ে। মিছিলে ছিলেন আসানসোল পুরসভার সিপিএম পুরপ্রতিনিধি নারায়ণ বাউড়ি, সিপিএম নেতা দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। সিপিএমের খেতমজুর সংগঠনের রানিগঞ্জ থানা কমিটির সম্পাদক পূর্ণদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “সন্দেশখালিতে গণ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মহিলারা। অভিযুক্তদের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হয়েছিল। এই ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে নিরাপদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অথচ, ঘটনার সময়ে তিনি এলাকাতেই ছিলেন না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy